এডিটর’স মাইন্ড

ছয় শর্তে নির্বাচনে যাবে বিএনপি


প্রকাশ: 05/01/2023


Thumbnail

নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। ইতিমধ্যে সাতটি বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করেছে। বিএনপির এমপিরা জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেছে। রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপির নেতৃত্বে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গণমিছিলও হয়েছে। সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচিও রয়েছে। যদিও বিএনপির নেতারা বলছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু পর্দার আড়ালে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াও নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বিএনপির মধ্যে। 

বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, তারা নির্বাচনের জন্য অবশ্যই প্রস্তুত এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করেই তারা নির্বাচনে যেতে চান। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে আন্তার্জাতিক বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বিএনপির দর কষাকষি চলছে। সরকারের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বিএনপির অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনার খবরও পাওয়া গেছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার জন্য ছয়টি শর্তের কথা বলেছে, একই বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের সঙ্গেও। নির্বাচনে যাবার জন্য বিএনপি যে ছয়টি শর্তের কথা বলছে, তার মধ্যে রয়েছে- 

১.বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি: আগামী নির্বাচনে যদি বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে যায়, তাহলে তাদের প্রধান দাবি থাকবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। বেগম খালেদা জিয়াকে নি:শর্ত ভাবে মুক্তি, তার মামলাগুলো প্রত্যাহার করা -এই দাবিটি বিএনপি সবার আগে স্থান দিবে। 

২. নির্বিঘ্নে তারেক জিয়াকে দেশে ফেরার ব্যবস্থা: বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে, নির্বিঘ্নে যেন তারেক জিয়া দেশে ফিরতে পারেন, তার ব্যবস্থা করে দেওয়া এবং তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে যে সমস্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, মামলা রয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। 

৩. নির্বাচনকালে অংশগ্রহণমূলক একটি সরকার গঠন করা: নির্বাচনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার না গঠন করলেও একটি অংশগ্রহণমূলক সরকার যেন গঠিত হয়, সেই জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হবে এবং সেই প্রস্তাবে বিএনপির সম সংখ্যক ব্যক্তি যেন মন্ত্রীসভায় থাকে তা নিশ্চিত করার কথাও সে প্রস্তাবে বলা হবে। যদিও বিএনপির সদস্যরা ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন, ফলে নির্বাচনকালীন সরকারে থাকার সুযোগ এখন কমে গেছে। তারপরও বিএনপি এই দাবিটি উত্থাপন করছে। 

৪. প্রশাসনের নিরপেক্ষতা:  নির্বাচনকালীন সময়ে যে প্রশাসন থাকবে, সে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করতে হবে এবং ঢেলে সাজাতে হবে। কারণ প্রশাসন যদি দল নিরপেক্ষ না থাকে, তাহলে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলে বিএনপির অনেকে মনে করছেন এবং সেই বিবেচনা থেকেই একটি নিরপেক্ষ প্রশাসনের তাগিদ দিচ্ছে বিএনপি। 

৫. ইভিএম ব্যবহার বন্ধ করা: নির্বাচনে যাবার একটি বড় শর্ত হিসেবে বিএনপি আনছে যে, ইভিএম-এ যেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন না হয়। ইভিএম-এ নির্বাচনটি যথেষ্ট বিতর্কিত এবং এতে নির্বাচনে কারচুপি করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে বিএনপি নেতারা মনে করছেন এবং বিভিন্ন দূতাবাসেও বিএনপি একই নালিশ করেছে। সে জন্য তারা নির্বাচনে যাবার শর্ত হিসেবে ইভিএম বাতিলের কথা বলছে।
 
৬. আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা: নির্বাচন যেন জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মহল পর্যবেক্ষণ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএনপি দাবি তুলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে আলাপে আগামী নির্বাচনে যেন জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা দেশের কূটনৈতিকরা পর্যবেক্ষণ করে তা নিশ্চিত করার আহবান জানানো হয়েছে। 

এই দাবিগুলো পূরণ হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে-এমন একটি ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন যে, এটি সরকারের একটি অপপ্রচার এবং একটি ষড়যন্ত্র। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া যদি বিএনপির কেউ নির্বাচনে যায়, তাহলে তারা বেঈমান হিসেবে চিহ্নিত হবেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭