ইনসাইড গ্রাউন্ড

কোটি টাকার সুপার কাপ পুনরায় আয়োজনের উদ্যোগ বাফুফের!


প্রকাশ: 08/02/2023


Thumbnail

কাজী সালাউদ্দিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সর্বোচ্চ পদে আছেন দীর্ঘ এক যুগের ও বেশি সময় ধরে। পৃথিবী বদলেছে অনেকটা, বিজ্ঞান উন্নত থেকে হয়েছে উন্নতর, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বদল হয়েছেন তিনবার। বিশ্ব রাজনৈতিক নেতাদের পরিবর্তন হলেও বাফুফের সভাপতির পদে নেই কোন পরিবর্তন। বাফুফের সভাপতি হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ফুটবল উন্নয়নে নানা সময়ে নানান ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও এর বাস্তব প্রতিফলন দেখেনি ফুটবলপ্রেমী সমর্থকেরা। তবে বাফুফের দায়িত্ব নেওয়ার বছরে অনেকটা জাঁকজমক ভাবে আয়োজন করেছিলেন বাংলাদেশ সুপার কাপ। প্রথম আসরে বেশ আলোচনা ও জাগিয়েছিলো টুর্নামেন্টি। বুঝিয়েছিলেন দেশের ফুটবলের ভাগ্য বদল করার জন্যই চেয়ারে বসেছেন তিনি। কিন্তু ২০১৩ এর পরে আর মাঠে গড়ায়নি আলোচিত এ টুর্নামেন্ট। নতুন করে ফের আলোচনায় সুপার কাপ আয়োজনকে ঘিরে। তবে এবার কি সত্যি মাঠে গড়াবে সুপার কাপ?

২০০৯ সালে ঘরোয়া ফুটবলে চমক সৃষ্টির জন্য সুপার কাপের আয়োজন করেছিলো বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। টুর্নামেন্টের ফাইনালে কোটি টাকার প্রাইজমানি হবে জানিয়ে কাজী সালাউদ্দিন ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হবে এ টুর্নামেন্ট। কিন্তু কথা আর বাস্তবায়নে ছিলো অনেক ফারাক। মোট তিনটি আসর করেই সুপার কাপকে যেনো হিমাগারে পাঠায় বাফুফে। সবশেষ ২০১৩ সালে মাঠে গড়িয়েছিলো এ টুর্নামেন্ট। সে সময়ে জোর গলায় বলা হয়েছিলো বিদেশি ক্লাবগুলোকে এনে খেলানো হবে টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসর থেকেই।  তবে সালাউদ্দিনের নানান সময়ে বলার কথার মতোই এটি ছিলো কেবল আশ্বাস। হয়েছে এর বিপরীত দেশি ক্লাবের নিন্মমানের পারফরম্যান্সে সুপার কাপ হয়ে গিয়েছিলো ম্লান।

সুপার কাপের প্রথম বছর গ্যালারিতে দর্শকের উপচে পড়া ভিড় প্রমাণ করেছিলো দেশের ফুটবলে লাগতে যাচ্ছে নতুন হাওয়া। কিন্তু সুপার কাপের পরের দুই আসরে ক্লাবগুলোর মানহীন ফুটবল আর প্রচার প্রচারণা কম থাকায় মাঠমুখো হয়নি দর্শকরা। এমনিতে দেশের ফুটবলে ফ্রিতে ও দর্শক নেওয়া যায় না মাঠে। কোটি টাকার সুপার কাপ বাদ দিলেও প্রতিবছর হয় এমন টুর্নামেন্টে নিয়েও আগ্রহ নেই দেশের মানুষদের। শেরেবাংলা কাপ, সোহরাওয়ার্দী কাপ, জেলা ফুটবল লীগ কখন কবে মাঠে গড়ায় জানে না অনেকেই।

দীর্ঘ ১০ বছর পরে সুপার কাপের চতুর্থ আসর আয়োজনের আবারও উদ্যোগ নিয়েছে বাফুফে। সেখানে রয়েছে যদি কিন্তুর বিষয়। যদি স্পন্সর পাওয়া যায় তবেই মাঠে গড়াবে আলোচিত টুর্নামেন্টি। টুর্নামেন্টির একটি প্রাথমিক রূপরেখাও প্রনয়ণ করেছে বাফুফে। ৬ দল নিয়ে সুপার কাপ আয়োজন করতে চায় বাফুফে। যেটি ২ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হবে ১৩ এপ্রিল। তিনটি করে দল দুই গ্রুপে খেলবে, প্রতি গ্রুপ থেকে সেরা দুটি করে দল সেমিফাইনাল খেলবে এবং এরপর ফাইনাল। তবে টুর্নামেন্টের মূল পর্বে খেলার আগে ক্লাবগুলোকে খেলতে হবে বাছাইপর্ব। বাছাইপর্বের জন্য তারিখ ও নির্ধারণ করেছে বাফুফে। ১৪ ও ১৮ তারিখ হবে বাছাইপর্বের ম্যাচগুলো। ২০২২ সালের লিগ টেবিলের সেরা চারটি দল খেলবে সরাসরি মূলপর্বে।সেক্ষেত্রে সরাসরি খেলবে বসুন্ধরা কিংস, আবাহনী লিমিটেড, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। বাকি ৭ টি দলের মধ্যে বাছাই হবে, যেখান থেকে মূলপর্বের জন্য উত্তীর্ণ হবে দুই দল।

বাফুফের এক কর্মকর্তা জানান যদি স্পন্সর পাওয়া যায় তবে টুর্নামেন্ট আয়োজনে আর কোন বাধা নেই। স্পন্সরের বিষয়ে বসুন্ধারা গ্রুপের সাথে প্রাইমারি কথাবার্তাও হয়েছে। আগামী দুই একদিনের মধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করবে বাফুফে। সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে এগোলে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে বন্ধ হয়ে যাওয়া সুপার কাপ। তবে প্রশ্ন থেকেই যাবে এত বছর পরে সুপার আয়োজনে বাফুফে কি সফল হবে? নাকি এই সুপার কাপ আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আরও এক যুগ সময় বাফুফের দায়িত্ব আগলে রাখবেন কাজী সালাউদ্দিন?? এক সুপার কাপ আয়োজন করে ১২ বছর পার করলেন কাজী সালাউদ্দিন। তবে কি আরও একটি সুপার কাপ আয়োজন দিয়ে আরও একযুগের জন্য চেয়ারে বসে থাকবেন সালাউদ্দিন?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭