ইনসাইড পলিটিক্স

সিঙ্গাপুর থেকে এসে কি বদলে যাবেন ফখরুল?


প্রকাশ: 17/02/2023


Thumbnail

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে আকস্মিকভাবে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন তিনি। জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের সুপ্রিম ভার্সুলার অ্যান্ড আন্তর্জাতিক ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। দেশে এসেই বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জানান, ভালো চিকিৎসা হয়েছে, এখন তিনি বেশে ভালো আছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুর থেকে এসেই বদলে যাবেন কিনা? এর আগের ঘটনা প্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, যখনই মির্জা ফখরুল ইসলাম বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরেন তখনই তিনি সরকারের প্রতি অনেক নমনীয় হয়েছেন এবং সরকারের সাথে সমঝোতা পূর্ণ আচরণ করেছেন। সেই ধারা এবারও অব্যাহত থাকবে কিনা সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন বিএনপির প্রধান নেতা এবং তার নেতৃত্বে বিএনপি আন্দোলন করছিল। তিনি গ্রেফতার হওয়ার পর বিএনপির আন্দোলন অনেকখানি স্তিমিত হয়ে গেছে। এই নিয়ে কোনো সংশয় নেই কোনো মহলেরই। আবার মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারণেই শেষ পর্যন্ত বিএনপি আন্দোলন থেকে নির্বাচনমুখী হবে এমন ধারণা পোষণ করেন অনেকে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের কথা গোপন নেই। বিভিন্ন সময়ে সরকারের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া, দেন-দরবার এবং আলাপ-আলোচনার খবর বিএনপিতে ওপেন সিক্রেট। বিশেষ করে ২০১৮ নির্বাচনে বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ বিএনপিতে একটি বিরাট রহস্যময় প্রশ্ন। ওই সময় কেন তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়েছিলেন, কামাল হোসেনের নেতৃতে মেনে নিয়েছিলেন এবং বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়েছিলেন তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে এখনও নানামুখী আলোচনা হয়। যদিও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘনিষ্ঠরা বলেন, যা কিছু হয়েছে, সব কিছুই তারেক জিয়ার নির্দেশে হয়েছে এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলন করেছেন মাত্র। কিন্তু অনেকে মনে করেন, তারেক জিয়াকে প্রভাবিত করা এবং নির্বাচন সম্পর্কে কিছু ভুল তথ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। 

তাছাড়া বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগেই সরকারের সাথে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছিলেন, তারপর তিনি তারেক জিয়াকে এ ব্যাপারে বুঝিয়েছিলেন। বিএনপির নেতারা এটাও মনে করেন যে, তারেক জিয়া যেহেতু বিদেশে থাকেন সেহেতু তাকে বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরা এবং নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে যে শক্তিশালী যুক্তি গুলো রয়েছে সে যুক্তি গুলোকে উপস্থাপন করা জরুরি ছিল। বিএনপির অনেক নেতাই সন্দেহ করেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সমঝোতার অংশ হিসেবে। হয়তো এই সময় তার সাথে একটি দরকষাকষি এবং বোঝাপড়ার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য কেউ দিতে পারেনি। বিএনপির কোন কোন নেতার ধারণা, মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে একটি সমঝোতার জন্য তাকে আটক করা হয়েছে এবং তার সঙ্গে মির্জা আব্বাসও রয়েছে। আর আমানউল্লাহ আমানকে ছেড়ে দিয়ে বিএনপির মধ্যে সরকার বিভ্রান্তি সৃষ্টির কৌশল নিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন কোন ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তিনি কি আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যে আগের মত ব্যস্ত হয়ে থাকবেন নাকি আন্দোলনের লাগাম টেনে ধরবেন?


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭