প্রকাশ: 09/02/2023
রোজিনাকে ব্যাবহার করে আন্তর্জাতিক মহলে সরকারকে বিতর্কিত করার নতুন ষড়যন্ত্র মেতেছে প্রথম আলো। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলায় নারাজির আবেদন করা হয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলকে দিয়ে বিবৃতি ব্যাবসার নেমেছে এই গণমাধ্যমটি। রোজিনা ইসলামকে দিয়ে বিভিন্ন রকম পুরষ্কার গ্রহণ করানোর পর এখন তাকে সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের কক্ষ থেকে নথি চুরির ঘটনার কারণে রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা হয়। এই ব্যাপারে পুলিশ যে প্রতিবেদন দিয়েছিল সেই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদি নারাজি আবেদন দেয় এবং তার নারাজি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এটি নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে দেন দরবার চলছে। এমনকি গতকাল রোজিনা মার্কিন দূতাবাসেও গিয়েছিলেন।
আইনের দৃষ্টিতে একটি চুরি চুরিই। সে যেই করুক না কেন, সেটি অপরাধ। সাংবাদিকতা এবং চুরি দুটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। একটির সাথে আরেকটির সম্পর্ক নেই। কিন্তু রোজিনা একজন ভালো সাংবাদিক। তিনি অনেক অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করেছেন এটি যেমন সত্য, পাশাপাশি এটিও সত্য যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের কক্ষ থেকে তিনি যে নথি চুরি করেছেন সেটি অনৈতিক এবং আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ। এই অপরাধে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন এটি আদালতের বিষয় যে তিনি দোষী নাকি নির্দোষ। সরকারের যেমন মামলা করার অধিকার আছে, তেমনি আদালত স্বাধীন। তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে যে এই মামলার ব্যাপারে তারা কি রায় দেবে। কোনটার উপরই প্রভাব বিস্তার করা উচিত নয়।
কিন্তু রোজিনার ক্ষেত্রে আমরা লক্ষ করছি যে, আদালতের উপর প্রভাব বিস্তার করার জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। রোজিনার ইস্যুটিকে একটি সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ইস্যু বানানো হচ্ছে। কিন্তু সাংবাদিকতার স্বাধীনতার ইস্যুর সাথে এটির কোন সম্পর্ক নেই। কোন প্রকাশিত প্রতিবেদনের জন্য রোজিনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি। বরং রোজিনার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তাহলে কি সাংবাদিক হলে চুরি করা জায়েজ? এই ধারণা যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে অনেক চোর এসে সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করবেন এবং সেই পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত করবে। এটিই কি প্রথম আলো চায়?
বাংলাদেশে তথ্য অধিকার আইন আছে। কোন ব্যাক্তি কিংবা সাংবাদিকের কোন তথ্য প্রয়োজন হলে সেই তথ্য পাবার একটি সুনির্দিস্ট বিধি ব্যাবস্থা তথ্য অধিকার আইনে রয়েছে এবং কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান যদি তথ্য না দেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তথ্য অধিকার কমিশন গঠিত হয়েছে। কিন্তু সেই পথে না গিয়ে একাকী কক্ষে ঢুকে তথ্য চুরি করা কোন সাংবাদিকতার রীতি নয়। আর এ কারণেই এটিকে সাংবাদিকতার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয় ধরা যায় না।
আমরা অতীতেও দেখেছি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সাংবাদিক অন্য অপরাধে জড়িত হওয়ার কারণে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে স্বাভাবিক মামলা হয়েছে। এটির সাথে সাংবাদিকতার কোন সম্পর্ক নেই। রোজিনাকে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য কোন বাধা প্রদান করা হয়নি বরং তিনি আইনের লঙ্ঘন করেছেন এবং ফৌজদারি অপরাধ সংগঠিত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার ন্যায় বিচার চেয়েছে সরকার।
কাজেই রোজিনার বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা করে প্রথম আলো মূলত সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হনন করছে এমনটি প্রমাণের চেষ্টা করছে যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং প্রথম আলোর বিরাজনীতিকরন প্রক্রিয়ারই একটি অংশ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭