ইনসাইড আর্টিকেল

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/02/2018


Thumbnail

জমিদার বাড়ির প্রধান দরজা দিয়ে ঢুকতেই বিশাল আম বাগান। আম গাছের গোঁড়ায় চারদিক দিয়ে পাকা শান বাঁধানো। জমিদার বাড়ির সামনের সুবিশাল একটি মাঠ। মাঠের সামনে বেশ বড় সেই পুরনো আমলের মনোরম একটি দীঘি। শান বাঁধানো ঘাটের সঙ্গে বসার জন্য হেলানো চেয়ার। পুকুরের চারপাশটায় গম্বুজ আকৃতির সীমানা প্রাচীরে লোহার কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। পুকুর পাড়ে তালগাছসহ বিভিন্ন ফলের গাছের।

নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার অতি পরিচিত একটি স্থান মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি। বাংলাদেশের অন্যতম একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও শতবর্ষের অধিক পুরাতন ঐতিহাসিক একটি জমিদার বাড়ি।

ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কি.মি. দূরে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানার মুড়াপাড়া গ্রামে অবস্থিত মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি। জমিদার রামরতন ব্যানার্জী ১৮৮৯ সালে ৪০ হেক্টর জমির উপর নির্মাণ শুরু করেন মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িটির। শীতলক্ষ্যা নদীর একেবারে কোলঘেঁষে গড়ে উঠেছে এ জমিদার বাড়িটি। স্থানীয়রা একে মঠেরঘাট জমিদার বাড়ি বলেও অভিহিত করে।

জমিদার রামরতন ব্যানার্জী ১৮৮৯ নির্মাণ শুরু করেন মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি। তিনি নাটোর স্টেটের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন এবং তার সততার কারণে উচ্চ পদে উন্নীত হন। তিনি পুরস্কার হিসাবে এই মুড়াপাড়া জমিদারি জায়গির হিসেবে পান।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িটির নির্মাণ কাজ জমিদার রামরতন ব্যানার্জী শুরু করলেও কাজ শেষ করতে পারেন নাই। তার কয়েকজন বংশধর কর্তৃক প্রাসাদটি সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়। জমিদার প্রতাপচন্দ্র ব্যানার্জী এই ভবনের পিছনের অংশ সম্প্রসারণ করেন। তিনি পরিবার নিয়ে এখানেই বসাবাস শুরু করেন।

রামরতন ব্যানার্জীর পুত্র বিজয় চন্দ্র ব্যানার্জী ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাসাদের সামনের অংশে একটি ভবন নির্মাণ ও ২টি পুকুর খনন করেন। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে তার দুই পুত্র জগদীশ চন্দ্র ব্যানার্জী ও আশুতোষ চন্দ্র ব্যানার্জী কর্তৃক প্রাসাদের দোতালার কাজ সম্পন্ন হয়।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় জগদীশ ব্যানার্জি দেশ ছেড়ে কলকাতায় চলে যান। তখন থেকেই বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ১৯৬৬ সালে এটি মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজে রূপান্তরিত হয় এবং বর্তমানে এটি মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ।

দূর থেকে বাড়িটিকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় লাগে দেখতে। খয়েরি লাল আর হলুদ বর্ণের মিশেলে দোতলা বাড়িটি সবাইকে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। বাড়িটির নিখুঁত কারুকাজ দেখলেই বোঝা যায় তৎকালিন জমিদারদের শান শওকতের কথা। নদীর তীরে গাছপালায় ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি সত্যিই চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মতো।

রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ, গুলিস্থান অথবা যাত্রাবাড়ি থেকে মেঘলা, গ্লোরী, আসিয়ান পরিবহন অথবা নরসিংদী ভৈরবগামী যে কোন বাসে চেপে রূপসী বাসষ্টান্ড অথবা ভুলতায় নামতে হবে। তারপর অটো রিকশায় জমিদার বাড়ি।

বাংলা ইনসাইডার/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭