প্রেস ইনসাইড

রাষ্ট্রপতি নিয়োগ নিয়ে প্রথম আলোর অপসাংবাদিকতা এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতা


প্রকাশ: 14/02/2023


Thumbnail

সরকার এবং রাষ্ট্রকে যে কোনো ইস্যুতে বিতর্কিত করার এক মিশনে নেমেছে প্রথম আলো। এই পত্রিকাটির মূল লক্ষ্য হলো বিরাজনীতিকরণ। এই বিরাজনীতিকরণ করতে গিয়ে তাঁরা দেশের সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করা কিংবা প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি নানা গুজব ছড়ানোর কাজে ব্যস্ত। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তি এবং বিতর্ক সৃষ্টির মিশনে নেমেছে প্রথম আলো। সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার তাকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাষ্ট্রপতি পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি।

নতুন রাষ্ট্রপ্রতিকে নিয়ে বিতর্ক এড়াতে প্রধানমন্ত্রী নতুন রাষ্ট্রপতির নাম শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত গোপন রেখেছিলেন। কারণ আগে থেকে নাম প্রকাশ করে দিলে এই ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা রকম গুজব ছড়ানো হবে, মিথ্যাচার করা হবে। তাঁর যে এই কৌশল টা সঠিক ছিলো তাঁর প্রমাণ পাওয়া গেলো আজকের প্রথম আলো পত্রিকায়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়ে গেজেট প্রকাশ করার পরপর তাকে বিতর্কিত করার উদ্দেশ্যে সংবাদ ছাপালো প্রথম আলো। এই গুজবের ফ্যাক্টরি প্রথম আলো কিছুদিন আগেই ইসলামি ব্যাংক নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়েছে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, রিজার্ভের টানাপোড়েন, লোডশেডিং বাড়তেই থাকবে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে টাকা নেই ইত্যাদি প্রচারণা করে সরকারকে অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রায় দেউলিয়া প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে প্রথম আলো।

এই প্রথম আলোই ১৪ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গবার) নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক কি না’ এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রথম পৃষ্ঠায় এবং ৮ম পৃষ্ঠার মতামত পাতায় ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ নিয়ে কিছু সাংবিধানিক প্রশ্ন’ শিরোনামে ডঃ শাহদীন মালিকের একটি লেখা প্রকাশ করেছে বিতর্কিত সংবাদপত্রটি।  পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় ছাপানো লেখায় বলা হয়েছে, দেশের নতুন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন একসময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ছিলেন। দুদক আইনে কমিশনারের অক্ষমতা আইনের ৯ ধারায় বলা আছে, দুদকের কোনো কমিশনার অবসর নেওয়ার পর প্রজাতন্ত্রের কোনো লাভজনক পদে নিয়োগের যোগ্য হবেন না। মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দুদক আইনের সূত্র ধরে রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক কি না, এই প্রশ্ন তুলেছে প্রথম আলো।

এদিকে, রাষ্ট্রপতির পদ লাভজনক অথবা লাভজনক নয়, এমন কিছু সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা না থাকলেও সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সম্পর্কে বলা রয়েছে। সেই অনুচ্ছেদ অনুসারে, ‘কোন ব্যক্তি কেবল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী হইবার কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলিয়া গণ্য হইবেন না।’

রাষ্ট্রপতি পদ লাভজনক কি না, তা একবার আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। এ নিয়ে ১৯৯৬ সালে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা হয়েছিল। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথম দফায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিল। তখন হাইকোর্টে রিট মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, প্রধান বিচারপতি থেকে অবসর নিয়ে রাষ্ট্রের কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত হওয়া যায় না। ফলে সাহাবুদ্দীন আহমদ রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করতে পারেন না। রিট মামলার সেই অভিযোগের শুনানি শেষে সে সময় হাইকোর্ট রাষ্ট্রপতির পদ লাভজনক নয় বলে রায় দিয়েছিলেন।

সংবিধানে যেখানে সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করে বলা আছে কেউ যদি সংসদ সদস্য নির্বাচন করার যোগ্য হন তবে তিনি রাষ্ট্রপতি পদের জন্যও যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। সেখানে এই প্রসঙ্গে প্রথম আলোর এমন বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছাপানো উদ্দেশ্য প্রনোদিত। সবকিছুকে বিতর্কিত করার উদ্দেশেই। যেখানে রাষ্ট্রপতি একটা দেশের সর্বোচ্চ অভিভাবক, সেখানে তাকে নিয়ে বিভ্রান্তি রটানো রাষ্ট্রদ্রোহীতা। এই ধরণের প্ররোচনামূলক সংবাদ ছাপানো একজন রাষ্ট্রপতিকে অবমাননা করার সমতুল্য। তাছাড়া এর মাধ্যমে সংবিধানের অপনব্যাখ্যার দায়েও প্রথম আলো অভিযুক্ত।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭