ইনসাইড বাংলাদেশ

নীলফামারী সরকারি কলেজে পিঠা উৎসব


প্রকাশ: 22/02/2023


Thumbnail

বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে পিঠা-পুলি। দুধ চিতই, পাটিসাপটা, নকশি পিঠা, দুধরাজ, ঝিনুক পিঠা, জামাই পিঠা সহ আরো বাহারি ধরনের এত সব পিঠার নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে। বাংলা ও বাঙালির ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে নীলফামারী সরকারি কলেজ চত্বরে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসব। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও নগরায়নের ফলে এই পিঠা উৎসব প্রায় বিলুপ্তির পথে হলেও হরেক রকমের পিঠার সমাগমে পিঠার উৎসবে মেতে উঠেছে পুরো কলেজ। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এবং পুরোনো দিনের সব বাহারি পিঠার সমাহার সমাহার ঘটেছে কলেজ প্রাঙ্গণে।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নীলফামারী সরকারি কলেজের কাশফুল সাংস্কৃতি অঙ্গন এর আয়োজনে দুই দিন ব্যাপী পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিদারুল ইসলাম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নীলফামারী সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগীয় প্রধান ও কাশফুল সাংস্কৃতিক অঙ্গন এর আহবায়ক প্রফেসর মোঃ তারিকুল আলম এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন নীলফামারী সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া, কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোঃ আনিছুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক মনিরা জেসমিন, অর্থ সম্পাদক মোঃ আবু জাহিদ সাদেক।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘ পিঠা উৎসব বাঙালিদের হাজার বছরের সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে। কাশফুল সাংস্কৃতি অঙ্গনের এ ধরনের আয়োজন করে আমাদের আবহমান বাংলার ঐতিহ্যকেই স্মরণ করিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নানা রকম পিঠাপুলির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। এই উৎসবের কারণে আমরা আমাদের গ্রামের সেই পিঠা-পুলির ঘ্রাণ নিতে পারছি, স্বাদ নিতে পারছি। এত সুন্দর একটি আয়োজন করার জন্য কাশফুল সাংস্কৃতি অঙ্গনকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।’

পিঠা উৎসবের প্রথমদিনে পিঠার স্টলগুলোতে ছিল উপচে পরা ভীড়। যেন মধুর ঘ্রাণে মৌমাছির ঝাঁক মধু সংগ্রহে ব্যস্ত। পিঠা উৎসব উপভোগ করতে আসা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আলপনা আক্তার মৌমিতা বলেন,‘বিদেশী অনেক খাবার আমাদের দেশে জায়গা করে নিয়েছে। যার ফলে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার নানা ঐতিহ্যবাহী পিঠা। প্রতিবছর এমন পিঠা উসবের আয়োজন করা হলে নতুন প্রজন্ম দেশি পিঠায় পরিচিত হতে পারবে।’

একই বিভাগের শিক্ষার্থী রিদওয়ানুম ইকরা বলেন, ‘পিঠা শুধু খাবার নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে।’

দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বৃষ্টি আক্তার বলেন,‘এই পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত না হলে আমরা বুঝতেই পারতাম না আমাদের দেশে ঐতিহ্যবাহী এত ধরনের পিঠা আছে। আমরা বাড়ীতে শুধু তিন থেকে চার ধরনের পিঠা দেখতে পাই। কিন্তু এখানে এসে দেখছি নানা ধরনের পিঠার সমাহার।’

উৎসবের এই আমেজে কথা হয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল করিমের সাথে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট থেকে কলেজের শিক্ষার্থীরা এ উৎসবে অংশগ্রহণ করে। বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে এই উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উৎসবে শিক্ষার্থীদের তৈরী স্টলগুলো ছিল নানা বৈচিত্রের পিঠার সমারোহ।’

কাশফুল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের আহবায়ক প্রফেসর মোঃ তারিকুল আলম বলেন, ‘বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব যাতে হারিয়ে না যায় তাই আমরা এ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। আশা করছি এই উৎসবে আমাদের লক্ষ্য বাঙালি ঐতিহ্যকে ধারণ করার একটি প্রবণতা সবার মাঝে গড়ে উঠবে। এ সংস্কৃতির ধারক, বাহক ও রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই রঙ বেরঙ্গের পিঠা তৈরিতে নিয়োজিত শিক্ষার্থীসহ যারা এই পিঠা উৎসবে যোগ দিয়েছে তাদের সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’

দুইদিন ব্যাপী বসন্ত বরণ ও পিঠা উৎসবে নীলফামারী সরকারি কলেজের ১৪টি বিভাগ সহ কলেজের দুটি সংগঠন অংশগ্রহণ করেন। আগামীকাল ২৩ ফেব্রুয়ারি এই পিঠা উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭