ইনসাইড বাংলাদেশ

বিশ্ব কূটনীতিকদের নজর ঢাকায়, সরকারের মাথাব্যথা যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশ: 17/02/2023


Thumbnail

গত চার মাসে ঢাকা সফর করেছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় এক ডজন কূটনীতিক। এর মধ্যে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরই চারজন কূটনীতিক ঢাকা সফর করেছেন। এতো কম এতো বেশি কূটনীতিকদের ঢাকা সফর নিয়ে রাজনৈতিকসহ সব মহলে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। এই কৌতুহল আরও বেড়েছে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এর গভীর উদ্বেগ। এর বাইরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎরতা চোখের পড়ার মতো। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ সুষ্ঠু করার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত নিজেদের অনড় অবস্থান ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ  না করে সেই নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে সেটি নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্ন রয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন কূটনীতিক মেরুকরণ চলছে নির্বাচনকে ঘিরে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে বলে একাধিক মহল মনে করছেন। তাদের মতে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচন যেভাবে করতে চায় সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা এখনও যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কি হবে তার ওপর নির্ভর করছে পশ্চিমা দেশগুলোর ভূমিকা। আর এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করেই ইইউও রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমা কূটনীতিকরা বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে বলে মনে করেন কোনো কোনো মহল।

কিন্তু আওয়ামী লীগ বলছে, সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন হতে পারে না। যা কিছু হবে সংবিধানের আওতায় হবে। নির্বাচনের আগে ঢাকায় বিদেশিদের আনাগোনা বৃদ্ধি নিয়েও কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই আওয়ামী লীগের। বরং দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী দিনের সরকার নির্বাচিত হোক এবং বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক সেটিই আমরা চাই। অন্য বিদেশি সংস্থাগুলোকেও আমরা সেটি জানাচ্ছি।’ 

নির্বাচনের এক বছর পূর্বে বিদেশিদের আনাগোনা বৃদ্ধি’ নিয়ে তিনি বলেন, জিডিপির বিচারে ২৫টি দেশকে পেছনে ফেলে গত ১৪ বছরে আমরা জিডিপিতে ৬০তম থেকে  ৩৫তম এবং পিপিপিতে ৩১তম অর্থনীতির দেশে উন্নীত হয়েছি। আগামী কয়েক বছরে দেশের ক্রম আরও ওপরে উঠবে। বাংলাদেশ এখন ‘ইকোনোমিকালি ইমার্জিং টাইগার’, সেজন্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। সেই আগ্রহ থেকেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং বিভিন্ন অর্থলগ্নিকারী ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের আনাগোনা অতীতের তুলনায় বেড়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, যে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা, বাজার বড় এবং ক্রম সম্প্রসারমান, সেখানে অন্যান্য দেশ যারা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চায় তাদের আগ্রহ বাড়বে এটা খুব স্বাভাবিক এবং সে কারণেই তাদের আনাগোনা, আসা-যাওয়া বেড়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত উপমহাদেশের বিষয়ে ভারতের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল থাকে। কিন্তু এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের ব্যাপারে আলাদা এজেন্ডা রয়েছে বলে কোনো কোনো কূটনৈতিক মনে করছেন। তারা মনে করছেন যে, নির্বাচনে যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি অংশগ্রহণ না করে এবং নির্বাচন যদি বিশ্বাসযোগ্য না হয় সেক্ষেত্রে তারা এই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে স্বীকৃতির নাও দিতে পারে। আর সেটি যদি তাহলে এটিই হবে সরকারের জন্য একমাত্র মাথাব্যথার কারণ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭