ইনসাইড পলিটিক্স

ট্রাম্পকার্ড ‘খালেদা জিয়া’: নির্ভাবনায় আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 22/02/2023


Thumbnail

চলতি বছরের ডিসেম্বরই অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনে নেমেছে মাঠের বিরোধী দল বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো। নির্দনীয় নিরপক্ষে সরকারের দাবি আদায়ে জোটবদ্ধ হয়ে রাজপথে যুগপৎ আন্দোলন করছে দলগুলো। এদিকে নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ‘সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের’ আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো একটি ‍সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে আসছে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো সরাসরি সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কিন্তু এতো কিছুর পরও নির্ভাবনায় আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলের আন্দোলন, আন্তর্জাতিক চাপ কোনো কিছু নিয়ে উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না দলটির মধ্যে। অর্থাৎ বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন এবং বহিবিশ্বের চাপকে কোনো রকম তোয়াক্কা করতে দেখা যাচ্ছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে। ফলে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিকে কৌতুহল বাড়ছে। আওয়ামী লীগের হাতে কি নির্বাচনের কোনো ট্রাম্পকার্ড আছে? এই প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে সামনে চলে আসছে। আওয়ামী লীগের এমন নির্ভাবনার বিষয়ে ভাবছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো ট্রাম্পকার্ড রয়েছে কিনা এমন প্রশ্ন সবার আগে আসছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের যদি কোনো ট্রাম্পকার্ড থেকে থাকে তাহলে সেটি হবে খালেদা জিয়া। যার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে পারা না–পারা প্রশ্নে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এর বক্তব্য। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না—তাঁর মুক্তির সময় এমন কোনো শর্ত সরকার দেয়নি। অথচ এতাদিন সরকারের পক্ষ থেকে অনেকেই বলে আসছিলেন যে অসুস্থতার জন্য মানবিক কারণে সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া মুক্ত রয়েছেন। ফলে বিএনপি নেত্রী অন্য কোনো কর্মকাণ্ড চালাতে পারবেন না। 

আইনমন্ত্রীর মন্তব্যকে এক অর্থে সমর্থন দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন, খালেদা জিয়া দণ্ডিত, এ অবস্থানটা তার নির্বাচন করার পক্ষে নয়। নির্বাচনের যোগ্য নন তিনি। বিএনপির নেতা হিসেবে তিনি যদি রাজনীতি করতে চান, তাহলে তাকে মুক্তির শর্ত অনুযায়ী করতে হবে। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকও আজকে বলেছেন যে, খালেদা জিয়ার দেশে রাজনীতি করার ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। অর্থাৎ এটা সুস্পষ্ট যে, খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকার ধীরে ধীরে নমনীয় হচ্ছে।

সরকারের এমন নমনীয়তার প্রশ্নে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন উঠছে যে, সামনে খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকার হয়তো আরও নমনীয়তা দেখাবে। বিশেষ করে তাঁর (খালেদা জিয়া) উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে সরকার নমনীয় হবে বলেই জোর আলোচনা চলছে। উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেওয়ার আগে পরে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। কিন্তু সে সময় সরকার এতে অনুমতি দেয়নি। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী খালেদা জিয়া নির্বাচনের অযোগ্য হলেও তার দল যেন নির্বাচনে অংশ নেয় এমন শর্তে তিনি বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর সরকারের পক্ষ থেকে এমন শর্ত দিলে খালেদা জিয়া এবং তাঁর পরিবার মেনে নেবেন বলে তাঁর পারিবাবিক সূত্রে জানা গেছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় করে সরকারের যেকোনো শর্তে মেনে নেওয়া কথা ভাবছে তাঁর পরিবার। আর এমন তথ্যই আওয়ামী লীগকে নির্ভাবনায় রেখেছে। এখন দেখা বিষয় সরকার কিভাবে খালেদা জিয়াকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭