প্রকাশ: 25/01/2023
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাত ধরে আমুল পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের। শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক, ও সামাজিক অগ্রগতি হচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে। প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে সর্বক্ষেত্রে। কিন্তু ১৬ কোটি মানুষের আবেগ যে ক্রিকেট নিয়ে সেটি যেনো অবস্থান করছে একই বিন্দুতে। ক্রিকেট পাগল প্রধানমন্ত্রী নানা সময়ে সরাসরি উপস্থিত থাকেন গ্যালারিতেও। খেলোয়াড়দের রোগ ব্যাধিতেও সরব থাকেন তিনি। এমন খেলা প্রিয় প্রধানমন্ত্রী পেয়েও দেশের ক্রিকেটের উন্নতি কেনো এত ধীর গতিতে সেটি চিন্তার বিষয় ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সকলের।
ক্রিকেটে
উন্নতি হয় নাই এমনটা
নয়। ক্রিকেটেও উন্নতি হয়েছে, সেটাও বলতে হবে। তবে কাঙ্ক্ষিত গতিতে নয়। অথচ এই ক্রিকেটটাই দলমত,
জাত-পাত, সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে দেশে-বিদেশের বাঙালিরা হৃদয়ে ধারণ করে। ক্রিকেট বাঙ্গালিদের আলাদা একটা পরিচিতি দিয়েছে। যে ব্রিটিশদের কাছ
থেকে এ দেশের মানুষ
ক্রিকেট নামক খেলাটা শিখেছে, সেই ব্রিটেনে এক সময় এ
দেশের মানুষ যে রেস্টুরেন্টগুলো চালাতো তার
বেশিরভাগের সাইনবোর্ডে লেখা থাকত ‘ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট! কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন ইংল্যান্ডে
যাওয়া-আসা শুরু করল তখন সেখানকার মানুষও জানতে শুরু করল, বাংলাদেশের মানুষ, বাঙালিরাও এখানে আছেন। সেটা ক্রিকেট মাঠেই দেখা গেল। এখন সেখানে ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টও চলছে। ক্রিকেট এই পরিবর্তনের ঢেউটা
এনেছে। মাঠের বাহিরের ঢেউটা কি মাঠের পারফরম্যান্সে
হয়েছে সে প্রশ্নটা তোলায়
থাকুক।
গ্লোবালাইজেশনের
যুগে স্পোর্টস এখন কর্পোরেটদের আয়ের বড় এক খোরাক৷
ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলো এর বড় এক
উদাহরণ। ক্রিকেটবোর্ড আয়োজন করে দিলেও পুরো টুর্নামেন্ট নিয়ন্ত্রণ থাকে ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোর দখলে। তাতেও কোন সমস্যা নেই যদি নতুন খেলোয়াড় বেড়িয়ে আসে৷ যারা জাতীয় দলকে সার্ভিস দিবে দীর্ঘ সময়। কিন্তু বাংলাদেশে তাও হয় না। প্রতিবছরই
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএল নামে আয়োজন হয় ফ্র্যাঞ্চাইজি
ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট।
২০১২ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হওয়া বিপিএল থেকে উঠে এসেছে এমন কোন খেলোয়াড় নেই বর্তমান বাংলাদেশ জাতীয় দলে। বিপিএল থেকে যাদের জাতীয় দলে আনা হয় বেশিরভাগ খেলোয়াড়
দলে স্থায়ী হতে পারেন না ফর্মের জন্য।
কয়েক বছরের মধ্যেই বাদ পড়ে যান জাতীয় দল থেকে। বিপিএল
শুরুর আগে দেশ সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের কণ্ঠেও
ছিলো বিপিএল থেকে প্লেয়ার উঠে না আসার আক্ষেপ।
তাহলে বিপিএল আয়োজনের উদ্দেশ্যটাই বা কি? আর
যদি ক্রিকেটের উন্নতিই হয় তাহলে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টাইগারদের বেহাল দশা কেনো সে চিন্তাও অশনি
সংকেত দিবে যেকোন ক্রিকেট বোদ্ধাদের মনে।
অথচ
পাশ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্থানের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট
থেকে প্রতিবছরই বেরিয়ে আসে নতুন প্রতিভা। যাদের মধ্যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের
এপ্রোচ, শট সিলেকশন, ম্যাচের
মোমেন্টাম বুঝে মাঠে নিজেদের প্রতিভার বাস্তবায়ন সব কিছুই দেখা
যায়। কিন্তু বাংলার ক্রিকেট যেনো দিক বেদিক শূন্য। ক্রিকেটের এই ছোট্ট সংস্করণে
এখনো যেনো পিছিয়ে বাংলাদেশ। যদিও চলতি বিপিএল মৌসুম শুরুর আগে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেছেন এবারের টার্গেট নতুন প্রতিভা খুজে বের করা। ইতিমধ্যে মাঠের বিপিএল জমে উঠেছে জমজমাট লড়াইয়ে নির্বাচকদের চোখ ও হয়ত নতুনদের
দিকে। চলমান বিপিএল থেকেই হয়ত পেয়ে যাবে আগামী তারকাদের সে প্রত্যাশায় থাকবে
নির্বাচকদের কাছে।
এরপরেও
প্রশ্ন থেকে যায় বাংলাদেশের পঞ্চপান্ডবদের নিয়ে। যাদের সবার অভিষেক ঘটেছিলো ২০১০ সালের আগেই। দেশের ক্রিকেটের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই পঞ্চপান্ডবরা। দীর্ঘ
দিন পারফর্ম করে জাতীয় দলে সার্ভিস দেওয়ার রেকর্ড ওই ৫ জনের
দখলেই। নির্বাচক ফারুক আহমেদের যুগে জাতীয় দলে অভিষেক ঘটেছিলো সাকিব-মুশফিক-তামিমদের। ওয়ানডেতে তাদের হাত ধরেই শক্ত অবস্থানে যায় বাংলার ক্রিকেট। নির্বাচকের দায়িত্বে এত বছর পার
করেও নান্নুরা তৈরি করতে পারেনি সাকিব-মুশফিক-তামিমদের বিকল্প। বিপিএল ছাড়াইতো তারা বেরিয়ে
এসেছে। তাহলে কোটি টাকার বিপিএল আয়োজনে করেও কেনো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে নতুন সাকিব-তামিম-মুশফিকদের
!
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭