দেশের যে সব এলাকায় যে কারণে শীত বেশি

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবারে শীতের প্রকোপ বেশি। দেশের এসব এলাকায় সবচেয়ে কম তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ফলে ওই এলাকাগুলোর মানুষ শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে। এর মধ্যে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে শীত বেশি। কারণ, ওই দুই এলাকার কয়েক কিলোমিটার পেছনে হিমালয় পর্বতমালা ও মেঘালয়ের পাহাড়ি এলাকা অবস্থিত। শীতকালে হিমালয়ে রীতিমতো বরফ পড়ে থাকে।

এদিকে রবিবার (১৫ জানয়ারি) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের বেশির ভাগ এলাকায় সকাল থেকে ঘন কুয়াশা আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থাকতে পারে। বাতাসে জলীয়বাষ্প বেড়ে যাওয়ায় আজ রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টাজুড়ে বরিশাল ছাড়া দেশের সব বিভাগে বৃষ্টি ও শীতল আবহাওয়া থাকবে। সোমবার থেকে সারা দেশে আবারও শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

অন্যদিকে গত এক যুগ ধরে যশোর ও চুয়াডাঙ্গার প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। নদ-নদী শুকিয়ে পানি ও জলীয় বাষ্প কমে গেছে। ফলে শীতের বাতাস কিছুটা উষ্ণ জলীয় বাষ্পের বাধা পাচ্ছে না। এ কারণে তাপমাত্রা কম থাকছে। যে কারণেই এই দুই অঞ্চলের শীত বেশি থাকছে। 

দুই সপ্তাহ ধরে দেশের ভেতর দিয়ে যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা ওই তিন এলাকায় বেশি দিন স্থায়ী হয়েছে। গতকাল শনিবারও দেশের সবচেয়ে শীতল এলাকা ছিল তেঁতুলিয়া। সেখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ মৌসুমে সর্বনিম্ন। শ্রীমঙ্গল, চুয়াডাঙ্গা, যশোরেও টানা শৈত্যপ্রবাহ চলছে।

গত ৩০ বছরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবারও চলতি বছরে দেশের সবচেয়ে শীতল এলাকা ছিল ওই তেঁতুলিয়ায় -৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শ্রীমঙ্গল ও চুয়াডাঙ্গাতেও গত সপ্তাহে একাধিকবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

এ সব বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, উত্তর গোলার্ধ থেকে আসা শীত বাংলাদেশ বা এ অঞ্চলে সরাসরি ঢুকতে পারে না। হিমালয় থেকে আসা বায়ুর একটি অংশ কাশ্মীর, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের একাংশ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। গরমের দিনে দিল্লির তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে কমতে কমতে বাংলাদেশে আসতে থাকে। আবার শীতকালে দিল্লির অতি শীত ধীরে ধীরে কমতে কমতে বাংলাদেশে আসে। শীতের সময় এই উত্তুরে হাওয়া বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশ চুয়াডাঙ্গা দিয়ে ঢোকে।