চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. গোলাম ইয়াজদানী নিজ কক্ষে ঠিকাদার কর্তৃক হামলার শিকার হয়েছেন। এই সময় তার কক্ষেও ভাঙচুর করা হয়।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকাল ৪টার দিকে টাইগারপাসের সিটি কর্পোরেশন ভবনের চতুর্থ তলায় এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরোনো নগর ভবনে সিটি কর্পোরেশনের সাধারণ সভা ছিল। সভা শেষে টাইগারপাসের অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়ে নিজের দপ্তরে আসেন প্রকল্প পরিচালক গোলাম ইয়াজদানী। এরপর তার কক্ষে প্রবেশ করেন ১৫ থেকে ২০ জন ঠিকাদার। সিটি কর্পোরেশনের দরপত্র প্রক্রিয়ায় কাজ না পেয়ে প্রকল্প পরিচালকে তারা মারধর করেন। এই সময় তার নামফলক, টেবিলের কাচ ভেঙে ফেলেন ঠিকাদাররা।
ঠিকাদার সাহাবুদ্দিন, লিটন দাশ, হাবিব ও জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরম্যধ্যে লিটন দাশ ও জসিম উদ্দিন মেয়রপন্থী ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত।
একাধিক ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে লটারির মাধ্যমে টেন্ডার করা হতো। সেখানে ভাগ-বাটোয়ারার মাধ্যমে কাজ বণ্টন হতো। ভাগের টাকা পেত প্রকৌশলীসহ সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নতুন প্রকল্প পরিচালক গোলাম ইয়াজদানী আসার পর থেকে ইজিপির (ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) মাধ্যমে কাজ বণ্টন হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম করার সুযোগ নেই। অনিয়ম করতে না পেরে খোদ সিটি কর্পোরেশনের শীর্ষ কর্তা ও প্রকল্প পরিচালকের ওপর ক্ষুদ্ধ তারা। এই কারণেই প্রকল্প পরিচালকের ওপর হামলা হয়েছে।
গোলাম ইয়াজদানী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়নে নেওয়া আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পরিচালক হিসেবে গত বছরের ১৪ আগস্ট তাকে নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ।
এই বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্রকল্প পরিচালককে মারধর করেছে, চিল্লাচিল্লি করেছে। টিভি, গ্লাস ভেঙে ফেলেছে। আমরা অবশ্যই অ্যাকশনে যাচ্ছি। সিসি ক্যামেরার পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে কারা ছিলেন, ছবি বের করছি। যে ছেলেটার নেতৃত্বে এসেছে তার নাম সাহাবুদ্দিন। জড়িতরা সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদার হলে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। সব বিভাগে চিঠি যাবে , যাতে কাজ না পায় তারা। একজন অফিসারকে নিজের চেম্বারে এসে গায়ে হাত তোলার যে স্পর্ধা দেখিয়েছে,এতে আমিসহ সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট সকলে ক্ষুব্ধ। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করবো।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন,ঘটনার পর পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে।তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।