ইনসাইড বাংলাদেশ

ক্ষুধা মেটানোর সক্ষমতায় ভারত-পাকিস্তান থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ


প্রকাশ: 08/02/2023


Thumbnail

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে (জিএইচআই) ক্ষুধা মেটানোর সক্ষমতার দিক থেকে ভারত ও পাকিস্তানের থেকে এগিয়ে আছে  বাংলাদেশ। ১২১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৮৪তম অবস্থানে রয়েছে।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২২ রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড ও ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ যৌথভাবে বিশ্ব ক্ষুধা সূচক-২০২২ রিপোর্টটি প্রকাশ করে।

এতে আয়োজকেরা বলেন, সূচকে বাংলাদেশ ২০১৪ থেকে শতকরা ২৫ দশমিক ৫ ভাগ উন্নতি করেছে। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৬ দশমিক ৩। যা ক্ষুধা সূচকে গুরুতর বলে বিবেচিত হয়। তবে ২০১৪ সাল থেকে দেশে অপুষ্টির হার, শিশু স্টান্টিং ও শিশুমৃত্যুর হার কমেছে।

অনুষ্ঠানে আরো বলা হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ উন্নতি করছে। তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, চরম আবহাওয়া, ভয়াবহ বন্যা ও জলবায়ু সংকটের কারণে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা ক্রমশ হুমকির মুখে পড়ছে। এ ছাড়া দারিদ্র্য ও বৈষম্যের মতো বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো ইতিমধ্যেই ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের শিকার সমাজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

এ বিষয়ে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনীশ কুমার আগরওয়াল বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নতি করেছে। তবে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েই গেছে। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির কারণে মৌলিক খাবারের সংস্থানও অনেক দরিদ্র পরিবারের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতের সংকট এড়াতে কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড আরো ন্যায়সঙ্গত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং স্থিতিশীল খাদ্য ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয়।’ এ ছাড়া খাদ্য ব্যবস্থার ইতিবাচক রূপান্তরের জন্য স্থানীয় সরকার ও সুশীল সমাজের শক্তিশালী পারস্পরিক সহযোগিতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি।

ওয়েলথহাঙ্গারহিলফে বাংলাদেশের হেড অফ মিশন ফাতিমা আজিজোভা বলেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধ, মহামারি এবং জলবায়ু পরিবর্তন লাখ লাখ মানুষের আর্থসামাজিক অবনতির অন্যতম কারণ। বাংলাদেশের জিএইচআই স্কোর অতীতের তুলনায় ভালো হয়েছে, উদ্বেগজনক মাত্রা থেকে মাঝারি মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। তবে এটি বর্তমান খাদ্যব্যবস্থা, দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূর করার জন্য যথেষ্ট নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, সকল স্তরে অধিকার ভিত্তিক খাদ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার, এনজিও এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের অবশ্যই স্থানীয় জনগণকে কাজে লাগাতে হবে। এ ছাড়া তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে স্থানীয় নেতৃত্বকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। সেইসাথে মাল্টিস্টেকহোল্ডার প্ল্যাটফর্মগুলিকে সংগঠিত করে খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তাহীনতা এবং ক্ষুধা মোকাবিলায় নীতি নির্ধারকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান ফাতিমা।

আর হেলভেটাস বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর শামীম আহমেদ বলেন, বিশাল চ্যালেঞ্জ থাকার পরেও বাংলাদেশ এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। তবে এরপরও খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

খাদ্যের প্রাপ্যতা সবসময় মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা সীমিত করার প্রধান কারণ নয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সকল স্তরের সরকারি ও বেসরকারি দায়িত্বশীলদের অবশ্যই খাদ্য ব্যবস্থার পরিবর্তনের এই প্রচেষ্টার কেন্দ্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন ও জবাবদিহিতা রাখতে হবে।

এ ছাড়া ক্ষুধা ও অপুষ্টির সমস্যায় কিছু এলাকা সংকটে থাকলেও প্রতিবেদনে দেখা যায় বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা হ্রাসে অগ্রগতি হয়েছে, বৈশ্বিক জিএইচআই স্কোর ২০১৪ সালে ছিল ১৯ দশমিক ১। ২০২২ সালে তা কমে দাড়িয়েছে ১৮ দশমিক ২। তবে একটি সূচক অনুযায়ী পর্যাপ্ত ক্যালোরির যোগাড় করতে না পারা মানুষের হার বেড়েছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭