ইনসাইড গ্রাউন্ড

জনসন চার্লসের সেঞ্চুরিতে প্লে-অফে কুমিল্লা


প্রকাশ: 31/01/2023


Thumbnail

শুরুটা করেছিলেন তামিম ইকবাল ও শাই হোপ। আর শেষটা হয়েছে জনসন চার্লস ও মোহাম্মাদ রিজওয়ানের হাত ধরে। বিপিএলে সিলেট পর্বের শেষ ম্যাচে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছে দুই দল খুলনা টাইগার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। খুলনার ২১০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জয় পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। টানা ৬ষ্ঠ জয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সেই সাথে বিপিএলের ইতিহাসে সবেচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডও গড়েছে ইমরুল কায়েসের দল।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নামে খুলনা টাইগার্স। ১৩ রানে মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেট তুলে নেন নাসিম শাহ। শুরু সাফল্যের পর খুলনার উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে কুমিল্লার বোলাররা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাওয়ার প্লেতে হাত খুলে খেলতে দেয়নি খুলনার ব্যাটসম্যানদের। জয়ের বিদায়ের পর দেখেশুনে খেলতে থাকেন তামিম ইকবাল ও শাই হোপ। পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে ১ উইকেটে ৩৭ রান তোলে খুলনা।

তবে এরপরই কুমিল্লার প্রতিরোধ ভেঙে তাণ্ডব চালাতে থাকেন দুই ব্যাটার। তামিম ইকবাল কিছুটা ধরে খেললেও ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান শাই হোপ ছিলেন শুরু থেকেই মারমুখী। প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর রীতিমত তান্ডব চালান তিনি। আরেক প্রান্ত থেকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন তামিম। দুজনের দৃঢ়তায় প্রথম ১০ ওভার শেষে ৮৫ রান তোলে খুলনা টাইগার্স। অর্ধশতক তুলে নেন শাই হোপ।

ইনিংস গড়ানোর সাথে সাথে স্বরূপে ফেরেন তামিমও। শাই হোপের সাথে সমানতালে রান তুলতে থাকেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। হাফসেঞ্চুরি। তুলে নেন বিপিএলের চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি। ম্যাচের শেষ ১০ ওভারে কুমিল্লার বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দিয়ে স্কোরবোর্ডে ১২৫ রান যোগ করেন তামিম ও শাই হোপ।

দ্বিতীয় উইকেটে তাদের ১০৪ বলে ১৮৪ রানের জুটিতে রানের পাহাড় গড়ে খুলনা টাইগার্স। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন তামিম ও হোপ দুজনেই। ২০তম ওভারের প্রথম বলে মোসাদ্দেক উঠিয়ে খেলতে গিয়ে খুশদীলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ৯৫ রানে আউট হন তামিম ইকবাল। সেঞ্চুরি থেকে হাতছোঁয়া দুরত্বে গিয়ে থামে তার টর্নেডো ইনিংস। ৬১ বল থেকে ১১টি চার ও ৪ ছয়ে সাজান তার ইনিংস। সেঞ্চুরি পেতে পারতেন শাই হোপও। তবে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে থাকায় সে সুযোগ পাননি হোপ। ৫৫ বলে ৯১ রানে অপরাজিত থাকেন এই ক্যারিবিয়ান। ৪ বলে ১২ রানের ক্যামিও ইনিংস আসে আজম খানের ব্যাট থেকে।

তামিম এবং হোপের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে বিশাল সংগ্রহ দাড় করায় খুলনা টাইগার্স। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ দাড়ায় ২ উইকেটে ২১০ রান। যা বিপিএলের চলতি আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

জবাব দিতে নেমে কুমিল্লার শুরুটা অবশ্য ভাল হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে বিপিএলে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শফিকুল ইসলামের বলে ডান হাতে আঘাত পান লিটন দাস। ব্যাথায় কাতরে উঠেন লিটন। ফিজিওর সাথে তৎক্ষণাৎ মাঠ ছেড়ে যান তিনি। দলের সেরা ব্যাটসম্যান মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার পর ২২ রানে ইমরুল কায়েসের উইকেট হারায় কুমিল্লা।

তবে এরপরের গল্পটা লিখেছেন মোহাম্মাদ রিজওয়ান ও জনসন চার্লস। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় সময়ের দাবি মেটানো ব্যাটিং করেন দুজনে। ৩৪ বলে অর্ধশতক তুলে নেন রিজওয়ান। খুলনার বোলারদের তুলোধুনা করে ১২২ রানের জুটি গড়েন তারা। মাঠের চারপাশে শটের ফুলঝুঁড়ি ছুটিয়ে কুমিল্লাকে কক্ষপথে রাখেন তারা। রান রেটের সাথে পাল্লা দিয়ে দলেক টেনে নিতে থাকেন।

তবে ১৪তম ওভারে এসে কাঙ্খিত ব্রেক থ্রু'র দেখা পায় খুলনা টাইগার্স। নাসুম আহমেদের বল মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে খেলতে গিয়ে আউট হন রিজওয়ান। লাফিয়ে উঠে দারুণ এক ক্যাচ নেন শাই হোপ। ৩৯ বলে ৭৩ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলেন রিজওয়ান। তবে তাতে কুমিল্লার রানের গতি কমেনি। পুরো টুর্নামেন্টে খুব একটা কিছু করতে না পারলেও, এ ম্যাচে জ্বলে উঠেন জনসন চার্লস। তুলে নেন অর্ধশতক।

নাহিদুলের করা ১৫তম ওভারে ৪টি ছয়ে রানের ব্যবধান কমান জনসন চার্লস। পরের ওভারেও সাইফুদ্দিনের উপর তান্ডব জারি রাখেন তিনি। ৫৩ বল থেকে তুলে নেন সেঞ্চুরি। যা বিপিএলে চলতি আসরের চতুর্থ শতক। জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে খুশদীল শাহ আউট হলেও, স্বদেশী মার্ক ডিয়ালের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ৭ উইকেটে দলের জয় নিশ্চিত করেন জনসন চার্লস। ৫৬ বলে ১১টি ছয় ও ৫ চারে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। সেই সাথে বিপিএলের নবম আসরে সবচেয়ে বেশি ছয় হাঁকানোর তালিকার শীর্ষেও উঠে আসেন এই ক্যারিবিয়ান।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭