প্রকাশ: 09/01/2023
২০০৮
সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যেই
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো,
তা এখন দৃশ্যামান। আর
এই ডিজিটাল বাংলাদেশই বদলে দিয়েছে দেশের
উন্নয়ন অগ্রগতির গতিপথ। ২০৪১ সালকে সামনে
রেখে এখন নতুন চ্যাইলেঞ্জ
স্মার্ট বাংলাদেশ। এই স্মার্ট বাংলাদেশ
সহজ করবে মানুষের জীবন
যাত্রা, হাতের মুঠোয় থাকবে সবকিছু। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুকন্যা। শেখ হাসিনার হাত
ধরেই আসবে সেই রূপকথার
মতো দেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ।’
এখন
প্রশ্ন হচ্ছে, স্মার্ট বাংলাদেশ কি? কেন দরকার?
কিভাবে বাস্তবায়ন হবে? স্মার্ট বাংলাদেশ
বলতে মুলত বোঝায় প্রযুক্তিনির্ভর
জীবনব্যরবস্থা, যেখানে সব ধরনের নাগরিক
সেবা থেকে শুরু করে
সবকিছুই স্মার্টলি করা যাবে। যেখানে
ভোগান্তি ছাড়া প্রতিটি নাগরিক
পাবে অধিকারের নিশ্চয়তা এবং কর্তব্য পালনের
সুবর্ণ এক সুযোগ।
সেই
স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখাকে চারভাগে ভাগ করে ভবিষ্যৎ
কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দেশরত্ন
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। স্মার্ট
সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনোমি, স্মার্ট গর্ভনমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি
এই শব্দগুলোর সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই
স্মার্ট বাংলাদেশ থিওরিকে বাস্তবে রূপায়ন করা সম্ভব।
‘স্মার্ট
বাংলাদেশে’র মূল সারমর্ম
হবে -দেশের প্রতিটি নাগরিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হবে, উইথ
স্মার্ট ইকোনমি; অর্থাৎ, ইকোনমির সমস্ত কার্যক্রম আমরা এই প্রযুক্তি
ব্যবহার করে করব। স্মার্ট
গভার্নমেন্ট; ইতোমধ্যে আমরা অনেকটা করে
ফেলেছি। সেটাও করে ফেলব। আর
আমাদের সমস্ত সমাজটাই হবে স্মার্ট সোসাইটি।
সেই
বিবেচনায় ২০২১ থেকে ৪১
প্রেক্ষিত পরিকল্পনাও প্রণয়ন শুরু হয়ে গিয়েছে
অর্থাৎ ২১ থেকে ৪১
কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নটা হবে তার একটা
কাঠামো পরিকল্পনা বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই প্রণয়ন করে ফেলেছে। যা
জনগণের জন্য অন্যতম আর্শীবাদ
বয়ে আনবে।
অন্যদিকে
২০৪১ সালেই শেষ নয়, ২১০০
সালেও এই বঙ্গীয় বদ্বীপ
যেন জলবায়ুর অভিঘাত থেকে রক্ষা পায়,
দেশ উন্নত হয়, দেশের মানুষ
যাতে ‘সুন্দর, সুস্থ এবং স্মার্টলি’ বাঁচতে পারে, সেজন্য ডেল্টা প্ল্যান করে দেওয়ার কথা
বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
স্মার্ট
বাংলাদেশ কী এবং কিভাবে
তা অর্জিত হতে পারে সেটি
ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত
অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ঘোষণা
করেছেন। তিনি বলেছেন, আগামী
২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের
দেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ,
ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশের
পরিকল্পনা এই শতাব্দীর সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত,
কেননা উন্নত বিশ্বের দেশগুলো তো এরই মধ্যে
স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত হয়েছে,
এমনকি অনেক উন্নয়নশীল দেশও
স্মার্ট দেশে রূপান্তরের পথে
অনেক দূর এগিয়ে গেছে,
তাই দেশের উন্নতি এবং অগ্রযাত্রা ধরে
রাখতে হলে দেশকে উন্নত
বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে হবে।
আগামীতে যেসব দেশ প্রযুক্তি
ব্যবহারে এগিয়ে থাকবে তারাই ব্যবসা-বাণিজ্য, আন্তর্জাতিক লেনদেন এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে
সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় তৈরি করতে পারবে।
দেড়
যুগ আগে বর্তমান সরকার
স্মার্ট বাংলাদেশের মতোই ডিজিটাল বাংলাদেশের
পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল, যার
শতভাগ সফলতা এখন দৃশ্যমান। বিগত
করোনা মহামারির বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি বাংলাদেশ অনেক উন্নত দেশের
চেয়েও যেয়ে সুন্দরভাবে সামাল
দিতে পেরেছে তার অনেক কারণের
মধ্যে একটি হচ্ছে ডিজিটাল
বাংলাদেশের সফল।
ডিজিটাল
বাংলাদেশের একটি বড় সুবিধা
হচ্ছে, দেশের সব কিছু উন্নত
বিশ্বের মতো প্রযুক্তিনির্ভর করে
তোলা, যাকে এককথায় ডিজিটালাইজেশন
বলা হয়ে থাকে, বর্তমান
বিশ্বে প্রযুক্তিনির্ভর ডকুমেন্টের গ্রহণযোগ্যতা সবচেয়ে বেশি, একসময় আমাদের দেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা অনেক দেশেই কম
ছিল, সেই পাসপোর্ট যখন
সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর ই-পাসপোর্ট রূপান্তর
করা হলো, তখন এর
গ্রহণযোগ্যতাও অনেক গুণ বেড়ে
গেল।
ডিজিটাল
বাংলাদেশের বদৌলতে সরকার দেশের সব নাগরিকের জন্য
ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) চালু করেছে, যেহেতু
এনআইডি সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর একটি ডকুমেন্ট, তাই
এর গ্রহণযোগ্যতা শুধু দেশের অভ্যন্তরেই
নয়, দেশের বাইরেও অনেক বেশি, এখানকার
সরকারি অফিস থেকে এনআইডির
কপি চেয়ে (যেকোন প্রয়োজনেই চাওয়া হয়) এবং সেই
কপি জমা দেওয়ার কারণে
অনেক আনুষঙ্গিক কাগজপত্র জমা দিতে হয়না
অথচ এরাই আগে আমাদের
দেশের কোনো কাগজপত্রই খুব
সহজে বিশ্বাস করতে চাইত না,
এখানেই দৃশ্যমান হয় ডিজিটাল বাংলাদেশের
গুরুত্ব এবং সুবিধা।
আবার
বর্তমান যুগে সব কিছু
ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর না করতে পারলে
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে কী মারাত্মক
সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে তার
দৃষ্টান্ত আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাত। দেড় যুগ
আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের সূচনা হলেও দেশের ব্যাংকিং
খাত সেভাবে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে উঠতে পারেনি
কিংবা প্রযুক্তি নির্ভর হলেও রয়েছে সমন্বয়হীনতা।
বিচ্ছিন্নভাবে একেক ব্যাংক একেক
রকম প্রযুক্তির ব্যবহার করছে ঠিকই, কিন্তু
তাতে প্রকৃত ডিজিটাল ব্যাংকিং থেকে আমাদের দেশের
ব্যাংকিং খাত অনেক দূরে।
আজ বিশ্বের নামকরা সব ব্যাংক যে
আমাদের দেশের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে ব্যাবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করছে তার কয়েকটি
সুনির্দিষ্ট কারণের মধ্যে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে
উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারে আমাদের ব্যাংকগুলোর পিছিয়ে থাকা।
ডিজিটাল
বাংলাদেশের হাত ধরে দেশকে
এগিয়ে নিতে হলে বাংলাদেশকে
প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেক উন্নত হতে
হবে এবং সেই উদ্যোগ
সফল করতে হলে স্মার্ট
বাংলাদেশ এই মুহূর্তে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী এক
কর্মপরিকল্পনা। অনেকেই হয়তো বলার চেষ্টা
করবেন যে দেশকে প্রযুক্তিগতভাবে
এগিয়ে নেওয়ার জন্য স্মার্ট বাংলাদেশ
নামের স্লোগানের কী প্রয়োজন। প্রয়োজন
অবশ্যই আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ
তো শুধু একটি স্লোগান
নয়, আগামী দুই যুগ ধরে
চলবে এমন এক বিশাল
কর্মযজ্ঞের নাম স্মার্ট বাংলাদেশ।
আমাদের ভবিষ্যত লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ।
চতুর্থ
শিল্প বিপ্লবের সুফল গ্রহণের মাধ্যমে
স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে প্রয়োজন
স্মার্ট সিটিজেন। ভবিষ্যতে যাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকবে,
তারাই ভালো কাজ পাবে।
যাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা থাকবে না, তারা কাজ
হারাবে। তবে সবাই কাজের
অযোগ্য হয়ে যাবে তা
মোটেই নয়। অনেক বেশি
কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে চতুর্থ শিল্প
বিপ্লবের ফলে।” “চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে বাংলাদেশের মানুষের
মাথাপিছু আয় বর্তমানের চেয়ে
৫-১০ গুণও বাড়তে
পারে। “ভবিষ্যতের এই অদম্য অগ্রযাত্রায়
সবাইকে সামিল হতে হবে।
আমাদের
জনসংখ্যার বিরাট অংশ তরুণ জনশক্তি।
তাদের দক্ষ ও যোগ্য
করতে পারলেই দেশ হবে স্মার্ট
বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্ম পাবে
নতুন এক বাংলাদেশ।” এধরনের
আশংকাগুলোর সত্যতা অনুধাবন করা যায়।
উন্নত
বিশ্ব প্রযুক্তি ব্যবহারে আজ যে পর্যায়ে
এসেছে তার কাজটা শুরু
করেছিল আজ থেকে তিনদশক
আগে। তার পরও এখন
দেশ যে শতভাগ প্রযুক্তিনির্ভর
হয়ে গেছে এমন দাবি
করার সময় এখনো আসেনি।
সেই বিবেচনায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়েই স্মার্ট
বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা হাতে
নিয়েছেন। এখন প্রয়োজন কাধে
কাধ মিলিয়ে এই উদ্যোগকে সফলভাবে
এগিয়ে নেওয়ার৷জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু৷
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭