নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগকে নিয়ে জাবিতে প্রকৌশল অনুষদ চালু করতে চাই : জাবি উপাচার্য

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ২৫ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী ‘প্ল্যানিং ফেস্টিভাল ২২'-এর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম।

শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯:৩০ টায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারি কক্ষে কেক কাটার মাধ্যমে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সপ্তাহব্যাপী 'প্ল্যানিং ফেস্টিভাল ২২' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

এসময় অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম তার বক্তব্যে জানান, সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনের উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা একটি প্রকৌশল ঘরানার বিষয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি সমাজবিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে গাণিতিক ও পদার্থবিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত হলে ভালো হত।

তিনি আরো বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি প্রকৌশল অনুষদ চালু করার করতে চাই। যেখানে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই বিভাগের গবেষণার মান অনেক ভাল। উন্নত গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ।

পরবর্তীতে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ থেকে র‍্যালি শুরু হয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌরঙ্গী থেকে টারজান পয়েন্ট হয়ে আবার সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে এসে শেষ হয়। এসময় ছবি চত্বরে ফটো এক্সিবিশনের উদ্বোধন করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আকবর হোসেন।

র‍্যালী শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারিতে ‘নগর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সপ্তাহব্যাপী এ প্ল্যানিং ফেস্টিভ্যালে সহায়তা দিচ্ছে পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।

আজকের সেমিনার সম্পর্কে বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, আমরা দেখি যে নগর পরিকল্পনা কিন্তু বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সিটি কর্পোরেশন এর নজরদারির গাফিলতি প্রতিয়মান। যেখানে তারা ঠিক মতো মনিটরিং করতে পারছে না। আরেকটি সমস্যা যেটা হচ্ছে অর্থায়ন সংকট। প্রায়োরিটি লিস্টের ভিত্তিতে আমরা অ্যাকশন প্ল্যান তৈরী করতে পারি এবং সেই ভিত্তিতে প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে পারি এক্ষেত্রে নেইভারহুডে যে সুযোগ সুবিধা থাকা প্রয়োজন সে দিকে লক্ষ রেখে গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ। আর গ্রোথ কন্ট্রোলের দিকে নজর না দিলে আমাদের কোনো প্ল্যান-ই কাজে দিবে না।

একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফরহাদুর রেজা বলেন, আজকের সেমিনারে উপস্থাপিত দুটি প্রেজেন্টশন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আজকের সেমিনারে আমরা জানতে পেরেছি। প্ল্যানিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কিভাবে বড় বড় প্ল্যানগুলো বাস্তবায়িত হয়।প্ল্যান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা কি কি চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হই আর এই চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে নেগোশিয়েট করতে হয়। আমি মনে করি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এবং প্ল্যানিং কমিউনিটিতে যারা আছেন তারা আজকের সেমিনার থেকে উপকৃত হবেন বলে মনে করি।

আগামী ১৭ হতে ২৩ ডিসেম্বর অবধি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনে- প্রদর্শনী বিতর্ক, কেস কম্পিটিশন, নগর পরিকল্পনা বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, ফটোগ্রাফি এক্সিবিশান, ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, কুইজ প্রতিযোগিতা, ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, ক্রিকেট ও দাবা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও নৈশভোজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানা গিয়েছে।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মনজরুল হক, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আকবর হোসেন, DAP(Detailed Area Plan) এর প্রকল্প পরিচালক পরিকল্পনাবিদ মো: আশরাফুল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাশেম, বিআইপি'র সভাপতি মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, বিআইপি'র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মোহাম্মদ মেহেদী আহসান।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. আনিসা নূরী কাঁকন, অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান, অধ্যাপক ড. মো. শফিক-উর রহমান, অধ্যাপক ড. হালিমা বেগম, অধ্যাপক ড. শাম্মী আক্তার সেতু, অধ্যাপক ড. কাশফিয়া নাহরিন, বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফরহাদুর রেজা, সহযোগী অধ্যাপক এস এম নওশাদ হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক সানিয়া সিফাত মিতি, সহযোগী অধ্যাপক ড. আফসানা হক, সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং বিভাগের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।