ইনসাইড গ্রাউন্ড

সাকিব ও বিসিবির নীরব যুদ্ধের শেষ কোথায়?


প্রকাশ: 12/01/2023


Thumbnail

সাকিব আল হাসান ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের শীতল সম্পর্ক নতুন কিছু নয়। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোষ্টার বয় এবং বোর্ডের মধ্যকার এই নীরব লড়াইয় চলে আসছে কয়েক বছর ধরেই। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মিডিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোভ করে যান কিংবা সুযোগ থাকলে এক পক্ষ ধুয়ে দেন আরেক পক্ষকে। আবার তার প্রত্যুত্তর দিতেও খুব বেশি সময় নেন না অপর পক্ষ। এভাবেই সমান্তরালে গলা জড়াজড়ি করে চলছেন সাকিব আল হাসান ও বিসিবি।

বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব। ফলে দলে তার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। আবার মাঠের বাইরের জীবনে সাকিব খানিকটা ঠোঁটকাটা। ফলে প্রয়োজনীয় ইস্যুতে বোর্ডের সমালোচনা করার ক্ষেত্রেও তার জুড়ি মেলা ভার। কখনো তা সরাসরি, কখনো তা একটু ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে। আরো একবার এরকম দৃশ্যপটের সৃষ্টি হয়েছে বিপিএলের নবম আসরকে ঘিরে।

গত সপ্তাহে বিপিএল মাঠে গড়ানোর আগে টুর্নামেন্টটিকে 'যা-তা' বলে অ্যাখায়িত করেছিলেন সাকিব। আর এ জন্য দায়ী করেছিলেন আয়োজক কমিটি ও বোর্ডের সদিচ্ছার অভাবকে। ডিআরএস না থাকা, পেশাদারিত্বের অভাব ওবং নানা অব্যবস্থাপনার জন্য দিন দিন প্রতিযোগিতাটি মান হারাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। গালফ অয়েলের শূভেচ্ছাদূত হয়ে কোম্পানিটিতে একদিনের 'সিইও' হিসেবে দ্বায়িত্ব পালনের দিন সাকিব বলেন, দ্বায়িত্ব পেলে সবকিছু বদলে ফেলবেন তিনি। আর এ জন্য সময় লাগবে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই মাস। এমনকি বিপিএলের থেকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের মান ভালো বলেও মন্তব্য করেন সাকিব।

সাকিবের এসব কথাকে বালভাবে নেয়নি বিসিবি। বোর্ডের পক্ষ থেকে ইটের জবাবটি পাটকেলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথম প্রতিক্রিকয়া দেখান বিসিবির সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। বলেন, সীমাবদ্ধতাগুলো জানা থাকলে এমন মন্তব্য করতেন না সাকিব। এরপর বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল থেকে আগামী বছর দ্বায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় সাকিবকে।

সবশেষ বিসিব সভাপতি নাজমুল হোসেন পাপনও কথা বলেছেন এই বিষয়ে। সাকিবের মতো দ্বায়িত্বশীল ক্রিকেটারের কাছ থেকে এমন মন্তব্যে হতাশা প্রকাশ করেন বিসিবি প্রধান। সাকিবের মতো ক্রিকেটারের কাছ থেকে এমন নেতিবাচক মন্তব্য দেশের ক্রিকেটের জন্য ভাল কিছু বয়ে আনবে বলে মনে করেন নাজমুল হাসান পাপন। সাকিবের কাছ থেকে আরো দ্বায়িত্বশীল আচরণের প্রত্যাশা তার।

মাঠের বাইরে ঘটনা ছাড়াও, মাঠের ভেতরেও নানা ঘটনায় আলোচনায় সাকিব আল হাসান। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে ওয়াইড বল দেয়া নিয়ে আম্পায়ারের দিকে ছুটে যাওয়া, নিয়মভঙ্গ করে মেজাজ হারিয়ে মাঠে ঢুকে তর্ক জুড়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটিয়েছেন সাকিব আল হাসান। শেষ ঘটনায় ম্যাচ ফি'র ১৫ শতাংশ জরিমানাও গুণতে হয়েছে তাকে। তবে সব বিতর্ক পাশে চাপিয়ে বিপিএলের প্রশংসাও শোনা যাচ্ছে সাকিবের কণ্ঠে। লো স্কোরিং ম্যাচের টুর্নামেন্টের তকমা পাওয়া বিপিএলে এবার বড় রানের দেখা মিলছে। আর তাতে উইকেট নিয়ে খুশি সাকিব। সেই সাথে দেশিয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের প্রশংসাও ঝড়েছে তার কন্ঠে।

সবমিলিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিবের কোন বিকল্প নেই। আবার সিনিয়র খেলোয়াড় হওয়ায় ক্রিকেটারদের নানা বিষয়ে সামনে থেকেই কথা বলেন বা নেতৃত্ব দেন সাকিব। কখনো কখনো মাঠেই মেজাজ হারিয়ে জন্ম দেন শিরোনামের। তবে সব ছাপিয়েও অনন্য

সাকিব আল হাসান। তার এই ঠোঁটকাটা কথাগুলো ঘুম ভাঙায় সংশ্লিষ্টদের। তার এমন আগ্রাসী মনোভাবের কারণে তিনি আলাদা করে জায়গা পাবেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে। মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে উভয় জায়গাতেই অলরাউন্ডারের ভূমিকা পালনে সিদ্ধহস্ত তিনি। সাকিবের এই সকল প্রতিক্রিয়ায় দেশের ক্রিকেট উপকৃত হবে নাকি বোর্ডের সাথে এই নীরব যুদ্ধ চলতে থাকবে- সেটিই এখন দেখার বিষয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭