প্রকাশ: 16/02/2023
উত্তেজনাকর
ম্যাচে সিলেটকে সাত উইকেটে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো বিপিএল শিরোপা ঘরে তুললো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ১৭৬ রান তাড়া করতে নেমে লিটন আর জনসন চালর্সের
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চার বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা।
আজ
বৃহস্পতিবার মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয়
ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শিরোপার লড়াইয়ে কুমিল্লার মুখোমুখি হয় সিলেট। মুকুটের লড়াইয়ে টস জিতে সিলেটকে
ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়ক ইমরুল কায়েস।
আগের
আট আসরে তিনবার শিরোপা জিতে সবচেয়ে সফল দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
চতুর্থ ট্রফি জয়ে তাদের সামনে ছিলো একটি মাত্র পরীক্ষা। ফাইনালে হারাতে হবে বিপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফির দল সিলেট স্ট্রাইকার্সকে।
তবে লড়াইটা যে সহজ হবে
না সেটা আগেই বুঝিয়ে দেয় সিলেটের দুই ব্যাটার মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন
শান্ত। দুইজনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় সিলেট পায় ১৭৫ রানের লড়াকু পুঁজি।
ইনিংসের
প্রথম ওভারেই আন্ড্রে রাসেলের হাতে বল তুলে দেন
অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। কিন্তু প্রথম ওভারে আন্ড্রে রাসেল অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। শান্তর দুই বাউন্ডারি ও দুইটি বাই
রানের বাউন্ডারিতে প্রথম ওভারেই ১৮ রান পায়
সিলেট। শুরুটা উড়ন্ত হলেও দ্বিতীয় ওভারেই লাগাম টেনে ধরেন তানভীর ইসলাম। টুর্নামেনেটে দারুণ ফর্মে থাকা তৌহিদ হৃদয়কে ফেরান বাঁহাতি এই স্পিনার। আজও
ব্যাট হাতে তিনে নেমে পড়েন সিলেট কাপ্তান মাশরাফি। তবে আগের দুই ম্যাচে সফল হলেও ব্যাট হাতে আজ ব্যর্থ মাশরাফি
বিন মুর্তজা। ব্যক্তিগত ১ রানে আন্ড্রে রাসলের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন অধিনায়ক। এরপর দলের হাল ধরেন শান্ত ও মুশফিক। দুজনে
মিলে গড়েন ৭৯ রানের অনবদ্য
এক জুটি।
এরপরেই
খেল হারিয়ে ফেলেন টুর্নামেন্টে ব্যাক্তিগত ৫০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করা শান্ত। ৬৪ রান করে
মইন আলীর বল সামনে এসে
খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি। শান্তর বিদায়ের পর আসেন রায়ান
বার্ল। শুরু থেকেই এই জিম্বাইয়ানকে ফেরানোর
একাধিক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি ভিক্টোরিয়ান্স ফিল্ডাররা। শেষমেশ ১৩ রানে করে
মুস্তাফিজের বলে কাটা পড়েন তিনি। রায়ান বার্লের বিদায়ের পরে ক্রিজে আসলেন আর গেলেন জর্জ
লিন্ডে ও থিসেরা পেরারা।
দুইবার জীবন পাওয়া লিন্ডে ফিরেন ৯ রান করে।
তাকেও ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজ। এক প্রান্তে উইকেটে
অবিচল ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিক। শেষ পর্যন্ত মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ১৭৫ রানের লড়াকু পুঁজি পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। কুমিল্লার হয়ে সর্বোচ্চ দুই উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।
জবাবে
১৭৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সিলেটের বোলারদের উপর শুরু থেকেই চওড়া হন কুমিল্লার দুই
ওপেনার লিটন কুমার দাস ও সুনিল নারাইন।
প্রথম দুই ওভারেই হাঁকান দুই বাউন্ডারি ও দুই ওভার
বাউন্ডারি। তবে তাদের লাগাম টেনে ধরতে বেশি সময় নেয়নি সিলেট বোলাররা। দলীয় ২৭ রানে দ্বিতীয়
ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সুনিল নারাইনকে ফেরান রুবেল হোসেন। আউট হওয়ার আগে নারাইন এক ছয় এক
চারে করেন দশ রান। তিনে
ব্যাট করতে নামা কুমিল্লার অধিনায়ক ও ছিলেন নিষ্প্রভ।
দলীয় ৩৪ রানে জর্জ
লিন্ডের মাইন্ড গেমে ধরা পড়েন ইমরুল। তবে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে পাওয়ার প্লেতে ৪৯ রান এনে
দেন কুমিল্লার দুই ব্যাটার
লিটন-চালর্স।
এরপর সিলেট বোলারদের উপর রীতিমত ঝড় তোলেন লিটন-চার্লস জুটি। ব্যাক্তিগত ৭ রানে চার্লসের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন রুবেল হোসেন, তার মাসুল দিতে হলো দলকে। প্রথম দশ ওভারে আর উইকেট হারায়নি কুমিল্লা। ফলে দুই উইকেট হারিয়ে দশ ওভারে কুমিল্লার বোর্ডে জমা হয় ৮৬ রান। সমীকরণ যখন ৪৪ বলে ৭২ রানের তখন উইকেটে সেট হওয়া লিটনকে ফেরান রুবেল হোসেন। ভেঙ্গে যায় লিটন-চালর্সের ৭০ রানের অনবদ্য জুটি। আউট হওয়ার আগে ৩৯ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। লিটন আউট হওয়ার পরে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে কুমিল্লার নীড রান রেট। জয়ের জন্য কুমিল্লার প্রয়োজন হয় শেষ ৬ ওভারে ৬০ রান। তখনো উইকেটে ভরসার প্রতীক হয়ে ছিলেন জনসন চালর্স ও মইন আলী। তবে ইনিংসের ১৫ তম ওভারে এসে মাত্র তিন রান দিয়ে খেলাটা নিজদের দিকে নিয়ে যান সিলেটের বোলার জর্জ লিন্ডে। ক্রমশই বাড়তে থাকে রিকায়ার্ড রান রেট। উইকেটে থেকেও দলের প্রয়োজন অনুযায়ী রান নিতে পারছিলেন ক্যারিবিয়ান তারকা জনসন চার্লস। ইনিংসের ১৬ তম ওভারে রুবেলের উপর জমে থাকা সব রাগ ঝেড়ে ফেলেন ক্যারিবিয়ান এই তারকা। আর মুহূর্তে বদলে যায় ম্যাচের ভাগ্য। দলের যখন শেষ চার ওভারে প্রয়োজন ৫২ রানের। তখনি দানবীয় ইনিংস খেলেন চালর্স। রুবেলের এক ওভারে ২৩ রান তুলে ম্যাচকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আনেন ডানহাতি এই ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত আর কোন প্রতিরোধ গড়তে পারেননি সিলেটের বোলাররা। ফলে ৭ উইকেট ও চার বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭