ইনসাইড বাংলাদেশ

হিরো আলমই আসল বিজয়ী


প্রকাশ: 01/02/2023


Thumbnail

হিরো আলম, চেহারা অসুন্দর, গান গাইতে পারেন না ঠিকমত কিন্তু তারপরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ট্রল হতে হতে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন। শুধু বিখ্যাতই হননি, হিরো আলম এবার নির্বাচনও করেছেন এবং নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাসদের প্রার্থীর কাছে এক হাজারের কম ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু রাজনীতির শূন্য এই দেশে হিরো আলমের উত্থান রাজনীতির জন্য একটি অশনিসংকেত বটে। যখন দেশের অন্যতম প্রধান একটি রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে, তখন রাজনীতিতে একটি প্রতিযোগিতাহীন অসুস্থ শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সেই শূন্যতায় হিরো আলম প্রার্থী হয়েছেন। 

হিরো আলমের রাজনীতি করার কথা নয়। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাপিয়ে বেড়ান। কিন্তু যখন নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন, সেই নির্বাচনও করতে হয়েছে তাকে নানা রকম চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে। প্রথমে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল। মনোনয়নপত্র বাতিলের পর তিনি আদালতে চ্যালেঞ্জ করে মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পেয়েছেন এবং নির্বাচন করেছেন। নির্বাচন করে তিনি চমক দেখিয়েছেন। কেউ মনে করতেই পারেন হিরো আলমই আসলে বিজয়ী। আসলে হিরো আলম বিজয়ী নয়, আসলে পরাজিত হয়েছে রাজনীতি। 

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে রাজনীতিতে এক ধরনের অস্বস্তি এবং অস্থিরতা চলছে। এই রাজনীতিতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তার কারণে জনগণ এখন ভোটের উৎসব থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছেন। ভোট এখন আর উৎসবমুখর পরিবেশে হয়না। সর্বশেষ যে ৬টি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো সেখানেও ১৫ থেকে ২৫ শতাংশের মধ্যে ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে। 

বগুড়া-৪ আসনে যেখানে হিরো আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, সেখানে ভোটের হিসাব ১০ শতাংশের কিছু বেশি। ৯০ শতাংশ মানুষই ভোট বিমুখ ছিলেন। হিরো আলমকে যে প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ ভোট দিয়েছেন তারা আসলে হিরো আলমকে ভোট দেননি, তারা রাজনীতিকে একটি রঙ্গ তামাশা এবং প্রহসন হিসেবে মনে করেছেন। আর এই প্রহসনের বার্তাটি তারা ভোট দিয়ে জানান দিয়েছেন। 

হিরো আলম যদি এমপি হতো তাহলে কি হতো? পৃথিবীতে কৌতুক অভিনেতা, খলনায়ক এবং হাস্যরসাত্মক ব্যক্তিরা মন্ত্রী হন, এমপি হন। এমনকি ইউক্রেনের জেলেনস্কি একসময় কৌতুক অভিনেতাই ছিলেন। কাজেই হিরো আলমের এমপি হওয়াটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু কথা হলো রাজনীতি যদি রাজনীতির জায়গায় না থাকে তাহলে হিরো আলমদের উত্থান ঘটবেই। হিরো আলমের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক যেটি ছিল ভোটের ফলাফলের পর তিনি প্রচলিত রাজনীতিবিদদের মত নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ আনেননি, ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ করেননি। বরং তিনি বলেছেন, আমি আবার আসব। ভোটারদেরকে আশ্বস্ত করেছেন, আপনারা হতাশ হবেন না। 

বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি রাজনীতিবিদরা আস্তে আস্তে নির্বাসিত হবেন নিজেদের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের জন্য? রাজনীতিতে কি হিরো আলমদের উত্থান ঘটবে?  সেই প্রশ্নের উত্তর পরে পাওয়া যাবে। তবে এই নির্বাচনে যে হিরো আলম বিজয়ী হয়েছে তা বলাই যায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭