প্রেস ইনসাইড

জামায়াতের যোগসাজশে ইসলামী ব্যাংক ধ্বংসের মিশনে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার


প্রকাশ: 06/01/2023


Thumbnail

বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং এর সূচনা করেছিলো ইসলামী ব্যাংক। ১৯৮৩ সালে এই ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলেন যুদ্ধাপরাধের দূর্নীতির দায়ে দন্ডিত মীর কাশেম আলী। এই ব্যাংকটি ১৯৮৩ সাল থেকে জামায়াতের অর্থের মূল উৎস হিসেবে বিবেচিত হতো। জামায়াত নিয়ন্ত্রিত এই ব্যাংকটি সারাদেশ জামায়াতের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অর্থের যোগান দিতো। ইসলামী ব্যাংকের মুনাফার টাকা কোথায় যেতো এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছিলো বিভিন্ন মহলে। সেই সময়ে অর্থনীতিবিদ সহ বিভিন্ন বিশ্লেষকরা ইসলামী ব্যাংককে জামায়াতের রাহুমুক্ত করার দাবি তুলেছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন যে, জামায়াত নিয়ন্ত্রিত দেশসেরা এই ব্যাংকটির লভ্যাংশের টাকা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নের কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এই ব্যাংকের মাধ্যমে জামায়াতের বিভিন্ন নেতারা ফুলে-ফেপে উঠেছিলেন। এ রকম বাস্তবতায় এক রকম গণচাপে ইসলামী ব্যংককে জামায়াতমুক্ত করে আওয়ামী লীগ সরকার। 

২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা পরিবিরর্তন করা হয় এবং জামায়াতের হাত থেকে ইসলামী ব্যাংককে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। এসময় ইসলামী ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদ তৈরি করা হয়। তারপর থেকে এই ব্যাংকটি জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে নাই এবং জামায়াতকে নিয়মিতভাবে যে অর্থায়ন করা হতো সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। ২০১৭ সালের ব্যাংকের মালিকানা পরিবর্তনের পর ব্যাংকটি নতুনভাবে বিকশিত হয় এবং জামায়াতের রাহুমুক্ত হয় ব্যাংকটি। এ সময়ই জামায়াত নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আর এই ষড়যন্ত্রে অন্যতম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুটি গণমাধ্যম। প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার জামায়াতের নির্দেশে এবং নিয়ন্ত্রণে এখন তাঁদের জনসংযোগ ফার্ম হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে। জামায়াতের নীল-নকশা বাস্তবায়নে প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই পত্রিকা দুটি। এবং এই জন্যই এই দুটি পত্রিকাই বিপুল পরিমাণে অর্থ পাচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। 

উল্লেখ্য যে, প্রথম আলোর সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের পুরণো। যখন গণজাগরণ মঞ্চ তৈরী হয়েছিলো কাদের মোল্লার বিচারের দাবিতে ঠিক সেই সময়ে প্রথম আলোতে গণজাগরণ মঞ্চ সম্পর্কে বিতর্কিত, অশ্লীল লেখা ছাপা হয়েছিলো, গল্প ছাপা হয়েছিলো। সেই সমস্ত অপপ্রচারের সূত্র ধরেই হেফাজতে ইসলাম ২০১৩ সালের মে’তে গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে ঢাকায় পদযাত্রা করেছিলো। এবং ঢাকায় এসে তারা তান্ডব চালিয়েছিলো। পরে সরকারের দৃঢ় উদ্যোগে শাপলা চত্বরে হেফাজতের তান্ডব শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। এরপরও প্রথম আলো, ডেইলি স্টার বসে থাকেনি। তাঁরা যখন দেশের অর্থনীতিতে বৈশ্বিক সঙ্কটের আচ লেগেছে সেই সময়ে ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর নজর দেয় এবং জামায়াতের প্রেসক্রিপশনে এবং জামায়াতের অর্থায়নে একের পর একে ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে রিপোর্ট তৈরী করা শুরু করে। কিন্তু এই সমস্ত রিপোর্টগুলো যে ভিত্তিহীন, মিথ্যা এবং বানোয়াট ছিলো তা বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্লেষকরা বুঝলেও সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। জামায়াত এখন ইসলামী ব্যাংক পুনরুদ্ধারের যে মিশনে নেমেছে সেই মিশনে প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে প্রথম আলো, ডেইলি স্টারকে। এই দু’টি পত্রিকা গত বছর নভেম্বর মাস থেকে লাগাতার ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন তৈরী করছে। কিন্তু বছরের শেষে হিসেবে দেখা যাচ্ছে যে, ইসলামী ব্যাংক এখনো বাংলাদেশে সবচেয়ে লাভজনক এবং সফল ব্যাংক। 

সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর আর্থিক হিসাবে দেখা যায় যে, এই ব্যাংকটির মুনাফা অন্য যে কোনো ব্যাংকের চেয়ে বেশী। তারপরেও এই ব্যাংকটির ইমেজ নষ্ট করা এবং এই ব্যাংকটি ওপর থেকে যেনো গ্রাহকদের আস্থা নষ্ট হয়ে যায় সেইজন্য কাজ করছে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার। আর প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের এই মিশনের মূল মদদ দাতা জামায়াতে ইসলাম। জামায়াতের সঙ্গে প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের এই কানেকশন সুশীল মহলে নতুন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা করার মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারকে চাপে ফেলা। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, প্রথম আলো কিংবা ডেইলি স্টার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও আসলে জামায়াতের স্বার্থ সংরক্ষণেরই ক্ষেত্রেই বেশী ভূমিকা রাখে।

বিভিন্ন সময় এই গণমাধ্যমটির ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক এবং প্রশ্ন উঠেছে। এই পত্রিকাটিই ১/১১ এর সময় সময় মহানবী (সা.) কে কটুক্তি করে কার্টুন ছেপেছিলো। এবং এই কার্টূন ছাপার পর পত্রিকাটির বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ,মুসলমানরা তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে। এবং তাঁরা পত্রিকাটি নিষিদ্ধের দাবি তুলেছিলো। সেই সময়ে পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান বায়তুল মোকাররমের খতিবের পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রায় বেঁচে যান। কিন্তু পত্রিকার কার্টুনিস্ট এবং একজন রিপোর্টারকে দীর্ঘদিন কারাভোগ করতে হয়। এরপর মতিউর রহমানের সঙ্গে জামায়াতের সুসম্পর্ক হয়। বাংলা ইনইসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে জামায়াতের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামির দীর্ঘদিনের পুরনো সম্পর্ক ছিলো। এবং নিজামির সাক্ষাৎকার মতিউর রহমান নিয়েছিলেন। জামায়াতের সেই পুরনো সংযোগের সূত্র ধরেই এখন জামায়াতের ইসলামী ব্যাংক ধ্বংসের মিশনে প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টার ভূমিকা রাখছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭