ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

মধ্যরাতে ফখরুলের সিঙ্গাপুর যাত্রা: সরকারের সাথে সমঝোতা?


প্রকাশ: 10/02/2023


Thumbnail

আকস্মিকভাবে কাউকে না জানিয়েই বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারী) মধ্যরাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক সিঙ্গাপুরে গেছেন। তাঁর সিঙ্গাপুর যাবার খবরটি ঘুণাক্ষরেও জানতেন না বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। মির্জা ফখরুলের আকস্মিকভাবে সিঙ্গাপুর যাওয়া সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন। আন্দোলনের মাঝপথে কিভাবে তিনি অসুস্থ হলেন এবং কি চিকিৎসার জন্য তিনি সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর গেলেন এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা রয়েছে। যখনই বিএনপি আন্দোলনে যায়, তখনই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেনো সিঙ্গাপুরে যান এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

গতকাল রাত দেড়টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের বিমানে করে সিঙ্গাপুর যান মির্জা ফখরুল। তাঁর পারিবারিক সূত্রগুলো বলছে, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী সেখানে চিকিৎসা করাবেন। কিন্তু মির্জা ফখরুল যে সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন এই বিষয়টি তিনি গতকাল পর্যন্ত কাউকে জানাননি। শুধুমাত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে তিনি জানিয়েছিলেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে বিএনপির কোনো কোনো নেতা বলছেন, এই রকম কোন তথ্য তাঁদের হাতে নেই। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর আগেও সিঙ্গাপুরে গেছেন এবং সেখানে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সরকারি আর্থিক সহায়তায় তাঁর চিকিৎসা হয়েছে বলে একাধিক তথ্য জানা যায়। বাংলাদেশে অবস্থিত সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে যে, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুরে গেছেন এবং সিঙ্গাপুরে তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার দূতাবাস বহন করেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকার বহন করেছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে যখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়, সেই সংলাপে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সময় মির্জা ফখরল তাঁর শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর উন্নত চিকিৎসা গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেন এবং তাঁর সঙ্গে সরকারের লোকজনকে যোগাযোগ করার নির্দেশও দেন। এরপরই নির্বাচনের আগে মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুর সফর করেন। সেখানে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত তাকে প্রটোকল দেন এবং এই চিকিৎসার যাবতীয় ব্যায়ভার সরকার বহন করে।

বিএনপির মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে যে একদিকে সরকার পতনের আন্দোলনের কথা বলা হবে, অন্যদিকে সরকারি সহযোগীতা নিয়ে চিকিৎসা করা হবে এটি কোন ধরণের রাজনীতি? অনেকেই মনে করছেন মির্জা ফখরুলের সাথে সরকারের একটি গোপন সমঝোতা রয়েছে এবং এই সমঝোতার অংশ হিসেবেই তিনি এখন সিঙ্গাপুরে গেছেন। বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে আসার জন্য সরকার পর্দার আড়ালে নানারকম চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুর গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের দু’টি লাভ হবে। প্রথমত, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলকে নির্বাচনী মহাসড়কে টেনে তোলার চেষ্টা করবেন। দ্বিতীয়ত, নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরণের বিভ্রান্তি এবং হতাশা তৈরী হবে। আর এ কারণেই মির্জা ফখরুলের এই সময়ে সিঙ্গাপুর যাওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সিঙ্গাপুর যাওয়ার আগে আগেই বিএনপি তাঁদের আন্দোলনের কর্মসূচি আকস্মিকভাবে স্থগিত করে। আর এর প্রেক্ষিতেই এখন প্রশ্ন উঠেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বেই কি তাহলে সরকারের সাথে কোনো সমঝোতা হচ্ছে?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭