ইনসাইড পলিটিক্স

রাজনীতিতে বড় শঙ্কা জাগিয়ে বিদায় নিলো ২০২২


প্রকাশ: 26/12/2022


Thumbnail

শেষ হতে চলেছে আরও একটা বছর। চলতি বছরের একের পর এক রাজনৈতিক ঘটনা ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ কেটেছে। কারণ ব্যক্তি থেকে পরিবার, সমাজ থেকে রাষ্ট্র, দেশ থেকে বিশ্ব, সবকিছুর চালিকায় রাজনীতি। বিভিন্ন ঘটনাবলি দিয়ে সারা বছর জুড়েই ছিল রাজনীতির খোরাড়। এ সময় হারিয়েছি প্রথিতযশা রাজনীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজনকে। এরই মধ্যে শুরু হতে যাচ্ছে আরেক নতুন বছর। সংক্ষিপ্তভাবে দেখে নেওয়া যাক ২০২২ সালে বাংলাদেশের আলোচিত রাজনৈতিক চালচিত্র।

আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের সন্মেলন

গত ২৪ ডিসেম্বর সদ্য সমাপ্ত হলো আওয়ামী লীগের ২২ তম জাতীয় কাউন্সিল। এই সন্মেলনে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের পুর্নরায় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর আগে গত ২৮ অক্টোবর গণভবনে অনুষ্ঠিত দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় ২২ তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। আর এর আগে ভ্রাতৃপ্রতীম সহযোগী সংগঠনগুলোর সন্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।  ২৫ নভেম্বর স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সন্মেলন, ২৬ নভেম্বর মহিলা আওয়ামী লীগের সন্মেলন, ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ছাত্রলীগের যৌথ বার্ষিক সম্মেলন, ৩ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সন্মেলন, ৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সন্মেলন, ১৫ ডিসেম্বর যুব মহিলা লীগের সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বছরও শুরু হয়েছিল তৃণমূলের সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে এবং বছরও শেষ হলো সাংগঠনিক কার্যক্রম দিয়ে। সাংগঠনিক কার্যক্রম ব্যস্ত থাকলেও শেষ সময়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে দলটির নেতাকর্মীদের। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানা-পর্যায়ের সম্মেলন করেছে দলটি। সমান তালে চলছে প্রচার-প্রচারণাও। এই প্রচার-প্রচারণায় যুক্ত হয়েছেন স্বয়ং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে গত ২৪ নভেম্বর যশোর, ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম ও ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারে মহাসমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। ওই তিন মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি মহাসমাবেশে কয়েক লাখ মানুষ অংশ নেন।  

গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সপরিবারে কাদের সিদ্দিকীর সাক্ষাৎ

গত ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সপরিবারে সাক্ষাৎ করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এসময় কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিনী বেগম নাসরিন ও তাদের দুই মেয়েও উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির রাষ্ট্র মেরামত রূপরেখার ২৭ দফা

গত ১৯ ডিসেম্বর রাষ্ট্র মেরামত রূপরেখার ২৭ দফা ঘোষণা করেছে বিএনপি।  রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য আনা এবং দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সংবিধান সংস্কারে কমিশন গঠন, দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ বেশকিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। তাদের এই রূপরেখার কিছু প্রস্তাব ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন সুশীল সমাজ। তবে, এর বাস্তবায়ন নিয়ে ‘সন্দিহান’ তারা। বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গীরা ২৭ দফা রূপরেখা অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গীরা বলছেন, এটি বিএনপির স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতিকে পাকাপোক্ত করার একটি হাতিয়ার মাত্র।

১০ ডিসেম্বর ঘিরে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ

বছরের সবচেয়ে বেশি আলোচিত এবং উত্তাপ্ত ছড়িয়ে ১০ ডিসেম্বর ঘিরে। কি হবে ১০? এই প্রশ্ন ভারি হয়ে উঠেছিল রাজনীতির বাতাস। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। এদিনে সরকার পতনের ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। দলটির নেতা আমানউল্লাহ আমান বলেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর সরকারের কথায় দেশ চলবে না। ১০ ডিসেম্বরের পর বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের কথায় দেশ চলবে। ১০ ডিসেম্বরের পর তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবে। ১০ ডিসেম্বর অতিক্রম হয়েছে। কিন্তু এসবের কিছুই ঘটেনি। তবে ১০ ডিসেম্বর ঘিরে দেশব্যাপী এক আশঙ্ক তৈরি হয়েছিল বৈকি। বিশেষ করে ১০ 

ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার ব্যাপারে দরটির অনড় অবস্থান এবং অন্যদিকে প্রশাসনের নারাজ অবস্থান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল। বিশেষ করে ৭ ডিসেম্বর দলটির নেতাকর্মীদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান গ্রহণ এবং তাদের সরে যেতে বললে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা রাজনীতিতে এক অনিশ্চিত বার্তা ছড়িয়েছিল। ৭ ডিসেম্বরে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টা অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগও। তবে সব কিছুকে বেশ দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে যত অনিশ্চিত আর শঙ্কা দেখা দিয়েছিল তার কিছুই ঘটেনি। বিএনপির শোচনীয় পরাজয় হয়েছে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ। 

উল্লেখ্য, ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস গ্রেফতার হন। এর আগে ৭ ডিসেম্বর বিএনপি একাধিক নেতা নয়াপল্টন থেকে গ্রেফতার হন।

বিএনপির গণসমাবেশ, আওয়ামী লীগের তৃণমূলে সন্মেলন

গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে বিভাগীয় গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিএনপি দেশব্যাপী গণসমাবেশের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর ধীরে  ধীরে ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, ফরিদপুর, কুমিল্লা, রাজশাহী এবং সর্বশেষ ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশ সহ 

মোট ১০টি সমাবেশ করে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আগে থেকেই তৃণমূলে সন্মেলন করে আসলেও বিএনপির গণসমাবেশের সময় জেলায় জেলায় সন্মেলন কার্যক্রম বৃদ্ধি করে। এর মধ্য দিয়ে তৃণমূলের কর্মীদের উজ্জীবিত করার এক কৌশল গ্রহণ করে।

২০ দলীয় জোট ভেঙ্গে ১২ দল জোট গঠন

গত ২২ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বিলুপ্ত হওয়ার পর ১২টি দল মিলে নতুন ‘১২ দলীয় জোট’ গঠন করা হয়।  এই জোটের মাত্র একটি দল নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। 

১২ দলীয় এই জোটে রয়েছে- মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (জাফর), সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (নিবন্ধিত), মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের বাংলাদেশ লেবার পার্টির একাংশ (অনিবন্ধিত), সৈয়দ এহসানুল হুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয় দল, কে এম আবু তাহেরের এনডিপি, শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ এলডিপি, জুলফিকার বুলবুল চৌধুরীর বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (অনিবন্ধিত), মুফতি মহিউদ্দিন ইকরামের জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, মাওলানা আবদুর রকীবের ইসলামী ঐক্যজোট (অনিবন্ধিত), তাসমিয়া প্রধানের জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা-নিবন্ধিন বাতিল), নুরুল ইসলামের বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, আবুল কাসেমের বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি (অনিবন্ধিত)। 

বিএনপির সাত এমপির পদত্যাগ

গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে এক যোগে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বিএনপির সাতজন সংসদ সদস্য। এ ঘটনাকে আওয়ামী লীগ বিএনপি হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করে। 

জাতীয় পার্টির গৃহযুদ্ধ

চলতি বছরের রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহের অন্যতম একটি হলো জাতীয় পার্টি গৃহযুদ্ধ এবং দল ভাঙনের গুঞ্জন। ২৬ নভেম্বর দলের জাতীয় কাউন্সিলের ডাক দেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্টপোষক এবং সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। এর ফলে দলের প্রেসিডিয়ামে সিদ্ধন্ত হয় রওশন এরশাদকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া। এই সিদ্ধান্তের কথা বাইরে ফাঁস করে দেওয়া অভিযোগ উঠেছে সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার বিরুদ্ধে। এরপর দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দল থেকে তাকে বহিস্কার করা হয়। জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল তুঙ্গে পৌঁছে যায়। গুঞ্জন উঠে দল ভাঙনের। তবে নানা নাটকীয় মধ্য দিয়ে দল শেষ পর্যন্ত ভাঙ্গেনি। বরং এখন একটি সমঝোতার কথা রাজনৈতিক মহলে বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে।

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর চির বিদায় 

গত ১১ সেপ্টেম্বর বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেন। 

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ ও মা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। তিন ছেলে ও এক মেয়ের জননী সাজেদা চৌধুরীর স্বামী গোলাম আকবর চৌধুরী ২০১৫ সালে মারা গিয়েছিলেন।

১৯৫৬ সাল থেকে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৯-১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডসের ন্যাশনাল কমিশনার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হন।

২২ টি সমমনা দলের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্য গড়ার লক্ষ্যে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অক্টোবরে দ্বিতীয় দফায় বিএনপর সমমনা ২২টি রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ শুরু করে বিএনপি।

নতুন রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’র আত্মপ্রকাশ

গত ৮ আগস্ট সাতদলীয় নতুন রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আত্মপ্রকাশ করে। ‘ফ্যাসিবাদী দুঃসময়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণসংগ্রাম জোরদার করুন’—এ  স্লোগান নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে এ জোট। 

নতুন এ রাজনৈতিক জোটে আছে নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জেএসডি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন এবং গণঅধিকার পরিষদ।

ইসির সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ 

জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ১৭ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে এ সংলাপ বিএনপি এবং বাম গণতান্ত্রিক জোট অংশ নেয়নি।

উত্তপ্ত ইডেন কলেজ এবং ঢাবি ক্যাম্পাস

থেমে থেমে উত্তপ্ত ছিল ছাত্র রাজনীতি। বিশেষ করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে ওই দিন রাতেই ছাত্রলীগের একাংশের বিক্ষোভে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রীভা ও রাজিয়ার বহিষ্কারের দাবি জানান। পরে রিভা ও রাজিয়াকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ছাত্রলীগের একাংশ। এমনকি দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। পরে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ১৬ জন নেতাকর্মীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এর আগে মে মাসের শেষ দিকে ছাত্রদল-ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ছাত্রদলের মিছিলে ছাত্রলীগের হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসজুড়ে অস্ত্রের মহড়া দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে উভয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর, কার্জন হল ও হাইকোর্ট এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে অন্তত: ২৫-২৫ জন আহত হয়।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপিকে আমন্ত্রণ

২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে আমন্ত্রণ জানানো হয় বিএনপির সাত নেতাকে। আমন্ত্রণ পাওয়া বিএনপির সাত নেতা হলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। কিন্তু আমন্ত্রণ পত্র পেয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি অংশ নেবে কিনা এই নিয়েও রাজনীতিতে আলোচনা ছিল তুঙ্গে।

শ্রীলঙ্কা নিয়ে উত্তপ্ত রাজনীতি

বছরের শুরুর দিকে দেউলিয়া হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। অপ্রয়োজনীয় কিছু মেগা প্রকল্পের ঋণের ফাঁদে পড়ে দেশটি। বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সেটি আমাদের দেশের সাথে তুলনা করে। গুজব তুলে শ্রীলঙ্কার মতো দেউলিয়া হতে যাচ্ছে বাংলাদেশও। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ অন্যান্য সরকার বিরোধী দলগুলোর রাজনীতিতে খোরাড় যুগিয়েছিল কয়েক মাস ধরে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে এমন কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বা অন্য কোনো কিছুতে।

নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ

বছরের শুরুতে অন্যতম আর্কষণ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন। দেশের প্রথমবারের মতো আইন অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়। এর আগে রাষ্ট্রপতি একটি সার্চ কমিটি গঠন করেন। যে সার্চ কমিটি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং কমিশন গঠন করতে নাম প্রস্তাব আহ্বান করেন। এর পর সার্চ কমিটি কতগুলো নাম মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবিত নাম থেকে রাষ্ট্রপতি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭