ইনসাইড টক

‘প্রশাসনের ফাঁদে আমরা কিন্তু খানিকটা ধরা খেয়ে গেছি’


প্রকাশ: 28/01/2023


Thumbnail

“মূলত বিএনপির আন্দোলনটাকে ধারাবাহিকভাবে এস্কেলেট (ধাপে ধাপে বৃদ্ধি) করতে হবে। টাইম বার্সেস ফারেনহাইট (সময় বনাম উত্তাপ বা চাঙ্গা), আমরা যদি গ্রাফে এটি দেখাই। তাহলে আমাদের সময় আছে মাত্র ১১ মাস। আবার নির্বাচনের আগে আছে ১০ মাস। তাহলে আমাদের গড়ে এদিকে ১০ মাস, ওদিকে ১০ মাস। বিএনপি যেভাবে এগুচ্ছিলো, অর্থাৎ ১০ই ডিসেম্বরের যে মহা সমাবেশ, সেখানে এসে বিএনপিকে আনেকটা নাজেহাল করলো প্রশাসন। তখন বিএনপি বনাম প্রশাসন হয়ে গেলো। ১০ই ডিসেম্বর প্রশাসন বলবে, উই উইল গিভ ইউ প্রটেকশন। কিন্তু প্রশাসন বলছে, আমরা তোমাকে এখানে করতে দিব না, ওখানে করতে দিব না, ওখানে করতে দিব। প্রশাসনের ইচ্ছেমাফিক একটি রাজনৈতিক দল কখনও চলতে পারে না। প্রশাসন একটি রাজনৈতিক দলের ইচ্ছমাফিক চলবে। অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি, ঘোড়ায় গাড়ি টানবে, গাড়িকে ঘোড়া টানবে না। আমরা বলবো, পল্টনে করবো, প্রশাসন বলবে, উই উইল গিভ ইউ দ্য সিকিউরিটি, কমফোর্ট। কিন্তু প্রশাসন বলছে, আমরা তোমাকে পল্টনে করতে দেব না। এতে কি হলো? ঘোড়া গাড়ি টানলো না, গাড়ি ঘোড়া টানলো।”- বলছিলেন বিএনপি দলীয় সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং বিএনপির বর্তমান নিবার্হী সদস্য ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন।                

একের পর বিএনপি সভা-সমাবেশসহ যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করছে, ‘পদযাত্রা’  ঘোষণা , এর আগে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বিএনপি, ঢাকায় এসে থমকে দাঁড়িয়েছে বিএনপির আন্দোলন- এছাড়াও বিএনপির ১০ দফা এবং রাষ্ট্র গঠনে রূপরেখার ২৭ দফা ঘোষণা এবং বিএনপির আন্দোলনের পরবর্তী বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা, পদক্ষেপ- এসব নিয়েই বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা হয়েছে বিএনপি দলীয় সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং বিএনপির বর্তমান নিবার্হী সদস্য ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলনের সঙ্গে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপকালে জানিয়েছেন বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি, পরিকল্পনা এবং প্রাপ্তির কথা। পাঠকদের জন্য  ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন- এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার- এর নিজস্ব প্রতিবেদক আল মাসুদ নয়ন। আজ প্রকাশ হচ্ছে এই সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব।

ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ একটি খুব কঠিন পলিটিক্স করলো। প্রশাসনের সাথে আমাদের একটি বৈরী সম্পর্ক সৃষ্টি করার একটি ট্রেপ (ফাঁদ) করলো। এই ফাঁদে আমরা কিন্তু খানিকটা ধরা খেয়ে গেছি, প্রশাসনের ফাঁদে। আওয়ামী লীগ চাচ্ছে প্রশাসন বনাম বিএনপি হয়ে যাক, আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি না। এই জায়গাটায় খুব চাণক্য পলিটিক্স করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা পল্টনে মিটিং করবো, তারা জনগণের ভোগান্তি হবে বিবেচনায় পল্টনে মিটিং করতে দিবে না। এটা আদৌ কোনো সত্য কথা নয়। যেখানেই মিটিং করুক, জনগণের ভোগান্তি হবেই। চীন-মৈত্রীর মাঠেই করুক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই করুক, যেখানেই করুক, জনগণের ভোগান্তি হবেই। আওয়ামী লীগ একটি খোরা যুক্তি খাড়া করলো, তারা পল্টনে সমাবেশ করতে দেবে না। আমরা পল্টন যদি দখল করতাম সমাবেশের জন্য, ৩/৪ ঘণ্টা সমাবেশে থাকতাম। তারা স্রেফ বলতে পারতো ৩ ঘণ্টার জন্য আপনারা পল্টনের রাস্তা ব্যবহার করবেন, ৩ ঘন্টার এক মিনিট বেশিও আপনার পল্টনের রাস্তা ব্যবহার করতে পারবেন না। হয়ে যেত এবং তারা আমাদেরকে ৩ ঘণ্টার জন্য সিকিউরিটি দিতো। 

তিনি বলেন, কিন্তু তারা বললো, পল্টনে করা যাবে না। প্রশাসনের এই বিমাতাসুলভ আচরণ আওয়ামী লীগ এটা করালো চালাকি করে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের সামনে যে আওয়ামী লীগ অফিস, ওটাতো চিরতরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে যখন তাদের সমাবেশ হয়, তখন সেটাও তো বন্ধ হয়েই যায়। কিংবা শেরে বাংলা নগরে, চীন-মৈত্রীর মাঠে সমাবেশ করলে, সেটাও কিন্তু বন্ধ হয়েই যায়। আমরা তো শুধু তিন ঘন্টার জন্য চেয়েছিলাম। সারা বাংলাদেশে ৯টি সমাবেশ করে ১০ম সমাবেশে যে মমেন্টামটা  আমাদের গ্রো করেছিলো, যে গতিটা হয়েছিলো, প্রশাসনের সঙ্গে বৈরী ভাব করে সেটাকে তারা বাধাগ্রস্থ করলো। যেহেতু আমরা আস্তে আস্তে, আন্দোলনটা ধাপে ধাপে ওপরে উঠতেছিল, তারা আমাদের গতিটাকে প্রজেক্টাইলের মতো, অর্থাৎ একটা ঢিল ছুড়লে, এটা আকাশে উঠে আবার পড়তে থাকে, এটা পড়তে থাকলো নিচের দিকে। সে জায়গাটাতে আমাদেরকে খানিকটা পিছিয়ে দিয়েছে। তাহলে এখন আমাদের আন্দোলনে গতিপ্রকৃতি কি হবে? 

ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন বলেন, আন্দোলনটাকে তুঙ্গে ওঠানো, আমাদের দলের যে পরিকল্পনাটা ছিল, ২০২২ সালের আমাদের দলীয় সালতামামিতে, আমরা সম্পূর্ণভাবে সফল হয়েছি। আমাদের রাজনৈতিক দিকগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা, এটা আমরা সফল হয়েছি। কারণ ডিসেম্বরের ১০ তারিখে সমাবেশকে তারা প্রশাসন দ্বারা খানিকটা ব্যর্থ করতে পারলেও, মূলত আমরা ৯টি সমাবেশে প্রমাণ করেছি, সারা বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের মধ্যে আমাদের একটি অবস্থান আমরা সৃষ্টি করতে পেরেছি এবং আওয়াজ দিতে পেরেছি, যেটা ২০০৯ থেকে শুরু করে ২০১৪, ২০১৪ থেকে শুরু করে ২০১৮ এবং ২০১৮ থেকে শুরু করে বর্তমান, এই ১৪ বছরে সেরা আন্দোলন আমরা ২০২২-এ দেখিয়েছি। এতে এই জিনসিটাই প্রতয়ীমান হয়, বিএনপির যে ভোট ব্যাংক, সাপোর্ট ব্যাংক, জোট ব্যাংক, যেটি আমাদের রয়েছে, এটি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, এটি একটি কার্যকর।আমাদের সক্ষমতা আছে আন্দোলন করার, ২০২২ সালের সালতামামিতে এটা আমরা দেখতে পেয়েছি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭