ইনসাইড পলিটিক্স

শেখ হাসিনার যে সমস্ত বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু


প্রকাশ: 12/02/2023


Thumbnail

দেশের পরবর্তী ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দুদকের সাবেক কমিশনার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। তিনি দলের উপদেষ্টা পরিষদেরও সদস্য। অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ তিনি। আজ সকালে তাকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দপ্তরে যান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি টিম। এরপর সেখানে মনোনয়ন ফরম তোলা ও জমাদানের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়।

এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবনের সরকার দলীয় সংসদীয় দলের সভায় রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন চূড়ান্ত করার কথা শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন নিয়ে সভায় কোনো আলোচনাই হয়নি। বরং রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করণের একক ক্ষমতা সর্বসম্মতিক্রমে সংসদীয় দলের নেতা এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া হয়। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বেশ কিছু বিষয় বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা বলছেন রাষ্ট্রপতি হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতি সর্ব প্রথমে বিবেচনায় নিয়েছেন দলের প্রতি বিশ্বস্ত এবং তিনি দলের আস্থাভাজন হবেন এমন ব্যক্তিকে। যিনি কঠিন সময়ে অবিচল থাকবেন। সে বিবেচনায় সাহাবুদ্দিন চুপ্প’র নাম শুরু চলে আসে। যার আদর্শিক অবস্থান নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। যার কোন সময় কোন আদর্শ বিচ্যুতিও নেই। যিনি আদর্শিকভাবে আওয়ামী ঘরানার থাকলেও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য। তিনি আওয়ামী লীগ অতীতে অনেকগুলো ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়েছেন- এরকম বিবেচনায় সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপতি পদে শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছেন।

উল্লেখ্য যে, সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মাঠেই রাজনীতি করতেন। তিনি তিনি ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৯৯৫ সালের ২০ আগস্ট গ্রেফতার হয়েছিলেন, তিন বছরের বেশি কারাগারে ছিলেন।

১৯৮২ সালে তিনি বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত কমিশনের প্রধান ছিলেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন তিনি।

এরপর ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল তিনি দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়ই উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলো বিশ্বব্যাংক সহ দাতা সংস্থা গুলো। কিন্তু সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সে সময় বেশ দক্ষতার সাথে সব কিছু সামাল দিয়েছেন। দুদকের দৃঢ অবস্থানের কারণেই সে সময় দুদকের সঙ্গে বৈঠক করলেও দুর্নীতির ষড়যন্ত্রসংক্রান্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি তারা। 
 
২০২০ সালে ১৩ মার্চে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য হন। পরে ২০২১ সালে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের মৃত্যুতে খালি থাকা প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে তাকে মনোনীত করা হয়। এরপর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭