ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচনের পথে বিএনপি: কর্মীদের শঙ্কা


প্রকাশ: 27/01/2023


Thumbnail

বিএনপির ঢিমেতালে আন্দোলন কোন পথে- এ নিয়ে কর্মীদের মধ্যে সংশয়, সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছে। বিএনপির অধিকাংশ কর্মী মনে করছেন, নেতারা নির্বাচনের ফাঁদে পা দিয়েছেন এবং যে আন্দোলন পরিচালিত হচ্ছে সে আন্দোলন নির্বাচনকে মাথায় রেখে- এরকম গুঞ্জনে বিএনপির মধ্যে অসন্তোষ আবার দানা বেঁধে উঠেছে। 

বিএনপি গত ২৫ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এরপর তারা ৪ ফেব্রুয়ারি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এই দীর্ঘ বিরতি দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভের জন্ম দেয়। নেতারা সরকারের সাথে আপোষ-সমঝোতা করছে এমন গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে কর্মীদের মধ্যে। এই সময় কর্মীদের মধ্যে অনেকেই নয়াপল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে নেতাদেরকে শাসিয়ে আসেন। কেউ কেউ নেতাদেরকে বলেন, এবার যদি তারা আপোষ করে বা আন্দোলন বেগবান না করে তাহলে তাদেরকেই ঘেরাও করা হবে। এরকম পরিস্থিতিতে কর্মসূচি ঘোষণার একদিন পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবার নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হন। কর্মীদের চাপে তিনি মৌন পদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন গতকাল। এর মধ্য দিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং কর্মীদের সঙ্গে নেতাদের দূরত্ব নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, দলের মাঝারি সারির এবং তৃণমূলের কর্মীরা বলে মনে করছে, হাতে সময় ফুরিয়ে আসছে। মার্চ মাস থেকে রোজা শুরু হবে। রোজার পর কুরবানী ঈদের আমেজ, তারপর বন্যা এবং এর পরপরই নির্বাচনী চাদরে দেশ ঢেকে যাবে। ফলে দ্রুত আন্দোলন না করলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা যাবে না এবং সরকারকেও কোণঠাসা করা যাবে না। বিএনপি নির্বাচন বিরোধী নেতারা মনে করেন, আন্দোলনের যে কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে এবং যে কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে তা নির্বাচনকেন্দ্রিক। বিএনপির মধ্যে অনেকে নির্বাচনে মনোনয়ন লাভে ইচ্ছুক তারা নিজ এলাকায় আন্দোলনের নামে এক ধরনের নির্বাচনী সমাবেশ করছেন। গণসংযোগ বাড়িয়েছেন এবং আগামী নির্বাচনকে মাথায় রেখে ভোটারদেরকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছেন। এটি নির্বাচনের বিরুদ্ধ অংশ পছন্দ করছেন না। বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, বিএনপি নেতারা কর্মসূচি গ্রহণ করছে যে ধরনের কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য হবে সত্যি কিন্তু কোন বড় ধরনের আন্দোলন হবে না। বিক্ষোভ সমাবেশ বা বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করে আর যাই হোক সরকার পতন করা যাবেনা। 

অনেকে মনে করেছিলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে বিএনপি লাগাতার কর্মসূচি দেবে। কিন্তু সেরকম কর্মসূচি না দেওয়া নিয়েও বিএনপির মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। অবশ্য বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায়ে ছাড়া তারা কোনো নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু বিএনপি নেতারা আবার এটাও স্বীকার করছেন, বিএনপি আসলে কোন পথে যাবে বা কি ধরনের সিদ্ধান্ত নিবে এটি পুরোপুরি ভাবে নির্ভর করে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর। তিনি ক্ষণে ক্ষণে রং বদলান, ক্ষণে ক্ষণে সিদ্ধান্ত পাল্টান। কাজেই বিএনপি নির্বাচনে যাবে কি যাবে না তার দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয় নয়, একজন ব্যক্তির সিদ্ধান্তের বিষয়। এখন তিনি যদি শেষ পর্যন্ত ম্যানেজ হয়ে যান তাহলে  আন্দোলন আরেকবার ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। বিএনপি কর্মীরা অবশ্য মনে করেন, লন্ডনের সিদ্ধান্ত নয়, বরং বরং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মধ্যেই সরকারের এজেন্টরা লুকিয়ে আছেন যারা বিএনপিকে আন্দোলন নয় বরং নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭