ইনসাইড বাংলাদেশ

ভারত থেকে পায়ে হেটে ঢাকায় আসলেন ভারতীয় যুবক আলমগীর


প্রকাশ: 24/02/2023


Thumbnail

আলমগীর খান নামক এক ভারতীয় যুবক মাত্র ১২ দিনে হেটে এসেছেন বাংলাদেশে। থ্যলাসেমিয়া রোগ সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বেচ্ছায় রক্তদানকে উৎসাহিত করতেই এই পদযাত্রা তাঁর।

থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্তের হিসেবে বিশ্বের মোট আক্রান্তের আনুপাতিক হারে এগিয়ে ভারত-বাংলাদেশ। আর এই রোগে আক্রান্তদের বাঁচাতে পারে এক ব্যাগ রক্ত। রক্ত দান করতে প্রয়োজন হয় আত্ম-সচেতনতা। আর মানুষকে সচেতন করতে পিচঢালা পথ বেয়ে কলকাতা (ভারত) থেকে হেঁটে (বাংলাদেশ) ঢাকা এসেছেন মাস্টার্স পড়ুয়া আলমগীর খান। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা।

ভারতের কলকতার অদূরে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত থেকে তার যাত্রা শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। তার গন্তব্য বাংলাদেশের ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। আলমগীর খান নামে ওই যুবক গত ৯ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এসে পৌঁছান বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বনগাঁতে। বারাসাত থেকে তাঁর রুট ছিল কলকাতা শহর ঘেঁষা যশোর রোড।

বাংলাদেশে আসার কারণ হিসেবে ভাষার টানের কথা উল্লেখ করে বাংলা ইনসাইডারকে তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে এসেছি। ভাষার টান তো আছে অবশ্যই। থ্যালাসেমিয়া রোগের সচেতনতা বৃদ্ধি আর রক্তদানকে উৎসাহিত করতেই আমি মূলত পদযাত্রা করি। আমি ওখানেও কথা বলি বাংলায়। শুধু কাটাতারের বেড়া আছে বলে এপাড় আসতে পাসপোর্ট ভিসা লাগে। কিন্তু ভাষা তো আমাদের এক। আমি যে জিনিসটা বোঝাতে পদযাত্রা করি, তা এদেশের মানুষ খুব সহজেই বুঝতে পারবে। আমার এদেশে কোনো পূর্বপূরুষ নেই। তবে ভাষা তো এক। সেই টান থেকেই এখানে আসা আমার।‘

থ্যালাসেমিয়া রোগের সাথে পদযাত্রার সম্পর্কের ব্যাখ্যা দিয়ে আলমগীর খান বলেন, ‘আমি যদি বাসে, ট্রেনে যাতায়াত করি তাহলে মানুষের সাথে কথা বলার সুযোগ কম পাবো। কিন্তু আমি যখন পদযাত্রার ব্যানার নিয়ে হেটে আসবো, তখন স্ময় পাবো। হাটতে হাটতে লোককে বোঝাতে পারবো থ্যালসেমিয়ার ভয়াবহতা। একই সাথে রক্তদানে উৎসাহ দিতে পারবো। আর আমাকে দেখে মানুষেরও একটা কৌতুহল কাজ করবে যে এ হাঁটছে কেন। আমার কাছে আসবে তারা। আমিও তখন বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলতে পারবো।‘

বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছেন এই যুবক। বলেন, ‘আমি খুবই সৌভাগ্যবান। আমি একটা বিদেশী ছেলে। আমাকে না চিনেই এদেশের লোকে নিজের বাড়ীতে থাকতে দিয়েছেন। মুখে তুলে খাইয়েছেন। এর চেয়ে বেশী ভালোবাসা আর কী হতে পারে?’

বাংলাদেশ আর ভারত তাঁর কাছে ভিন্ন কিছু নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা পার্থক্য করলে তো হবে না। দুটো দেশ আসলে একই। এরা একে অন্যের পরিপূরক এটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। শুধু খারাপ জিনিসগুলো তুলে ধরে বিভেদ সৃষ্টি করি তো আমরাই। ভালো খারাপ সব জায়গায়ই থাকে। আমাকে যেভাবে এখানে আতিথেয়তা দেখানো হয়েছে, এদেশের কেউ যদি যায় আমরাও একইভাবে আতিথেয়তা দেখানোর চেষ্টাটুকু তো করবো।

বাংলাদেশে তাঁর এই পদযাত্রা নিয়ে ভীষণ গর্বিত তাঁর পরিবার। পদযাত্রা শুরু করার প্রথমদিকের স্মৃতি আওড়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম প্রথম যখন পদযাত্রা করতাম। বাড়ির লোক একটু রেগে গিয়েছিলো। তারপ[অর বাড়িতে যখন একবার রক্ত দরকার পড়োলো তখন ওঁরা বুঝতে পেরেছিলো আমি যে কাজ করছি তাঁর গুরুত্ব কতটুকু। এখন আমাকে নিয়ে বাবা-মা ভীষণ গর্বিত। সবাইকে বলেছে যা তাঁদের ছেলে এখন বাংলাদেশে হাঁটছে।‘

ঘন্টায় ৫ কিলোমিটার হাটেন এই ভারতীয় যুবক। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭