ইনসাইড পলিটিক্স

সপরিবারে সৌদি আরবে পালাতে চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া


প্রকাশ: 30/01/2023


Thumbnail

এক-এগারো সময় বেগম খালেদা জিয়া তার দুই পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনি নিয়ে সৌদি আরবে পালাতে চেয়েছিলেন। এই নিয়ে তৎকালীন সরকারের সাথে তার সমঝোতাও হয়েছিল। কিন্তু তারেক জিয়াকে ছাড়ার ব্যাপারে আপত্তি জানায় এক-এগারো সরকার। যে কারণে শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়ার সৌদি পলায়ন ভেস্তে যায়। আমরা মহিউদ্দিন আহমদের এক-এগারো বইয়ে এ সম্পর্কে বিস্তাবিত তথ্য দেখতে পাই। কি উল্লেখ করা আছে মহিউদ্দিন আহমদের এক-এগারো বইয়ে সে সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হলো;

এপ্রিলের (২০০৭) প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় কানাঘুষা শোনা যাচ্ছিল যে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশত্যাগ করবেন। ৮ মার্চ বড় ছেলে তারেক রহমান গ্রেপ্তার হয়ে যাওয়ার পর তিনি মুষড়ে পড়েন। তাঁকে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে—বিভিন্ন মহল থেকে এমন কথা উঠলে তিনি বিষয়টি মোটামুটি মেনে নেন। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো গ্রেপ্তার হতে পারেন—এমন আশঙ্কাও ছিল। বিএনপির কয়েকজন নেতাকে তিনি বলেছেন, ছেলেরা অভিযুক্ত হবে, দলের নেতা-কর্মীরা জেলে থাকবে, আর তিনি বিদেশে বসে থাকবেন—এর কোনো মানে হয় না।

১৮ এপ্রিল গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, খালেদা জিয়া ছোট ছেলে আরাফাত ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সৌদি আরব যাচ্ছেন। এর আগেই আরাফাতকে গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছিল। খালেদা বিদেশে যেতে রাজি হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দলের অনেকেই মনে করেন, খালেদাকে বিদেশে পাঠাতে চাপ সৃষ্টি করতেই আরাফাতকে আটক করা হয়েছিল। খালেদা স্বেচ্ছায় গেলে সৌদি সরকার তাঁকে গ্রহণ করতে রাজি আছে বলে আগে থেকে আলোচনা ছিল। 

২১ এপ্রিল তারেক রহমানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। যাওয়ার পথে তাকে মা ও স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়। ২২ এপ্রিল রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) হান্নান শাহ জানিয়ে দেন, "খালেদা জিয়া সৌদি আরবে যাবেন না। তিনি যেকোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে তৈরি, তবু দেশ ছাড়বেন না।' এদিকে তাঁর সৌদি আরবে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তিনি ভিসা পাননি। পরে ঠিক হয়, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে কয়েক সপ্তাহের জন্য তিনি সিঙ্গাপুর যাবেন। সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও ছেলে আরাফাতকে তাঁর সঙ্গে সিঙ্গাপুর যাওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার। বরং তাঁর বিরুদ্ধে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার চাঁদাবাজির একটি মামলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া তাঁর সিঙ্গাপুর যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে দেন।

শোনা যায় যে, পরিবারের সবাই সৌদি আরবের ভিসা পেলেও খালেদা জিয়াকে ভিসা দেওয়া হয়নি। পরে তাঁকে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোনো দেশে পাঠানোর চেষ্টা হলেও সেটি সফল হয়নি।

তথ্য সূত্র: এক-এগারো, বাংলাদেশ ২০০৭-২০০৮, মহিউদ্দিন আহমদ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭