ইনসাইড পলিটিক্স

ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ব্যর্থ করতে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দিয়েছে: ফখরুল


প্রকাশ: 02/02/2023


Thumbnail

দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ব্যর্থ করতে সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সরকার একটি নতজানু ও ব্যর্থ জাতি তৈরির জন্য পরিকল্পিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা আমাদের শেকড়ে টান দিয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ব্যর্থ করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় হাত দিয়েছে। কেউ কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করছে না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার যা খুশি তাই করছে। দিনকে রাত আর রাতকে দিন বলছে। মুরগির ডিমকে অশ্ব ডিম্ব বলছে। আমরা যেন কেউ বেঁচে নেই। আমাদেরকে জেগে উঠতেই হবে। আমার স্বকীয়তা ও ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষার জন্য জেগে উঠতেই হবে। ভুলে ভরা পাঠ্যবই অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।  

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। 

‘অপরিণামদর্শী কারিকুলাম ও মানহীন পাঠ্যপুস্তক : দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধ্বংসের নীলনকশা’- শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি। এতে সহযোগিতা করে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।

ফখরুল বলেন, এক দেশে দুই রকমের শিক্ষা নীতি কীভাবে হয়? তার ফলে, দুটা সম্প্রদায় তৈরি হয়। যারা বিত্তশালী তারা কেউ নিজেদের ছেলে-মেয়েদের সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষা দেয় না। সবাই ইংরেজি মাধ্যমে পড়ান। এরপর ছেলে-মেয়েদের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। এই যে দ্বৈত শিক্ষানীতি, যারা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ালেখা করে তারা দেশের সব বড় জায়গা নিয়ন্ত্রণ করে। আর না হলে বিদেশে চলে যায়। আর যাদের অর্থ নেই তাদের জন্য প্রাইমারি স্কুল, হাই স্কুল, যেগুলো কোনোরকমে টিকে আছে। 

বাঙালির আলাদা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য-পরিচয় আছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, সত্যকে সত্য ও মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে ভয় কেন? আজকে শিশুদের ভ্রান্ত ধারণা ও বিকৃত ইতিহাস শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। আজকে আমাদের পরিচয় ভুলিয়ে দিতে চায়। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে জেগে উঠতে হবে। এটা জাতির অস্তিত্বের লড়াই। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাই। 

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে সরকার তার যে কাজ সেটা করে যাচ্ছে। সেটা হচ্ছে আপনাকে পরিচয়হীন, একেবারে নতজানু, একটা ব্যর্থ জাতি ও রাষ্ট্রে পরিণত করা, সেই কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে এতো বড় ভয়াবহ কাজ হচ্ছে আমরা কয়জন ছাড়া বাইরে কেউ প্রতিবাদ করছে না। তথাকথিত সুশীল সমাজ, যারা বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরেন, তাদের মুখে একটা কথাও বের হচ্ছে না। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের যেসব সন্তানরা প্রাথমিক শিক্ষা নেয় সেটা তার সারাজীবনের জন্য। এই শিক্ষাকে পুঁজি করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। প্রাথমিক বিদ্যালয় হলো শিক্ষার মূল। দুর্ভাগ্যবশত এখনো আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। যদিও পাকিস্তান আমলেও এ ধরনের পরীক্ষা ও বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছিল। শুধু বারবার পরীক্ষা ও শিক্ষা নীতি হচ্ছে। এখনও সেটা চলছে। 

তিনি বলেন, আজকে পাঠ্যপুস্তকে অজস্র ভুলে ভরা ইতিহাস ও তথ্য সংযোজন করা হয়েছে। আর সেগুলোই নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের শেখানো হচ্ছে। যারা কারিকুলাম তৈরি করে কেউ কিন্তু ভাবে না যে ছেলেমেয়েরা কী শিখছে? জাতির মূল জায়গা হলো শিক্ষা। আর সেখানেই হাত দিয়েছে সরকার। 

ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান ও হেলেন জেরিন খানের পরিচালনায় সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম ও অধ্যাপক ড. শাহ শামীম আহমেদ, পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী প্রমুখ। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭