ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বিশ্বের আলোচিত ১০ স্থাপত্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/02/2018


Thumbnail

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে তাঁক লাগানো সব ভবন। এগুলোর নির্মাণশৈলী আর নিদর্শন দেখে রীতিমত অবাক হতে হয়। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি ভবন হাজার বছরেরও বেশি সময়ের জন্য তাদের স্থানে দাঁড়িয়ে আছে। আজ আমরা জানব এমন দশটি ভবন সম্পর্কে।

কলোসিয়াম, ইতালি

কলোসিয়াম ইতালির রোম শহরের একটি উপবৃত্তাকার ছাদবিহীন মঞ্চ। রোমান সাম্রাজ্যে নির্মিত এই গ্যালারি বা মঞ্চকে সেসময়ের শাসকরা গ্লাডিয়েটরসদের মধ্যে লড়াইয়ের প্রতিযোগিতার প্রদর্শনী বা জনগণের উদ্দেশ্যে অন্য কোনো প্রদর্শনীর কাজে ব্যবহার করত। এর নির্মাণে ব্যবহার হয় পাথর এবং কংক্রিট। কলোসিয়াম ৬ একর ভূমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ১৮৯ মিটার এবং প্রস্থ ১৫৬ মিটার। কলোসিয়ামে ছিল ৮০টি প্রবেশদ্বার। সেখানে ৫০ হাজার দর্শক একসঙ্গে বসে গ্লাডয়েটরদের লড়াই উপভোগ করতে পারত। রোমান সাম্রাজ্যের সকল নাগরিকের এই জায়গায় বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার ছিল। ইউনেস্কো কলোসিয়ামকে ১৯৯০ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী অঞ্চলের স্বীকৃতি দেয়। এটি পৃথিবীতে মনুষ্যসৃষ্ট আধুনিক সপ্তাশ্চর্যের একটি বলে নির্বাচিত হয় ২০০৭ সালে।

পিসার লিনিং টাওয়ার, ইতালি

পিসার লিনিং টাওয়ার ইতালির পিসা শহরের ক্যাথিড্রাল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত একটি হেলানো টাওয়ার। এটি বিশ্বের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ভবনগুলোর মধ্যে একটি। এই টাওয়ারের নির্মাণ কাজ ১৩৭২ সালে সম্পন্ন করা হয়েছিলো এবং নির্মাণের সময় এই বিখ্যাত টাওয়ারের একপাশ নরম ভিত্তির কারণে ক্রমশ হেলতে থাকে। বর্তমানে এ অবকাঠামোটিকে রক্ষা করতে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করায় এটির হেলে পড়া রোধ এবং ভূপাতিত হওয়া থেকে রক্ষা করতে পেরেছে। এই লিনিং টাওয়ারের সামনে ছবি তোলা পর্যটকদের খুবই প্রিয়।

সেইন্ট বাসিল ক্যাথিড্রাল, রাশিয়া

অনেক সিনেমাতে এই বিখ্যাত ভবনটি দেখা গেছে। এটি সেইন্ট বাসিলের ক্যাথিড্রাল যা রাশিয়ার মস্কোতে রেড স্কোয়ারে অবস্থিত গীর্জা। এই ভবনটি নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৫৬১ সালে, এটি ১৬০০ সালে ইয়ান গ্রেট বেল টাওয়ার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এটি শহরের মধ্যে সবচেয়ে উঁচু ভবন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। কয়েকটি ছোট গীর্জাসহ মূল ভবনটির বৈশিষ্ট্য বিশ্ব বিখ্যাত হয়ে উঠে। এটি চার শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে।

বুর্জ খলিফা, সংযুক্ত আরব আমিরাত

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত বুর্জ খলিফা বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চতম আকাশচুম্বী অট্টালিকা। এই  দালানের উচ্চতা প্রায় ৮১৮ মিটার । এই চমৎকার ভবনটির নির্মাণ কাজ ২০০৯ সালে সম্পন্ন হয় এবং ২০১০ সালের ৪ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়। দুবাই  আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভের পর এই বুর্জ খলিফা নির্মিত  হয় এবং ভবনটির কাজ শেষ হওয়ার পর স্থাপত্যের ক্ষেত্রে মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের একটি বিশাল অর্জন অর্জিত হয়। এটি নিঃসন্দেহে আরব আমিরাতের সবচেয়ে দর্শনীয় এবং আকর্ষণীয় স্থান। তবে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় স্থান হলো এই ভবনের ১২৪ তলার উপরে প্রকৃতি দর্শনের জন্য পর্যবেক্ষণ ডেকটি। এখান থেকে পুরো দুবাই দেখা যায়।

ডান্সিং বিল্ডিং, চেক রিপাবলিক

পৃথিবীর আশ্চর্যজনক নির্মাণগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।

লা পেদ্রেরা, স্পেন

স্পেনের এই আশ্চর্য বহুতলটি কাসা মিলা নামে বিশ্বজুরে খ্যাত। এই বিল্ডিংয়ের ইতিহাস বলছে, এক দম্পতির জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। আকর্ষণীয় এই বাড়ির যত প্রশংসাই করা হোক কম মনে হবে।

পেট্রোনাস টাওয়ার, মালয়েশিয়া

উচ্চতারদিক থেকে বর্তমান বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়ার টুইন টাওয়ার বা পেট্রোনাস টাওয়ার। তবে ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত এ টাওয়ারটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার ছিল। ৮৮ তলাবিশিষ্ট পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারটির অবস্থান মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের কেন্দ্রস্থলে। এ টাওয়ারটি তৈরি করতে সময় লেগেছে একটানা সাত বছর। মালয়েশিয়ার মোবাইল কোম্পানি মাক্সিস ও তেল কোম্পানি পেট্রোনাসের যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে এই টাওয়ার।

সিডনি অপেরা হাউস

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অবস্থিত সিডনি অপেরা হাউস একটি মাল্টি-ভ্যেনু শিল্পকেন্দ্র,  এটি বিশ শতকের আধুনিক স্থাপত্যকলার অন্যতম এবং বিখ্যাত ভবনগুলোর মধ্যে একটি। অনেক ধরনের অনুষ্ঠান এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এটির আকৃতি নৌকার পালের মতো দেখতে। এই বিস্ময়কর ভবনের নির্মাণ কাজ ১৯৭৩ সালে সম্পন্ন হয় এবং বিট্রেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ একই বছর আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন । এটি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে এটি একটি এবং বিশ্বের অসংখ্য পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এটি ২০০৭ সালে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি লাভ করে।

লোটাস মন্দির, দিল্লী

দিল্লীর নেহরম্ন প্রাসাদের বিপরীতে অনেকখানি উন্মুক্ত জায়গায় লোটাস মন্দির স্থাপিত। বাহাই সম্প্রদায়ের এই আরাধনা ঘরটির অত্যাধুনিক নির্মাণশৈলী আকর্ষণীয় এবং মার্বেল পাথরের ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। লোটাস মন্দিরের আকৃতি পদ্মফুলের মতো। বাহাইদের এই আরাধনা কেন্দ্রটি এক অপূর্ব ঐতিহ্য। লোটাস মন্দিরের ভেতরের অংশে প্রার্থনা ঘর, অভ্যর্থনা কেন্দ্র, লাইব্রেরি এবং প্রশাসনিক দফতর। সন্ধ্যাবেলা ফ্লাডলাইটের আলোতে লোটাস মন্দিরের সৌন্দর্য অনেক বৃদ্ধি পায়।

কৃত্রিম লেকের মাঝে তৈরি মন্দিরের আকৃতি পদ্মফুলের মতো বলেই এমন নামকরণ ।

ফলিংওয়াটার

পেনসিলভেনিয়ার "ফলিংওয়াটার" বাড়িটির অবস্থান একটি জলপ্রপাতের ওপরে। আমেরিকান স্থপতি ফ্রাংক লয়েড রাইট-এর নকশা করা এই বাড়িটি এখন একটি জাদুঘর।  ‘ফলিংওয়াটার’ বাড়িটির যে কোনো শোবার ঘর থেকে জলপ্রপাতের আওয়াজ শোনা যায় আর বসার ঘরে পায়ের নিচে জলপ্রপাতটি দেখাও যায়।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ/জেডএ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭