শান্ত-মুশফিকের দৃঢ়তায় কুমিল্লার সামনে টার্গেট ১৭৬ রানের

মুশফিক ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিং দৃঢ়তায় ১৭৫ রানের পুঁজি পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। জয়ের জন্য ১৭৬ রান করতে হবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার।

বিপিএলের ইতিহাসে ফাইনালে গিয়ে এখন পর্যন্ত কোনোবারই হারেনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। রেকর্ডটা মাশরাফির ক্ষেত্রেও সমান প্রাসঙ্গিক। ভিন্ন ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে চারটি বিপিএলের ফাইনাল খেলে শতভাগ সফল সাবেক টাইগার এই অধিনায়ক। প্রথমবারের মতো সিলেটের দায়িত্ব নিয়ে দলকে উঠালেন ফাইনালে। অন্যদিকে কুমিল্লার হয়ে দুই শিরোপা জয়ের রেকর্ড রয়েছে ইমরুল কায়সেরও। বিপিএলের সফল দুই অধিনায়কের লড়াইয়ে আজ মিরপুরে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভিক্টোরিয়ান্স ক্যাপ্টেন ইমরুল কায়েস।

টসে হেরে আগে ব্যাট করার সুযোগ পায় মাশরাফির নেতৃত্বাধীন সিলেট স্ট্রাইকার্স। ব্যাট হাতে ইনিংস সূচনা করতে আসেন সিলেটের দুই ইনফর্ম ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। দুইজনে আছেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই বিদেশি খেলোয়াড় আন্ড্রে রাসেলের হাতে বল তুলে দেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ফাইনাল ম্যাচের প্রথম বলেই ওভার থ্রোতে চার রান পেয়ে যায় সিলেট। এরপর রাসেলের উপর চওড়া হন নাজমুল শান্ত। ক্যারিবিয়ান তারকার তৃতীয় এবং চতুর্থ বলেই বাউন্ডারি হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার। শেষ বলে আবারো ওভার থ্রো করে চারে পরিণত করেন কুমিল্লার ফিল্ডার তানভীর ইসলাম। ফলে প্রথম ওভারেই সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮ রান। তবে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই সিলেট শিবিরে আঘাত হানেন কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হওয়া তানভীর ইসলাম। স্কোর বোর্ডে কোন রান যোগ না করেই তানভীর ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান পুরো টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে আলো ছড়ানো তৌহিদ হৃদয়।

তিনে আজও ব্যাট হাতে নেমে পড়েন সিলেট কাপ্তান মাশরাফি বিন মর্তুজা। তবে আজ সফল হতে পারেননি নড়াইল এক্সপ্রেস। দলীয় ২৬ রানের মাথায় ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে রাসেলের শিকারে কাঁটা পড়েন তিনি। দুই উইকেট হারালেও উইকেটের একপাশে অবিচল ছিলেন নাজমুল শান্ত। চারে নামা মুশফিককে নিয়ে এগোতে থাকেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। পাওয়ার প্লে'তে আর কোন ভুল করেননি সিলেটের এই দুই ব্যাটার। ফলে ৬ ওভার শেষে দুই উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪২। উইকেটে টিকে থাকার পাশাপাশি রানের চাকা সচল রাখেন অভিজ্ঞ মুশফিক ও নাজমুল শান্ত। পাওয়ার প্লে শেষে গড়ে ৯ রান করে নিতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। মোস্তাফিজ এবং নারাইনরা প্রথম দশ ওভারে দেখেনি সফলতার মুখ। তাই দশ ওভার শেষে সিলেটের সংগ্রহ হয় ৭৯ রান।

ইনিংসের ১১তম ওভারে অধর্শতক তুলে নেন নাজমুল শান্ত। সাথে সাথে চলতি টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত ৫০০ রানের মাইলফলক ও স্পর্শ করেন তিনি। নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান সমালোচিত এই ক্রিকেটার। তবে ম্যাচের ১৩তম ওভারেই যেনো খেল হারিয়ে ফেললেন নাজমুল শান্ত। এবার শান্ত-মুশফিকের ৭৯ রানের জুটি ভাঙ্গেন ইংলিশ ক্রিকেটার মইন আলী। দলীয় ১০৫ রানে মইন আলির শিকারে পরিণত হোন নাজমুল শান্ত। আউট হওয়ার আগে শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। তখনো ব্যাট হাতে উইকেটে ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিক। পাঁচে নামা রায়ান বার্লকে নিয়ে বড় স্কোরের দিকে এগিয়ে নেন দলকে। আজ নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি জিম্বাইয়ান তারকা বার্ল। দলীয় ১৩৪ রানে মোস্তাফিজের বলে কাটা পড়েন তিনি। বার্লকে হারানোর ওভারেই ফিফটি তুলে নেন মুশফিকুর রহিম। দলের দায়িত্ব নিয়ে নেন নিজের কাঁধে। আজ থিসারা পেরেরা ও জর্জ লিন্ডে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি ফিরে যান খুব দ্রুতই। শেষ পর্যন্ত মুশফিকের একক নৈপুণ্যে ১৭৫ রানের পুঁজি পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৪৮ বলে ৭৪ রান করে অপরাজিত থাকেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। কুমিল্লার হয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান। সুনিল নারাইন, মইন আলী, তানভীর ইসলাম ও আন্ড্রে রাসেল নেন একটি করে উইকেট।