ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রুপি পতনের পর বাড়লো জ্বালানির দাম, অলীক স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান


প্রকাশ: 30/01/2023


Thumbnail

একেবারে অর্থনৈতিক দিক থেকে বিপর্যস্ত অবস্থা পাকিস্তানে। ডলারের নিরিখে তাদের মুদ্রার দাম পড়েই চলেছে। জ্বালানির অভাব দেখা দিয়েছে বলেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে। আর সেই অবস্থাতেই এবার জ্বালানি তেল পেট্রোল, ডিজেলের দাম ৩৫ টাকা করে বাড়িয়ে দিল সরকার।

রবিবার টেলিভিশন বার্তায় জানিইয়ে দেয়া হয়, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ৩৫ টাকা করে বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেরোসিন তেল ও লাইট ডিজেল অয়েলের দাম ১৮ টাকা করে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। রবিবার বেলা ১১টা থেকে এই নতুন দাম কার্যকর করা হয়। দাম বৃদ্ধির জেরে পেট্রোলের নতুন দাম হচ্ছে ২৪৯.৮০ প্রতি লিটার, হাই স্পিড ডিজেলের দাম ২৬২.৮০ কেরোসিন তেলের দাম ১৮৯.৮৩, লাইট ডিজেল তেলের দাম ১৮৭ প্রতি লিটার।

বৈদেশিক মুদ্রার তহবিল কমতে কমতে ৩৬৮ কোটি ডলারে নেমেছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে বড়জোর আর তিন সপ্তাহ বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে পারবে পাকিস্তান। এখনই আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ) ১০০ কোটি ডলার অনুদান না দিলে বিপাকে পড়বে তারা। বন্ধ হতে পারে জ্বালানি আমদানিও। ইতিমধ্যে খাদ্য সংকট ভোগাচ্ছে সে দেশকে। আটার দাম আকাশছোঁয়া। এদিকে গত সপ্তাহেই আইএমএফ যে সমস্ত শর্ত আরোপ করছে সেই তেঁতো ওষুধ খেতে তৈরি থাকার কথা জানায় পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এর দল ও সরকার। এদিকে ২০১৯ সালে ইমরান খানের জমানাতেই পাকিস্তান ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের আইএমএফ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল। গত বছর সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবার ১.১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার ব্যাপারে আইএমএফ ও সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে।

এদিকে ৩১ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আইএমএফের টিম ইসলামাবাদে আসতে পারে বলে খবর। সহায়তা সংক্রান্ত কী কী প্যাকেজ দেওয়া হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াতে শুরু করেছে যে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ রুপি করে বাড়তে পারে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাজারে কোথাও কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে কি না সেটা দেখা হচ্ছে। পাক মন্ত্রী জানিয়েছেন, পাকিস্তানের রুপির দাম গত সপ্তাহে কমে গিয়েছিল। তবে এখন আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রল, ডিজেলের দাম ১১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।

এই অবস্থায় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে সামনের মাসগুলোতে ১ হাজার কোটি ডলার অর্থ সহায়তা পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান। প্রশ্ন উঠেছে- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদার এই অনুদানে দেশটি অর্থনৈতিক কষাঘাত থেকে পরিত্রাণ পাবে, নাকি আবারও ঋণ খেলাপি হয়ে বিশ্বে তামাশার খোরাক হয়েই থাকবে।

গ্লোবাল ক্রাইসিস রিস্ক রিপোর্টে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম আশঙ্কা করছে, পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠানগুলো দুই বছরের মধ্যে নিশ্চল হয়ে যাবে। ধনীরা বিদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যাবে এবং দরিদ্রদের ঘাড়ে দেশের পুঞ্জীভুত ঋণ পরিশোধের দায় পড়বে। দেশটির কোষাগারও ইতোমধ্যে খালি হয়ে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মৃত্যুর মুখে এবং বাকি জাতিকে চরম সংকটে ফেলে দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেবাজ শরীফ জেনেভায় আন্তর্জাতিক দাতাদের সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন- প্রতিটি রুপি বন্যার্তদের জন্য ব্যয় করা হবে; যেন এই অর্থ কোনো না কোনোভাবে জনগণের মধ্যে তার সম্মান আর সুনাম ফিরিয়ে আনে।

যাই হোক, সিন্ধুর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের ধুঁকতে থাকা কৃষকদের জন্য বিশ্বাস করা কঠিন যে, এই সহায়তা তহবিলের এক রুপিও তারা পাবে।

বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, ক্ষমতাসীনরা ইতোমধ্যেই এ তহবিলের নামে জনগণকে দলের অনুগত করার চেষ্টা করছে। সেখানে কেবল প্রতিশ্রুতিই দেওয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে জনগণকে বোকা বানানো হচ্ছে। ক্ষমতাসীনরা তাদেরকে কেবল অলীক স্বপ্নই দেখাচ্ছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭