ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল: কাদেরের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন নানক


প্রকাশ: 19/12/2022


Thumbnail

আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবার কাউন্সিল হবে মাত্র একদিনের। এই একদিনের কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান আকর্ষণ হলো সাধারণ সম্পাদক। তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন সাধারণ সম্পাদক কে হবে সেটি নির্ধারণ করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদকের বাইরেও এবার আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে অনেকগুলো রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলার কৌশল এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে উপস্থাপন করবেন। আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের আগে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এক ধরনের উত্তাপ-উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির গোলাপবাগ সমাবেশ থেকে সাত এমপি পদত্যাগ করেছে। এখন বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের রুপরেখা দিয়েছে। আর এরকম পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি পথ রেখা তৈরি করবে আওয়ামী লীগ তার কাউন্সিলের মাধ্যমে। এটি মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ থাকে দলের নতুন নেতৃত্ব। এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে কারা নেতৃত্বে আসবেন, কিভাবে নতুন নেতৃত্ব সাজানো হবে সেটি এবার কাউন্সিলের সবচেয়ে বড় বিষয়। 

কিছুদিন আগে মনে করা হচ্ছিল যে, ওয়াদুল কাদের নিশ্চিত ভাবেই আওয়ামী লীগের তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তিনি সবুজ সংকেতও পেয়েছেন। কিন্তু কাউন্সিলের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সে ধারণার ভিন্ন মত শোনা যাচ্ছে। অনেকে মনে করছেন বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতার আলোকে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আনতে পারেন। কারণ সামনের দিনগুলো থাকবে ঝঞ্ঝার-বিক্ষুদ্ধ। পাশাপাশি নানা রকম দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে আওয়ামী লীগকে। আর এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য আওয়ামী লীগের সামনে একটি পথ রয়েছে। তা হলো শক্তিশালী সংগঠন করা। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলেছেন, সংগঠন যদি শক্তিশালী থাকে তাহলে কোনো ষড়যন্ত্রই আওয়ামী লীগকে রুখতে পারবেনা। 

সর্বশেষ জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সাথে বক্তৃতায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে উৎখাত করা এতো সহজ নয়।  স্পষ্টতই আওয়ামী লীগ সভাপতি জানেন যে, আওয়ামী লীগকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর এই উৎখাতের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার ক্ষেত্রে একজন শক্তিশালী সংগঠক সরকার। যিনি সংগঠনকে তৃণমূল থেকে সংগঠিত করবেন, সকলের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করবেন। আর এখানেই ওবায়দুল কাদের এর বিকল্প ভাবা হচ্ছে। 

ওবায়দুল কাদের দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তিনি ভালো করেছেন না খারাপ করেছেন সেটা দলের নেতৃত্ব এবং সাধণ কর্মীরাই ভালো বলতে পারেন। তবে শারীরিকভাবে অসুস্থ আওয়ামী লীগের এই ত্যাগী নেতাকে তৃতীয়বার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখা নাও যেতে পারে বর্তমান রাজনীতির বাস্তবতা। এক্ষেত্রে জাহাঙ্গীর কবির নানকের নাম কাউন্সিল এর আগে কর্মীদের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। কর্মীরা মনে করছেন যে, সামনের আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবেলা করা, সংগঠনকে গুছিয়ে তোলার জন্য জাহাঙ্গীর কবির নানক হতে পারেন ওবায়দুল কাদেরের সবচেয়ে ভালো বিকল্প। এর প্রধান কারণ মনে করা হচ্ছে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলা করা। ছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি দল এবং সরকার আলাদা করার একটি প্রক্রিয়া গত তিনটি কাউন্সিল থেকে শুরু করেছেন। সেই ধারায় আওয়ামী লীগ হয়তো একজন সার্বক্ষণিক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাউকে বেছে নিতে পারে। আর সেরকম যদি চিন্তা থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রথম পছন্দ হবেন। কাউন্সিলের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই ওবায়দুল কাদেরের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছেন জাহাঙ্গীর কবির নানক। ওবায়দুল কাদের কদিন আগে যেমন ছিলেন নিশ্চিত এখন তিনি আর নিশ্চিত নয়। তবে শেষ পর্যন্ত কাউন্সিলের চমক হবে নাকি রুটিন একটি কাউন্সিল এর মধ্য দিয়ে পুরনো নেতৃত্বই অদল বদল হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭