ইনসাইড গ্রাউন্ড

বিপিএলে নজর কেড়েছেন দেশের যে তরুণরা


প্রকাশ: 19/02/2023


Thumbnail

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএল সমর্থকদের জন্য যেমন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট উপভোগ করার বড় মঞ্চ তেমনি ঘরোয়া লিগের খেলোয়াড়দের নিজের প্রতিভা প্রমাণেরও বড় একটা সুযোগ। সাকিব-তামিম এবং বিদেশি তারকাদের সাথে মাঠের লড়াইয়ে নিজেদের প্রতিভার প্রমাণ দিয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নেওয়ার বড় মঞ্চ এটি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ বিপিএল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখান থেকে উঠে আসতে পারে জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ তারকারা। তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পেরেছেন দেশের কয়জন ক্রিকেটার সেটিই বড় প্রশ্ন। অতীত বিপিএল থেকে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা হাতেগোনা। যারা জাতীয় দলে এসেছেন তারাও ধারাবাহিক ছিলেন না পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে, ফলে বাদ পড়তে হয়েছে জাতীয় দল থেকে। 

নবম বিপিএলে এমন কয়েকজন দেশিয় ক্রিকেটার ব্যাটে বলে আলো ছড়িয়েছেন। যারা হতে পারেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের আগামীর ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবির সুনজর থাকলে তারাও হয়ে উঠতে পারেন পরবর্তীর সাকিব-তামিম। নবম বিপিএলে এমন কয়েকজন খেলোয়াড় যারা মাঠের পারফরম্যান্সে সবার শীর্ষে না থাকলেও দলের প্রয়োজনে জ্বলে উঠেছেন মাঝে মধ্যেই। নিজ নিজ দলের জয়েও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। দেখে নেওয়া যাক এমন কয়েকজন  তরুণ উদীয়মান ক্রিকেটারকে। 

সাফল্যের দিক দিয়ে এ তালিকায় সবার উপরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের স্পিন বোলার তানভীর ইসলাম। নবম বিপিএল আসরে তানভীরের দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ঘরে তুলেছে চতুর্থবারের মতো শিরোপা। দলকে চ্যাম্পিয়ন করার পিছনে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন তানভীর। পুরো টুর্নামেন্টে বল হাতে দারুণ সময় কাটানো তানভীর ১৭ উইকেট নিয়ে পেয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির পুরষ্কার। যদিও পুরষ্কার টা ভাগ করে নিতে হয়েছে তার সমান ১৭ উইকেট নেওয়া রংপুর রাইডার্সের বোলার হাসান মাহমুদের সাথে। সদ্য শেষ হওয়া নবম বিপিএলে কুমিল্লার হয়ে তানভীর মাঠে নেমেছেন ১২ ম্যাচ। ৬.৩৬ ইকোনমিতে বল করে শিকার করেছেন ১৭ উইকেট সর্বোচ্চ বোলিং ফিগার ৩৩ রান দিয়ে চার উইকেট। এমন পারফরম্যান্স বিবেচনায় হয়ত খুব দ্রুতই জাতীয় দলের র‍্যাডারে আসতে পারেন ২৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

বাংলাদেশ জাতীয় দলে সাম্প্রতিক সময়ে মাঠের লড়াইয়ে বেশ ভালো করছে পেসার ইউনিট। তাদের সাথে নতুন সংযোজন হতে পারেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে মাঠ কাঁপানো রেজাউর রহমান রাজা। যদিও এর আগে সাদা পোশাকে জাতীয় দলের স্কোয়াডে ডাক পেয়েছিলেন তিনি। তবে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে এখনো মাঠে নামা হয়নি ২৪ বছর বয়সী এই পেসারের। নবম বিপিএল আসরে তার দল সিলেট স্ট্রাইকার্স প্রথমবারের মতো খেলেছে ফাইনাল। রাজার দল ফাইনাল খেললেও রাজা মাঠে নেমেছেন ৮ টি ম্যাচে। এর মধ্যেই শিকার করেছেন প্রতিপক্ষের ১৩ উইকেট। রাউন্ড রবিন লিগে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে করেছেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিংও। ১৪ রান দিয়ে সে ম্যাচে চার উইকেট শিকার করেছেন রাজা। বলা যায় ওই ম্যাচ একাই জিতিয়েছেন তিনি। নবম বিপিএল আসরে ১৩ উইকেট শিকার করে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির অষ্টম স্থানে। বিদেশি কোচদের তত্বাবধানে আসলে রাজা ও হতে পারেন দেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।

নবম বিপিএল আসরে সেরা উইকেট শিকারির তালিকার দশ নম্বরে থাকা মোহাম্মদ নিহাদুজ্জামান খেলেছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে। গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়েছে তার দল। দল বাদ পড়লেও বল হাতে নিজেকে প্রমাণ করেছেন নিহাদুজ্জামান। চট্টগ্রামের হয়ে ৯ ম্যাচ মাঠে নেমে শিকার করেছেন ১২ উইকেট। বোলিং ইকোনমি ছিলো গড়পড়তা ৭.২৬। তবে ঘরোয়া লিগের পরীক্ষিত পারফর্মার ২৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে করেছেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ১৭ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।

বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৯ দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার শেষ মুহূর্তের দৃশ্য যাদের মনে আছে তারা নিশ্চয় রাকিবুল ইসলামকে ভুলে যাওয়ার কথা নয়। অধিনায়ক আকবর আলীর সাথে দলের জয়ের শেষ রানটা এসেছিলো রাকিবুলের ব্যাট থেকেই। তবে মূলত তিনি একজন বাঁহাতি স্পিনার। নবম বিপিএল আসরে রংপুর রাইডার্সের হয়ে খেলেছেন তিনি। তার দল তৃতীয় অবস্থানে থেকে শেষ করে নবম বিপিএল আসর। দল ফাইনালে উঠতে না পারলেও বল হাতে ভালো সময় পার করেছেন রাকিবুল ১১ ম্যাচে ১১ উইকেট শিকার জায়গা করে নিয়েছেন সেরা উইকেট শিকারির ১৪ নম্বর স্থানে। তবে ইনিংসের শুরুতেই দলকে উইকেট এনে দিয়ে পটু বাঁহাতি এ স্পিনার। কারণ নতুন বলে টার্ন করিয়ে ব্যাটসম্যানদের বোকা বানাতে পারেন রাকিবুল। রাকিবুল হাসানের বড় দক্ষতা রান কম দিয়ে বল ডট দিতে পারেন বেশি। বিপিএলেও করিয়ে দেখিয়েছেন তিনি বিপিএলে রাকিবুলের ইকোনমি ছিলো মাত্র ৬.৪৭।

নবম বিপিএল আসরে গতির ঝড়তোলা বোলার খুলনা টাইগার্সের নাহিদ রানা। চলতি বিপিএলে ১৪৮ গতির বল করে চমকে দিয়েছেন ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সকলকে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে  তাসকিন আহমেদ ছাড়া এত গতির বল করতে দেখা যায়নি আর কোন বোলারকে। তাই তরুণ নাহিদকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি। নবম বিপিএলে খুলনা টাইগার্সের হয়ে মাত্র ৩ ম্যাচ মাঠে নেমেছেন ডানহাতি এই পেসার। তিন ম্যাচে শিকার করেছেন দুই উইকেট। বিপিএল আসরে আহামরি কোন অর্জন না থাকলেও গতির ঝড়তোলা এই পেসারকে তৈরি করে নিলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশকে পরিচয় করাবেন নতুন ভাবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭