ইনসাইড পলিটিক্স

নির্বাচন করতে চান আরিফুল, সময় চান তারেক


প্রকাশ: 10/02/2023


Thumbnail

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান। বিএনপির অন্যতম এই নেতা বর্তমানে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তারেক জিয়ার সঙ্গে এ নিয়ে সরাসরি টেলিফোনে আলাপ করেছেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা নিশ্চিত করেছে। তারেক জিয়া তাকে ‘হ্যা-না’ কিছুই বলেননি। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সময় চেয়েছেন। আরিফুল হক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠরা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত যদি তাকে মনোনয়ন না দেওয়া হয়, তাহলে তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারেন। একাধিক কারণে তার স্বতন্ত্র নির্বাচন করার আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো জানিয়েছে। 

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচন কমিশন সহসাই এ নির্বাচনের ব্যাপারে তফসিল ঘোষণা করতে পারে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে  এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লন্ডন প্রবাসী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী অংশগ্রহণ করবেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী তাকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছেন। গত ২২ জানুয়ারি দেশে আসার পর থেকে তিনি এখন সিলেট মহানগর এলাকায় নির্বাচনী প্রচার এবং প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় আরিফুল হক চৌধুরী মনে করছেন যে, এই নির্বাচনে তিনি যদি অংশগ্রহণ করেন, তার বিজয় সুনিশ্চিত। একাধিক কারণে আরিফুল হক নির্বাচনে আগ্রহী হয়েছেন। 
প্রথমত, আওয়ামী লীগ যাকে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী হিসেবে বাছাই করেছে, তিনি লন্ডন প্রবাসী এবং বালাগঞ্জের লোক। সিলেট শহর বা সিটি করপোরেশন এলাকায় তার পরিচিতি নাই। এই কারণে এাই নির্বাচনে যদি আরিফুল হক দাঁড়ান, তাহলে তিনি সহজেই জয়ী হতে পারেন। দ্বিতীয়ত, তিনি মনে করছেন এই নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে পড়বে এবং একটি বড় অংশ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করবে এবং এতে করে তার জয় সহজ হবে। তৃতীয়ত তিনি মনে করছেন যে, তার জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং তিনি নির্বাচন করলে সংগঠন আরও শক্তিশালী এবং গতিশীল হবে। যেটি সরকার বিরোধী পরবর্তী আন্দোলনকে বেগবান করবে। 

বিএনপির অধিকাংশ নেতাই আরিফুল হক চৌধুরীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিরুদ্ধে। তারা মনে করছেন যে, যেহেতু বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয় বলে বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করছে, কাজেই এ রকম পরিস্থিতিতে আরিফুল হক যদি জাতীয় নির্বাচনের আগে সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে, তাহলে এটি একটি ভুল বার্তা হবে এবং জনগণ বিভ্রান্ত হবে। বিএনপি নেতারা মনে করেন, শুধু জনগণ নয়, কর্মীরাও এতে নানারকম বিভ্রান্তিতে পড়বেন। এ কারণেই তার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত নয় বলে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। আরিফুল হক চৌধুরী এর আগে স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যদের কাছে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে তার অভিপ্রায়ের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু তারা বলেছেন, যেহেতু জাতীয় সংসদ থেকেই বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন এবং তারা বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না বলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে, সেহেতু তার নির্বাচনের প্রশ্নই ওঠে না। 

তবে আরিফুল হক ভিন্ন কারণে আশাবাদী। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যাদেরকে বিভিন্ন কারণে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, তাদেরকে দলে ফিরিয়ে আনা হবে। এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জের তৈমুর আলম খন্দকার, কুমিল্লার মনিরুল হক সাক্কু, খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জু আবার বিএনপিতে ফিরে আসছেন বলে শোনা যাচ্ছে। কাজেই শেষ পর্যন্ত যদি আরিফুল হক চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়, তারপরও তিনি আবার দলে ফিরে আসতে পারবেন সহজেই বলে তিনি মনে করছেন এবং এ কারণেই তিনি নির্বাচনে আগ্রহী। সবচেয়ে বড় কথা আরিফুল হক চৌধুরী তারেক জিয়ার কাছে দাবি করেছেন, সংগঠন টিকিয়ে রাখতে গেলে নির্বাচনের বিকল্প নেই। এখন দেখার বিষয় আরিফুল হক, আব্দুস সাত্তারের মতো স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেন, নাকি বিএনপি তাকে নির্বাচনের মাঠে নামিয়ে আরেকটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭