ইনসাইড পলিটিক্স

অকেজো ইভিএম-এ নির্বাচন বিপর্যস্ত হবে: জি এম কাদের


প্রকাশ: 19/02/2023


Thumbnail

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ ইভিএম বিশ্বাস করে না। ইভিএম- এ ভোট দিতে চায় না। দেশের মানুষ মনে করে ইভিএম হচ্ছে ভোট চুরির আধুনিক মেশিন। নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে একমাত্র আওয়ামীলীগ ও তাদের মিত্র কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সবাই এর বিপক্ষে মতামত দিয়েছে, তারপরও নির্বাচন কমিশন ইভিএম এ ভোট নিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে,  এমনকি নির্বাচন কমিশন অচল ও অকেজো ইভিএম সচল করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। দেশের মানুষ এই উদ্যোগকে সন্দেহের চোখে দেখছে। ইভিএম এর মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ইভিএম এর উপর দেশের ৯০ ভাগ মানুষের আস্থা নেই। আমরা কারচুপির নির্বাচন চাই না। কারচুপির নির্বাচনে আমরা জিততেও চাই না। আমরা চাই মানুষের ভোটাধিকার। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষ নির্বাচনের পক্ষে।’

রোবাবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কাকরাইলস্থ জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় মৎস্যজীবি পার্টির সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এস কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমের দেয়া তথ্যে আমরা জানতে পেরেছি, ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেড় লাখ ইভিএম ক্রয় করেছিল নির্বাচন কমিশন। গত ৪ মাস ধরে টানা কিউসি করে ৪০ হাজার ইভিএমে ত্রুটি পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম দিয়ে ভোট গ্রহণ সম্ভব?’ 

তিনি বলেন, ‘সচল ইভিএম দিয়ে ভোট গ্রহণেই নানা বিড়ম্বনায় পড়ছেন সাধারণ ভোটাররা। কখনো ফিঙ্গার মিলছে না, আবার কখনো অকেজো হয়ে যাচ্ছে ইভিএম। এমন বাস্তবতায় অকেজো ইভিএম নির্বাচনের জন্য তৈরি করা দুরভিসন্ধিমূলক। আমরা মনে করি, অকেজো ইভিএম-এ নির্বাচনই বিপর্যস্ত হবে। ইভিএম অকেজো হওয়ায় অনেক সময় নিজস্ব লোক দিয়ে হাতে লেখা ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের মানুষ মনে করছে সরকার ভোটের ফলাফল পাল্টে দিতেই ইভিএম এ নির্বাচন করতে চাচ্ছে।’

 জি এম কাদের বলেন, ‘এখন রাষ্ট্র, সরকার ও সরকারি দল একাকার হয়ে গেছে। সরকারি দলের হয়ে কাজ করছে রাষ্ট্রের কর্মচারিরা। সরকারের কর্মচারিরা দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করবেন। সরকারের কোন অন্যায় আদেশ মানতে তারা বাধ্য নয়। পুলিশ ও প্রশাসনকে মনে রাখতে হবে তারা রাষ্ট্রের কর্মচারি। দেশের প্রতিটি দল বা মানুষকে সমান চোখে দেখতে হবে। সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে।’

প্রধান অতিথিদের বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই দেশে ফুটপাত দখল করে চাঁদাবাজি চলছে। সড়ক মহাসড়ক দখল করেও চলছে চাঁদাবাজি। এখন দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের পরিবর্তে দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমন চলছে। এমন একটি দেশের জন্য আমরা রাজনীতি করছি না। এখন লুটেরারা বেশি ইজ্জত পায়, যারা লুটপাট করে তাদের সমাজে সম্মানিত মানুষ মনে করা হচ্ছে। আর যারা সৎ ও আদর্শবান তাদের সমাজে অযোগ্য এবং বোকা মানুষ মনে করা হচ্ছে। দেশে মানুষের কোন নিরাপত্তা নেই। সম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে মানুষ।’ 

তিনি বলেন, পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯ বছর দেশ পরিচালনার সময়ে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি সুশাসন ভোগ করেছে দেশের মানুষ। জাতীয় পার্টির আমলে তুলনামুলক ভাবে অনেক বেশি আইনের শাসন ছিলো। আমরা দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ণের জন্য রাজনীতি করছি। ভালো কাজের জন্য ভালো মূল্য দিতে হবে। তাই, দেশ ও মানুষের কল্যানের জন্য ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে নেতা- কমীর্দের প্রতি আহ্বান জানান।

বিরোধী দলীয় উপনেতা বলেন,‘পল্লীবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন জাল যার, জলা যার। প্রকৃত জেলেরাই যেনো জাতীয় সম্পদের ওপর ভোগ দখল করতে পারে। কিন্তু ১৯৯১ সালের পর থেকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ইজারার নামে নিজ দলীয় লোকের স্বার্থ দেখেছে। এতে, প্রকৃত জেলেরা চরমভাবে বঞ্চিত হয়েছে।’

 জাতীয় পার্টির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে এই মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, জাতীয় মৎস্যজীবি পার্টির সভাপতি আজহারুল ইসলাম সরকার, সাধারণ সম্পাদক মীর সামছুল আলম লিপটন, কেন্দ্রীয় নেতা পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী, হাফিজুর রহমান চৌধুরী, আবুল কাশেম, বাবু রতন সরকার, ফারুক হোসেন, গাজী কামরুদ্দিন, মাহমুদুল হাসান উজ্জ্বল, আনোয়ার হোসেন, আলমগীর হোসেন, আকাশ দেওয়ান। 

মৎস্যজীবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর রিপনের সঞ্চালনায় এই সভায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভুঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, ভাইস-চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক নির্মল দাস, হুমায়ুন খান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন দেওয়ান, এম এ সোবহান, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক কেন্দ্রীয় সদস্য মো. আবু ওয়াহাবসহ জাতীয় মৎস্যজীবি পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭