ইনসাইড টক

‘মানুষ বলে, উন্নয়ন প্রথম নয়, গণতন্ত্র প্রথম’


প্রকাশ: 31/12/2022


Thumbnail

বিএনপির নিবার্হী সদস্য আ ন ম এহসানুল হক মিলন বলেছেন, ‘আমাদের গত কালকে যে মিছিলটি হলো, সেক্ষেত্রে আমাদের এক নম্বর প্রাপ্তিটি হচ্ছে, আমাদের এ মিছিলটি হওয়ার কথা ছিল ২৪ তারিখে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কারণে, আমরা সেটিকে সহজ করার জন্য এবং মানুষের মধ্যে শান্তি, সহমর্মীতা -এগুলো বিরাজ করার জন্য এটিকে আমরা পিছিয়ে নিয়ে আসি ৩০ তারিখে। এই ৩০ তারিখে নিয়ে আসায় আমাদের প্রাপ্তিটা হলো, আওয়ামী লীগ কমপক্ষে বুঝতে পেরেছে, বিএনপির এই সৌজন্যের জন্য তারা(আওয়ামী লীগ) আমাদেরকে এই মিছিলে কোনো হামলা করেনি। যদিও তাদের বুলেট বাহিনী স্পটে স্পটে দাঁড়ানো ছিল। সেই হামলাটা, সেই ক্রোধটা তারা জামায়াতের ওপর করেছে। তাহলে প্রথম প্রাপ্তি হলো, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ২৪ তারিখের গণমিছিল ৩০ তারিখে আনাতে, তারা আমাদের দিকে সৌহার্দের হাত সম্প্রসারিত করেছে। এটা একটা এই বছরের শেষ দিকের প্রাপ্তি। যদিও এই বছরে সর্বশেষ মিছিল করা পর্যন্ত ১০টি সমাবেশ করতে গিয়ে আমরা সর্বমোট ৯ জনকে হারিয়েছি।’

বিএনপির আন্দোলন, ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি -১০ দফা, ২৭ দফা, ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিল, গত ৭ ডিসেম্বরের আন্দোলন থেকে বিএনপির প্রাপ্তি নিয়ে কথা হয়েছে বিএনপি দলীয় সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমান নিবার্হী সদস্য আ ন ম এহসানুল হক মিলনের সঙ্গে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপকালে জানিয়েছেন বিদায়ী বছরে দলের বিভিন্ন প্রাপ্তির কথা। পাঠকদের জন্য  এহসানুল হক মিলন এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক আল মাসুদ নয়ন।

এহসানুল হক মিলন বলেন, ‘দ্বিতীয় প্রাপ্তিটি হলো, ৩০ তারিখ একটি ঐতিহাসিক দিন। এটি হলো, গণতন্ত্র হত্যা দিবস। এই দিনে আমরা ২০১৮তে, এই দিনে আমরা ২০১৪তে, গণতন্ত্রকে যে সমূলে ধ্বংস করা এবং কফিনে যে পেরেক মেরেছিল, সেই দিবসটিতে আমরা বিশাল সমাবেশ করেছি।’

তিনি বলেন,  ‘তৃতীয় প্রাপ্তিটি হলো, ৩০ তারিখে গণমিছিলটি আমরা করেছি, আমাদের দল এবং আমাদের সাথে যারা যুগপৎ আন্দোলন করবে, তারা আমাদের সাথে ছিল। এ ছাড়াও, যারা যুগপৎ আন্দোলন করছে না, তারাও ৩০ ডিসেম্বরকে স্মরণ করেছে ঐতিহাসিক গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে। অতএব, বিএনপি এই মিছিলের সাথে অন্যান্য মিছিলগুলো সকলে একত্রে মিলে এই জনগণের জনসমাবেশের একটি সুনামি হয়েছিল ঢাকা শহরে। সেটাতে বোঝা যাচ্ছে যে, বর্তমান সরকারকে জনগণ আর চায় না। 

মিলন বলেন, ‘যদিও এই সরকার আরেকটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছিল, পদ্মাসেতুর পরে এই মেট্রোরেলের যুগে পদার্পণ করেছিল ২৮ তারিখে। কিন্তু, ২৮ তারিখে এতো বড় একটি কাজ করার পরেও ৩০ তারিখে মানুষ এইভাবে রাজপথে নেমেছে -এটি হচ্ছে একটি ইঙ্গিতবহুল অশনিসঙ্কেত আওয়ামী লীগের জন্য। অর্থাৎ, মানুষ উন্নয়ন বনাম গণতন্ত্র, যে বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়, সেটি মানুষ চায়, টেকসই উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র দরকার। এখন মানুষ বলে, উন্নয়ন প্রথম নয়, গণতন্ত্র প্রথম। এই জিনিসটি ২৮ তারিখের দিনেই প্রমাণিত হয়।  

এহসানুল হক মিলন বলেন, ‘চতুর্থ প্রাপ্তিটি হলো, এই সরকারের, আমি মনে করি শেষ সাল। তার কারণটি হলো, জানিনা কেন? কি অদৃশ্য কারণে সরকার খুব তড়িঘড়ি করছে, তার উন্নয়নের ঢামাঢোল বাজাতে। যেমন, ২০২৩ সালেও কিন্তু এই মেট্রোরেল ওপেন করতে পারতো। মতিঝিল পর্যন্ত, যেটি হতো একটি স্বাভাবিক, সুস্থ, কর্মতৎপরতার। কাজ শেষেই উদ্বোধন করা। একটি কাজ শুরু হলে উদ্বোধন ফলক উন্মোচন করে, কিন্তু সমাপ্তিফলক উন্মোচন করা, মাঝামাঝি এসে উন্মোচন করা-এটা আমরা দেখিনি। তারই প্রেক্ষিতে বিশ্বপরিক্রমায় যে ঘটনাগুলো, বিশেষ করে এই ডিসেম্বরে ঘটেছে, তারই প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ মনে হয় একটুখানি ভয় পেয়ে গিয়েছে। এজন্য যে, যদি কি না  মেট্রোলে ওপেন করা যায় তড়িঘড়ি করে, যতটুকু হয়েছে ততোটুকই ওপেন করি।’ 

বিএনপি নেতা মিলন বলেন, ‘আমরা গত মাসের শেষের দিকে দেখেছি, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত যেভাবে আমেরিকার পিটার হাসকে উল্লেখ করে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কেন আমেরিকা কথা বলছে, এ কথাটি যখন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বললো, তার মানে রাশিয়া মনে হয় ভুলেই গিয়েছে, তারাও আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলছে। এই যে রাশিয়া আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বললো, এই বিষয়টি কেমন? এ মাসের মধ্যে তাৎক্ষণিকভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললো, রাশিয়া এবং আমেরিকা তারা উভয়েই আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা না বলুক -এটাই আমরা চাই। কিন্তু তিনি স্পষ্ট ভারতের কথা উল্লেখ করলেন না। কারণ তিনি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে গিয়ে তাদেরকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য তদবীর করে এসেছিলেন। আমেরিকা এবং ন্যাটো চাচ্ছে, এই দেশে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হোক। আমার মনে হচ্ছে, এই সরকার সেই দিকেই যাচ্ছে এবং আমি আশা করি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং স্বাভাবিক একটি নির্বাচন হবে।’


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭