টেক ইনসাইড

প্রযুক্তিজগতে ভুল সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/02/2018


Thumbnail

সার্চ ইঞ্জিনের জায়ান্ট গুগল তাদের ছবি সার্চ ও ডাউনলোড নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে বিতর্কের মুখে পড়েছে। গুগলের গেটি প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহে থাকা প্রায় ১০ হাজার কোটি ছবি ইচ্ছে করলেই আর ডাউনলোড করতে পারবেন না নেটিজেনরা। এখন থেকে গুগলে সার্চ করে নির্দিষ্ট কোনো ছবি খুঁজলে আলাদা করে কোনো ছবি দেখা যায় না। ছবির কপিরাইট সুরক্ষিত রাখতেই এমন ব্যবস্থা নিয়েছে গুগল। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এতে গুগল তাদের জনপ্রিয়তা হারাবে। কারণ এতদিন এই সেবা সবার জন্য, সবসময়ের জন্য মুক্ত ছিল।

শুধু গুগলই নয়, আরও বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও এরকম অনেক ভুল ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কিত হয়েছে। আবার বিপুল অংকের ক্ষতিরও শিকার হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। আজ এমনই কয়েকটি ইন্টারনেট জায়ান্টের ভুল সিদ্ধান্তের কথা জানালাম।

ইয়াহু
২০০৮ সালে বেশ বড় একটি ধাক্কা খায় ইয়াহু। টিকে থাকতে ওই বছর বিপুল সংখ্যক কর্মীও ছাঁটাই করতে হয়। ওই বছরই ৪৪.৬ বিলিয়ন ডলারে ইয়াহুকে কিনে নিতে চেয়েছিল মাইক্রোসফট। কিন্তু প্রস্তাবিত এই মূল্যে ইয়াহুকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে, এমন যুক্তি দিয়ে তাতে রাজি হয়নি ইয়াহুর পরিচালনা পর্ষদ। পরবর্তী তিন বছরে অবশ্য ইয়াহুর বাজারমূল্য ২২.২৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

২০১২ সালে আবারও ধাক্কা খায় ইয়াহু। নতুন সিইও হিসেবে স্কট থম্পসনের দায়িত্ব নেওয়ার পর কর্মী ছাঁটাইয়ের গুজব ছড়িয়ে পড়ে। চিফ প্রোডাক্ট অফিসার ব্ল্যাক আরভিংসহ বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় নির্বাহী চাকরি ছেড়ে দেন। এরই কিছুদিন পর ২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার ঘোষণা দেয় ইয়াহু। তবে খুব বেশিদিন থম্পসন এই দায়িত্বে থাকতে পারেননি। একই বছরের জুলাইতে নতুন সিইও হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন মারিসা মেয়ার। মেয়ার পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধিগ্রহণ সম্পন্ন করে ইয়াহু। এর মধ্যে আছে ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টাম্বলার। ২০১৩ সালে অপর প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রকমেল্ট অধিগ্রহণ করে ইয়াহু।

গুগল চালু হওয়ার ১৯৯৮ সালে মাত্র ১ মিলিয়ন ডলারে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিল ইয়াহু। কিন্তু তখন ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনের এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ইয়াহু তখন হয়তো ভেবেছিল অনলাইন জগতে তাদের এই একক আধিপত্য বজায় থাকবে যুগ যুগ ধরে। মজার বিষয় হলো, এই সুযোগ আবারও পেয়েছিল ইয়াহু। ২০০২ সালে ৩ বিলিয়ন ডলারে নিজেদের স্টার্টআপ বিক্রির প্রস্তাব নিয়ে আবারও ইয়াহুর দরজায় কড়া নেড়েছিলেন পেজ ও ব্রিন। কিন্তু সেবারও রাজি হয়নি ইয়াহু।

মাইক্রোসফট
অতীতে মাইক্রোসফট বড় একটি ভুল করে ফেলেছে বলে মনে করতেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা। কী ছিল সেই ভুল? সত্য নাদেলার মতে, মাইক্রোসফট ভেবেছিল চিরদিনের মতো কম্পিউটার বা ল্যাপটপের যুগই চলবে। তাই প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সময়ে স্মার্টফোনের রাজ্যে ঢুকতে ব্যর্থ হয়েছিল তারা।
এছাড়াও একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে মাইক্রোসফট মুখ থুবড়ে পড়েছে বারবার। প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপেল তার ব্যবহারকারীদের দিয়েছে অ্যাপস্টোর যেখানে লাখ লাখ অ্যাপ্লিকেশনের ভেতর থেকে তারা বেছে নিতে পারেন তাদের পছন্দসই অ্যাপ, যা সকল অ্যাপল ডিভাইসে একই সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে। শুধু ডিভাইস বিক্রি করে নয়, বরং অ্যাপস্টোর থেকেই আসে অ্যাপলের আয়ের ৩০ শতাংশ। কম্পিউটারের জগতে একক আধিপত্য নিয়ে মাইক্রোসফট বহু বছর আগেই ঠিক এ রকম একটি একক প্লাটফর্ম তৈরি করতে পারত যেখানে তার সকল ডিভাইসের জন্য কম্প্যাটিবল অ্যাপ্লিকেশন পাওয়া যাবে। কিন্তু সম্ভবত নিজ ডিভাইসের সফটওয়্যার তৈরির একক কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে রাখার জন্যই এ পথে পা বাড়ায়নি মাইক্রোসফট। এটা তাদের ভুল ছিল বলে মনে করা হয়।

অ্যাপল
অ্যাপলের একসময় ঘোর দুর্দিনে মাইক্রোসফটের বিনিয়োগ পেতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। মাইক্রোসফট তখন অ্যাপলে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছিল। তা থেকেও অ্যাপল উৎরে উঠতে পারেনি।
আবার প্রশ্ন ওঠে, অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসকে অ্যাপল থেকে বিতাড়িত করাও তাদের একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।

গত বছরে অ্যাপল কোম্পানি ইচ্ছে করে পুরোনো মডেলের আইফোন স্নো করে দেয় যাতে লোকে নতুন মডেল কিনতে বাধ্য হয়। এতে করে তারা তুমুল বিতর্কে পড়ে এবং এর বিক্রি কমে যায়। আর একই কারণে অ্যাপলের ওপর মানুষের আস্থা অনেকাংশেই হারিয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭