ইনসাইড পলিটিক্স

‘উকিল আব্দুস সাত্তারকে ধরে রাখতে না পারা বিএনপির ব্যর্থতা’


প্রকাশ: 02/02/2023


Thumbnail

উকিল আব্দুস সাত্তারকে ধরে রাখতে না পারাকে বিএনপির বড় ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। 

বিএনপির মহাসচিবের মন্তব্য ‘মাগুরার নির্বাচনকেও হার মানিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাচন’ এ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সেখানে যেহেতু আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিল না, সেহেতু আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা যে কাউকেই পছন্দ করতে পারে। সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার। সেখানে কারো জন্য কাজ করার দলীয় কোনো নির্দেশনা ছিল না। যে যার পছন্দ মতো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসনে আমরা প্রার্থী দেইনি সুতরাং সেখানে উকিল আব্দুস সাত্তার সাহেবকে বিএনপি ধরে রাখতে পারেনি, এটা তো বিএনপিরই বড় ব্যর্থতা।’

বৃহস্পতিবার (২ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে ‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। এ সময় প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মুন্সী জালাল উদ্দীন, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার খালেদা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

গতকাল বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত ৬ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মাত্র ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিলাম এবং সেই সব আসনে আমাদের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে জয়লাভ করেছে এবং নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দর হয়েছে। উপনির্বাচনে সবসময় ভোটার উপস্থিতি কম থাকে। যেখানে এক বছরের কম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হবে, সেই বিবেচনায় এই উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুব কম নয় এবং অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে নির্বাচন হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ শতাংশ মানুষ ভোটার হয় না। আবার যারা ভোটার হয় সেখান থেকে অর্ধেক উপস্থিত হয়। সার্বিকভাবে ২৫ শতাংশ ভোট পড়ে সেখানে। সে হিসেবে যেহেতু উপনির্বাচনে এক বছরে কম সময়ের জন্য এমপি নির্বাচিত হবে, সে হিসেবে ভালো হয়েছে।’

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকারকে ধাক্কা মারতে গিয়ে বিএনপির যে কোমর ভেঙ্গে গেছে, তাদের বর্তমান কর্মকান্ডের মাধ্যমেই তার পরিস্ফুটন হয়েছে। কিন্তু বিএনপির ষড়যন্ত্র থেমে নেই। তাদের ষড়যন্ত্র সবসময় ছিল, এখনও আছে।’ 

 গত ডিসেম্বরের পর বিএনপির কর্মচাঞ্চল্য নেই -এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল ডিসেম্বর মাসেই সরকারকে বিদায় করে দেবে, সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেবে। কিন্তু সরকারকে ধাক্কা দিতে গিয়ে তারা নিজেরাই পড়ে গেছে। এরপর থেকে তারা এখন হাঁটা শুরু করেছে। বিএনপি অনুধাবন করতে পেরেছে যে, সরকারকে ধাক্কা মারলে লাভ হয় না। সরকারের ভিত, আওয়ামী লীগের ভিত অনেক গভীরে প্রোথিত। আশা করবো বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যেই থাকবে, গণতন্ত্রের পথেই হাঁটবে।’ 

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ২০০৮ সালে নির্বাচনে ২৯টি আসন পেয়েছিল, পরে উপনির্বাচনে ৩০টি অতিক্রম করেছে। ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করেছিল। ২০১৮ সালে ৬টি আসন পেয়েছিল। আগামী নির্বাচনেও তাদের সম্ভাবনা যে নাই সেটি তারা জানে, জানে বলেই তারা নির্বাচন নিয়ে, নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এবং মানুষকে নির্বাচন বিমুখ করার জন্য নানা ধরণের কথাবার্তা বলছে।’ 


এ সময় তথ্য ও সমবপ্রচারমন্ত্রী‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ওপর ৪৫টি ফিচারের সংকলন নিয়ে তথ্য অধিদফতর প্রকাশিত ‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ গ্রন্থের মোড়কেউন্মোচন করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় দিনে ‘উন্নয়নের নব দিগন্ত’ বইটি প্রকাশ করার জন্য আমি তথ্য অধিদফতরকে ধন্যবাদ জানাই। গত ১৪ বছরে আমাদের দেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আমরা এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি বিধায় আমাদের কাছে পরিবর্তনটা এতো বেশি অনুভূত হয় না। একটু পেছনে ফিরে তাকালে অনুধাবন করতে পারি- আমরা কোথায় ছিলাম এখন কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি।’ 

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আজ থেকে ১৪ বছর আগে ছিলো ৪০ শতাংশ মানুষ আর আজকে শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। ১৪ বছর আগে ৪১ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করতো, এখন তা কমে ২০ শতাংশ এবং অতি দরিদ্র ১০ শতাংশ। ১৪ বছর আগে আমরা সব সূচকে পাকিস্তান থেকে পেছনে ছিলাম, ভারত থেকেও পেছনে ছিলাম। এখন সব সূচকে পাকিস্তানকে বেশ আগেই অতিক্রম করেছি, বেশিরভাগ সূচকে ভারতকেও অতিক্রম করেছি। ১৪ বছর আগে আমরা পৃথিবীর ৬০তম অর্থনীতির দেশ ছিলাম, এখন আমরা ৩৫তম। আমরা অর্থনীতির আকারে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরকেও পেছনে ফেলেছি। বাংলাদেশ এখন একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমালোচনা, আলোচনার মধ্যেও দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে সেই বিষয়টি মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্যে আমি গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানাই।’



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭