নওগাঁর মহাদেবপুরে স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় গৃহবধু মুরশিদা বেগম (২৫)কে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের শশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে উপজেলার চকরাজা গ্রামে নিহতের বাবা মোশারফ হোসেনের বাড়িতে দাফন সম্পূর্ণ করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী শাহিদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার মহাদেবপুর সদর ইউনিয়নের জন্তিগ্রাম এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলেন- শাহিদুল ইসলামের বাবা ছইফুদ্দিন ও তার মা শাহারা খাতুন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জন্তি গ্রামের ছয়ফুদ্দিনের ছেলে শাহিদুল ইসলামের সাথে গত দুই বছর আগে চকরাজা গ্রামে মোসারফ হোসেনের মেয়ে মুরশিদা বেগমের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে আট মাস বয়সি সোবহানা নামে এক কন্যা সন্তান আছে। এরমধ্যে শাহিদুল ইসলাম তার আপন ভাবীর সাথে পরকীয়ার জড়িয়ে পরে। এরপর থেকে সংসারে কলোহ শুরু হয়। কারণে অকারণে প্রায় স্ত্রী মুরশিদাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন শাহিদুল। বুধবার সন্ধ্যার কোন এক সময় গলায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। তালার ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে।
নিহতের বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, জামাই শাহিদুল তার এক ভাবীর সাথে পরকীয়ায় জড়ানোর পর থেকে মেয়েকে অকারণে মারপিট করতো। মেয়ে পরকীয়ার বিষয়টি আমাদেরকে জানালে আমরা ধর্য্য সহকারে তাকে সংসার করার কথা জানায়। ইদানিং মেয়েকে কারণে অকরণে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করত। প্রতিবেশীর কাছ থেকে ফোনে জানতে পারি মেয়ে মারা গেছে। পরে আমার ছেলে ও আত্মীয়-স্বজনসহ জন্তিগ্রামে গিয়ে দেখি বাড়ির বারান্দায় কাপড় দিয়ে মেয়ের মরদেহ ঢাকা অবস্থায় আছে। তার গলার ডান পার্শ্বে থুতনির নিচে কালশিরা দাগ দেখা যায়। পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্যে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন- পরকীয়ার কারণে মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। মেয়ে হত্যা বিচার দাবী করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েক জন বলেন, মুরশিদার দিয়ে শাহিদুলে তিন বিয়ে করা হয়। পরকীয়ার কারণে এর পূর্বের দুইটি স্ত্রী তার সংসার ছেড়ে চলে যায়।
মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, ঘটনার পর নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। নিহতের বাবা মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে স্বামী, শশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। মামলার পর নিহতের শশুর ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার বিকেলে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে নিহতের স্বামী শাহিদুল পলাতক থাকায় তাকে আটক করা যায়নি। তবে তাকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।