ইনসাইড বাংলাদেশ

জামালপুরে ৮ সন্তানের জন্ম দিলেন ২ মা


প্রকাশ: 21/01/2023


Thumbnail

একটি দুটি নয়। একে একে আটটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন জামালপুরের দুই মা। এক মা বিকেলে ও আরেক মা রাতে জন্ম দেন ৮ সন্তানের।  

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জামালপুর শহরের দেওয়ানপাড়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনে ৪টি কন্যা সন্তান প্রসব করে আঞ্জুয়ারা বেগম। গর্ভকালীন সময়ে পরীক্ষার মাধ্যমে তিনটি শিশু গর্ভে থাকার কথা জানলেও অপারেশনের পর ৪টি কন্যা সন্তান পেয়ে উচ্ছ্বসিত স্বজনেরা।

৪ কন্যা শিশুর ফুবু ছানোয়ারা বেগম  বলেন, আমরা আগে আল্ট্রাসনোগ্রাম করেছিলাম। তখন পেটে তিনটি শিশু আছে বলে জানতে পারি। গর্ভে শিশুদের নাড়াচাড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বুধবার বিকালে ক্লিনিকে ভর্তি করি। এরপর ডাক্তার সিজারের সিদ্ধান্ত নেয়। সিজারের পর আমরা দেখি ৪টি কন্যা সন্তান। আলহামদুলিল্লাহ। আমরা এখন অনেক খুশি।

অপারেশনের পরই নবজাতক ৪ কন্যা শিশুকে পাঠানো হয় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে ৪ কন্যা শিশুকে বিশেষায়িত নবজাতক সেবাকেন্দ্রে রাখেন কর্মরত চিকিৎসক।

বিয়ের সাত বছর পর একসাথে চার কন্যা সন্তানের জনক হতে পেরে আবেগে আপ্লুত আতাউর হোসেন বাবু। পেশায় দরিদ্র কাঠ মিস্ত্রি বাবু মিয়া এই সন্তান পালনে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা।

জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর সরিষাবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমান বাবু বলেন, আমি সাত বছর আগে বিয়ে করি। আমাদের কোনো সন্তান হয় না। আমরা আল্লাহর কাছে একটি সন্তান ভিক্ষা চেয়েছি অনেকবার। আজ আল্লাহ আমার দিকে তাকাইছে। আমি অনেক খুশি।

আতাউর রহমান বাবু আরও বলেন, আমি অনেক গরীব। এখন কীভাবে এই মেয়েদের লালন পালন করব। সেটা নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি। প্রধানমন্ত্রী যদি একটু সহায়তা করতো তাহলে আমি এই সন্তানদের লালন পালন করতে পারতাম।এদিকে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে সাজু-দুলেনা দম্পতির কোলে আসে আরও ৪টি সন্তান। তিন কন্যা সন্তান স্বাভাবিক থাকলেও মারা যায় একটি ছেলে সন্তান।

আগের ৫টিসহ মোট ৮ সন্তানের পিতা হতে পেরে আনন্দে আত্মহারা সাজু মিয়া।

জেলার ইসলামপুর উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের পোড়ার চর মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক সাজু মিয়া  বলেন, আমার ৫টি সন্তান রয়েছে। আজ আরও ৩টি সন্তানের বাবা হলাম। মোট ৮ সন্তানের বাবা হলাম। আমি আমার আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না।

হাসপাতাল চত্বরে শিশুদের স্বজনদের মাঝে চলছে খুশির আমেজ।

শিশুদের দাদী জমিলা বেগম  বলেন, আমার ছেলের ঘরের সন্তান হয় না। তাই আমি সাত বছর ধরে অনেক আফসোস করেছি। আজ আল্লাহ আমার কোল ভরে দিয়েছে। আমি অনেক খুশি। এখন কাকে ছেড়ে কাকে কোলে নেব। সেটাই বুঝতে পারছি না।একই দিনে দুই নারীর আট সন্তান প্রসবের ঘটনা আগে দেখেনি হাসপাতালের কর্মচারীরা। শিশুদের দেখতে হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স শিউলি খানম  বলেন, আমি ১০ বছর ধরে প্রসূতি ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করছি। এর আগে কখনও একই দিনে দুই নারীর ৮ সন্তান প্রসবের ঘটনা দেখি নিই। আমি অবাক হয়ে গেছি।

তবে চিকিৎসক বলছেন, নির্ধারিত সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করায় শিশুদের ওজন কম থাকায় কিছুটা ঝুঁকিতে রয়েছে শিশুরা ।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক  প্রসন দেবনাথ  বলেন, হাসপাতালে থাকা প্রতিটি শিশুই নির্ধারিত সময়ের আগে জন্মগ্রহণ করেছে। প্রত্যেকের ওজন স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে কম। সাধারণত যেসব শিশুর ওজন একটু কম তাদের কিছুটা ঝুঁকি থাকেই। আমরা আমাদের সাধ্যমত  এসব শিশুদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭