এডিটর’স মাইন্ড

ড. হাছান মাহমুদ কি বিকল্প সাধারণ সম্পাদক?


প্রকাশ: 05/01/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন শেষ হয়েছে গত ২৪ ডিসেম্বর। কাউন্সিলে তেমন কোনে চমক হয়নি। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বহাল রয়েছেন ওবায়দুল কাদের। কাউন্সিলে সবচেয়ে বড় চমক দেখা দিয়েছে হাছান মাহমুদের পদোন্নতি। তিনি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছেন। দীর্ঘদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ দুই’য়ে নেমে গেছেন। অনেকেই মনে করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি জেনে বুঝে এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের জ্যেষ্ঠতা পুর্ননির্ধারণ করেছেন। 

ওবায়দুল কাদের শারীরিকভাবে অসুস্থ। সাধারণ সম্পাদক পুননির্বাচিত হওয়ার পর তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন। গতকাল তিনি সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে এসেছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় রেখেই যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের তালিকা পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে বলেই আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ওবায়দুল কাদের যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন বা তার যদি শারীরিকভাবে কোন দুর্বলতা তৈরি হয় তাহলে প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকই ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন এবং সেই রকম একটি পরিস্থিতির কথা চিন্তা করেই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ বিন্যস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এই কাউন্সিলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ডা. দীপু মনি তালিকায় চতুর্থ স্থানে নেমে গেলেও আসলে তিনি ক্ষমতাবান হয়েছেন বলেও মনে করছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহল। কারণ তিনি সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এটি একটি বিরাট অর্জন এবং এর ফলে তিনি আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক কমিটির মধ্যে প্রবেশ করলেন। আর অন্যদিকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তালিকার শীর্ষে যাওয়ার ফলে আগামীতে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজেকে যোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেলেন ড. হাছান মাহমুদ। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, ড. হাসান মাহমুদ এর প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করাটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং তিনি আসলেই বিকল্প সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করবেন।

২০১৯  সালের ৭ জানুয়ারি বর্তমান সরকার দায়িত্ব পালন করে এবং এই সময় থেকে ড. হাছান মাহমুদ তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সময় থেকে ড. হাছান মাহমুদ তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন। তথ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি সপ্রতিভ এবং বিরোধী দলের সমালোচনায় মুখর থেকেছেন সবসময়। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকই কি মনে করছেন যে, ওবায়দুল কাদেরের পরে বিরোধী দলের সমালোচনায় তিনিই সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হয়েছেন। আর এই সমালোচনায় সোচ্চার থাকার কারণেই তিনি পুরস্কৃত হলেন। আওয়ামী লীগের অনেকেরই ধারণা যে, ওবায়দুল কাদের শারীরিক ভাবে যথেষ্ট অসুস্থ নন এবং কাউন্সিলের আগে যদিও তিনি সারা দেশব্যাপী চুষে বেরিয়েছেন এবং নিজেকে প্রমাণের জন্য চেষ্টা করেছেন। তারপরও তার অসুস্থতার বিষয়টি কোনো গোপন বিষয় নয়। এমনকি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার শারীরিক অসুস্থতা  নিয়ে সবসময় চিন্তিত থাকেন। এ রকম পরিস্থিতিতে সামনে কঠিন সময় যদি কোনো কারণে ওবায়দুল কাদের অসুস্থ হয়ে পড়েন বা শারীরিকভাবে তিনি দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়ে যান তাহলে সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে ড. হাছান মাহমুদই যেন  ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন সেটিকে নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও মাহবুবউল আলম হানিফ অন্তত স্বজ্জন এবং রাজনীতিতে একজন পরিশীলিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত কিন্তু সামনে সরকার বিরোধী আন্দোলন গুলো মোকাবেলা এবং বিরোধী দলের সমালোচনার জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে হাছান মাহমুদকে অধিকতর যোগ্য মনে করা হয়েছে এবং সেজন্যই তাকে প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, আসলে প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক না, ড. হাছান মাহমুদ আসলে আওয়ামী লীগের বিকল্প সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭