ইনসাইড পলিটিক্স

এবার কি তারা মনোনয়ন পাবেন


প্রকাশ: 27/01/2023


Thumbnail

আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলার পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। দফায় দফায় আওয়ামী লীগ বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় জরিপ করছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি সম্প্রতি দলের সংসদীয় কমিটির বৈঠকে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, যাদের এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা নেই, এলাকায় যারা যান না এবং জনগণের সাথে সম্পর্কহীন তাদেরকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না। 

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, একশ থেকে দেড়শ আসনে আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাল্টাতে পারে এবং আগামী নির্বাচনে বড় ধরনের চমক আসছে। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের ক্ষেত্রে বড় চমক ছিল যে, বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট কেন্দ্রীয় নেতাকে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছিল। এবার সেক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন হবে কিনা বা মনোনয়ন বঞ্চিত ওই সমস্ত নেতারা নতুন করে মনোনয়ন পাবেন কিনা তা নিয়ে নানামুখী আলাপ-আলোচনা চলছে। 

গত বছর আওয়ামী লীগের যে সমস্ত হেভিওয়েট নেতাদের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, এস এম কামাল এবং বিএম মোজাম্মেল। এদের মধ্যে এদের মধ্যে মনোনয়ন বঞ্চিত দুজনকে বিপুলভাবে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। 

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া: মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে গত বছরে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং এই প্রেসিডিয়ামে  অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা মনে করছেন। অন্যদিকে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ১/১১ এর সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিল। এজন্য তিনি রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। সেখান থেকে তিনি প্রথমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, পরে বিএমএ সভাপতি এবং সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। এর ফলে এই দুইজনের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন। যদিও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এখনও চাঁদপুরে তার নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন গণসংযোগ মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছেন, এই দুই জনের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম। কারণ লালবাগে হাজী সেলিমের পরিবর্তে তার পুত্র ইরফান সেলিম ইতোমধ্যেই সেখানে ব্যাপক গণসংযোগ এবং নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। 

জাহাঙ্গীর কবির নানক: জাহাঙ্গীর কবির নানক মোহাম্মদ থেকে ২০১৪ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন। এর আগে ২০০৯ সালেও তিনি একই আসন থেকে বিজয়ী হন। গত নির্বাচনে জাহাঙ্গীর কবির নানককে মনোনয়ন না দিয়ে সাদেক খানবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এবার জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন বলেই বিভিন্ন মহল মনে করছেন। বিশেষ করে গত পাঁচ বছরে তার সাংগঠনিক তৎপরতা এবং দলের জন্য পরিশ্রমের পুরস্কার তিনি পেতে যাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তিনি মোহাম্মদপুর আসনে মনোনয়ন পাবেন নাকি ধানমন্ডিতে নির্বাচন করবেন সেটি এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি। তবে একাধিক সূত্র বলছে, জাহাঙ্গীর কবির নানক আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন এটি মোটামুটি নিশ্চিত।

আবদুর রহমান: আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমানের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হয়নি। আবদুর রহমানের মূল আসন ফরিদপুর-১ যেখানে একজন আমলাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তিনি তার এলাকায় কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। ফরিদপুরে কোনো আসনে আওয়ামী লীগের এই নেতা এবার মনোনয়ন পাবেন কিনা তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মনোনয়নপত্র আবদুর রহমান চেষ্টা করছেন। 

বাহাউদ্দিন নাছিম: বাহাউদ্দিন নাছিম গত নির্বাচনে মাদারীপুর থেকে মনোনয়ন না পাওয়াটা ছিল বিস্ময়কর। তবে এবার নির্বাচনে বাহাউদ্দিন নাছিম মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন এমনটি নিশ্চিত করেছেন বিভিন্ন মহল। কারণ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তার দক্ষতা, কর্মীদের সঙ্গে তার সখ্যতা এবং সততার কারণে তিনি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। তাছাড়া ওই নির্বাচনী এলাকায় কোনো কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে বিভিন্ন রকম বিতর্ক সৃষ্টির প্রেক্ষিতে বাহাউদ্দিন নাছিম এখন লাইমলাইটে এসেছেন বলেও বিভিন্ন মহল মনে করছেন। 

এস এম কামাল: এস এম কামাল খুলনার একটি আসন থেকে নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে একাধিক সূত্র বলছে, এস এম কামালের প্রতি দলের হাইকমান্ডের সহানুভূতি এবং সুস্পষ্ট সমর্থন রয়েছে। আগামী নির্বাচনে তিনি যদি শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পান তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

বিএম মোজাম্মেল: বিএম মোজাম্মেল ২০১৮ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। এবারও তার মনোনয়ন পাওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা আছে বলে কেউ মনে করেন না। তবে শেষ পর্যন্ত মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে আরও পরে। যখন নির্বাচনের সময় আরও কাছাকাছি চলে আসবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭