এডিটর’স মাইন্ড

কোন মিশনে গওহর রিজভী ঢাকায়


প্রকাশ: 27/01/2023


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর ঢাকা আগমন নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল আগামী রাষ্ট্রপতি পদের জন্য তাকে বিবেচনা করা হচ্ছে এজন্যই তাকে ঢাকায় ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে, ড. গওহর রিজভী রাষ্ট্রপতি হচ্ছে না। বরং প্রধানমন্ত্রী অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্টে তাকে ঢাকায় ডেকে পাঠিয়েছে। গওহর রিজভী বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে ঢাকায় নিয়ে এসেছেন। তবে কেন তিনি ঢাকায় এসেছেন এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য তিনি জানাননি। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ একটি কূটনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য একটি প্রচ্ছন্ন চাপ প্রয়োগ করেছে। সর্বশেষ ডোনাল্ড লু এর সফরের পর আওয়ামী লীগ এবং সরকারের পক্ষ থেকে এক ধরনের আত্মতুষ্টি লক্ষ্য করা যায় এবং আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা অযাচিতভাবে মনগড়া কিছু বক্তব্য দিয়ে ডোনাল্ড লু এর সফর নিয়ে তাদের সাফল্য গাঁথা প্রচার করা শুরু করেন। এর প্রেক্ষিতে  মার্কিন দূতাবাস একটি বিবৃতি দিয়ে ডোনাল্ড লু এর সফর সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করেন। যা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বক্তব্য সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। একই রকম পরিস্থিতি হয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের ঢাকা সফরের সময়। সে সময় মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফর নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই একজন নেতা এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন যা মিশেল ব্যাচেলেট বলেনি। এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কিছু বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছে। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কয়েকটি দেশ আগামী নির্বাচন নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সহঅবস্থান ঘোষণা করছে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে কূটনীতিক অঙ্গন সামাল দেওয়ার জন্যই ড. রিজভীকে ডেকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

ঢাকায় এসেই ড. রিজভী ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। বাংলা ইনসাইডারকে তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তিনি ৪৮ টি বিভিন্ন ধরনের বৈঠক করেছেন। উল্লেখ্য যে, কূটনৈতিক মহলে ড. গওহর রিজভীর একটি ভালো গ্রহণযোগ্যতা এবং সুনাম রয়েছে।  আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই বিশেষজ্ঞ কূটনৈতিক পাড়ায় অত্যন্ত শ্রদ্ধার আসনে আসীন। ২০১৪ নির্বাচনের আগে যে রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল তা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ড. গওহর রিজভীর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সময় তিনি কূটনৈতিক মহলে দফায় দফায় বৈঠক করে তাদেরকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, নির্বাচন একটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আছে। তিনি এটিও বুঝেছিলেন যে, সংবিধান সবার ওপরে এবং এই প্রেক্ষিতে ২০১৪ নির্বাচনকে শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গ্রহণ করে। 

ড. গওহর রিজভীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। দীর্ঘদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিনি শিক্ষকতা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রভোষ্টের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ডেমোক্র্যাট শিবিরের বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং উপদেষ্টাদের সাথে তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এখন যখন বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ককে ঠিকঠাক মতো গুছিয়ে নিতে পারছেন না তখন গওহর রিজভীর ডাক পড়েছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করেন। ড. গওহর রিজভীর গ্রহণযোগ্যতা আন্তর্জাতিক সুনাম এবং তার কূটনৈতিক কৌশলকে কাজে লাগানোর জন্য আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গওহর রিজভীকে ঢাকায় এসেছেন বলে জানা গেছে। এখন আগামী দিনে গওহর রিজভী নির্বাচনী কূটনীতি কিভাবে সামাল দেন সেটিই দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭