ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ফের ভাঙছে পাকিস্তান?


প্রকাশ: 19/01/2023


Thumbnail

প্রাকৃতিক বিপর্যয়, মন্দা, মুল্যস্ফীতি, রিজার্ভ ঘাটতি থেকে শুরু করে ঋণের বোঝায় জর্জরিত পাকিস্তান। এদিকে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ জনগণ। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ ঘাটতি, জ্বালানি সংকট, খাদ্য সংকট সবমিলিয়ে সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন তারা। এহেন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা ভারতের নাগরিকত্ব নিতে চাইছেন বলে দাবি করেছেন পাকিস্তানি সমাজকর্মী আমজাদ আয়ুব মির্জা। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। অনেক সময়ে টাকা খরচ করলেও পাওয়া যাচ্ছে না দরকারি জিনিসপত্র।  আর সেই জন্যই ভারতে আশ্রয় নিতে চাইছেন অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা।

আয়ুব মির্জা বলেছেন, “খাবারের সন্ধানে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। কাশ্মীরে একদিনেই অনেকটা বেড়েছে খাদ্যসামগ্রীর দাম। এক ধাক্কায় আটার দাম ১২০০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। এমনকি সরকারের তরফে রেশনের ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ বিরক্তির চরম সীমায় পৌঁছেছে। গিলগিট-বালুচিস্তানের প্রত্যেকটি শহরেই প্রতিবাদে সরব হয়েছে সাধারণ মানুষ। পড়ুয়া থেকে শুরু করে মহিলারাও পথে নেমে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে।”

মির্জা আরও জানিয়েছেন, অধিকৃত কাশ্মীরের যুবসমাজের মুখে এখন নতুন স্লোগান, “টুটে রিশ্তে জোড় দো”। অর্থাৎ একটা সময়ে ভারতের অংশ থাকা অঞ্চলগুলি আবার কাশ্মীর ও লাদাখের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাক এমনটাই চাইছেন তারা। 

জানা গিয়েছে, ঋণ মেটানোর বোঝা চেপেছে দেশটির জনসাধারণের ঘাড়েই। আটা-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তুর দাম প্রায় ১৩৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে অধিকৃত কাশ্মীরের অন্য এক সমস্যাও রয়েছে। খালসা সরকার করের দ্বারা গিলগিট ও বেলুচিস্তানের যেকোনোও পরিত্যক্ত জায়গায় সেনা ছাউনি বানানোর অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ জমা হচ্ছিল সাধারণ মানুষের। আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে সরকারের প্রতি বিদ্বেষ আরও বেড়েছে।

এদিকে চিন-সহ একাধিক দেশ থেকে বিপুল পরিমাণে ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। ইন্টারন্যাশনাল মনিটেরি ফান্ড (আইএমএফ) থেকেও ঋণ নিয়েছে ইসলামাবাদ। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় গত বছর ভয়াবহ বন্যার পরে। বন্যার পানিতে ডুবে যায় দেশটির এক তৃতীয়াংশ। তার জেরেই প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের বিদেশী মুদ্রার ভাণ্ডার। বন্যার পর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ৯০০ কোটি ডলার দিয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রতি দেয় একাধিক দেশ। তবে এত ঋণ নিলেও শোধ করার উপায় জানা নেই পাকিস্তানের।

এদিকে দেশটির কেন্দ্রীত ব্যাংক এএ সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী রিজার্ভ মজুদ রয়েছে মাত্র ৫০০ কোটি ডলার এর মত। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক হয়েছে আগামী  এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ব্যয় না মেটাতে পারার দায়সহ দেউলিয়া হয়ে যাবে পাকিস্তান। যদিও কিছুদিন আগেই দেশটির জন্য ১১০০ কোটি ডলার সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে একাধিক দেশ। কিন্তু ঋণ মেটানোর উপায় নেই তাদের। ক্যাননা বন্যা কবলিত এলাকায় এখনো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে পারেনি দেশটির সরকার। এই অবস্থায় ভারতের সাথে আলাচনা বসার আহ্বান জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। তার মধ্যেই এই সুর বেজে উঠে অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের মনে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭