ইনসাইড টক

‘শাহ আব্দুল করিম তাঁর গানে বঙ্গবন্ধুকে বাংলার নয়নতারা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন’


প্রকাশ: 27/02/2023


Thumbnail

‘বঙ্গবন্ধু  তো তাঁর সমগ্র জীবনে- তিনি শুধু মানুষের জন্য কাজ করেছেন। এবং যত দিন যাচ্ছে ততো বেশি- বঙ্গবন্ধু আমাদের জন্য কি করে গেছেন- তা প্রকাশিত হচ্ছে। এক সময় তো আমরা এগুলো জানতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধু সুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে আমরা বঙ্গবন্ধুর ডায়েরি থেকে যে বই তিনটি পেয়েছি- এটাতো ইতিহাসের তিনটি আকরগ্রন্থ। এবং ‘কনফিডেন্সিয়াল ডায়েরি অন দ্যা নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’- এই যে ১৪ খণ্ডের, ৬২ হাজার পৃষ্ঠার যে অমূল্য সম্পদ- সেখান থেকে ১৪ খণ্ডের মধ্যে ১১ খণ্ড ইতিমধ্যে বের হয়েছে। এখানে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থারা পাকিস্তানের সরকারের পক্ষ হয়ে তারা বঙ্গবন্ধুকে প্রতিমুহূর্তে অনুসরণ করতো। এই রিপোর্টগুলো যখন প্রকাশিত হচ্ছে তখন জানা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু এই বাঙালি জাতির জন্য কি কি করে গেছেন এবং তারা (পাকিস্তানিরা) কি দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছেন বঙ্গবন্ধুকে। স্কুল, কলেজে যখন পড়তাম- তখন শুনেছি বঙ্গবন্ধুর ঘুমানোর সময় ছিল না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর এই তিনটি আকরগ্রন্থ এবং ‘সিক্রেটস ডকুমেন্টস অন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’- যে ১১ খণ্ড ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে- এগুলো তো আমাদের চোখ খুলে দিচ্ছে। আমি জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জানা-শোনার চেষ্টা করেছি। এটার জন্য আমি দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষের সাথে কথা বলেছি, যারা বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখেছেন তাদের সাথে কথা বলেছি, সাক্ষাৎকার নিয়েছি।’- বলছিলেন বাংলা একাডেমি পুরষ্কারপ্রাপ্ত বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষক সুভাষ সিংহ রায়। 

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষণার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার পেয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা, কলামিস্ট, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষক সুভাষ সিংহ রায়।-  এই পুরষ্কার প্রাপ্তিতে তাঁর অনুভূতি, গবেষণালব্ধ সময়কাল এবং গবেষণা থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য- এসব বিষয় নিয়েই বাংলা ইনসাইডারের সাথে কথা হয়েছে বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গবেষক সুভাষ সিংহ রায়- এর  সঙ্গে। তিনি বাংলা ইনসাইডারের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরষ্কার প্রাপ্তিতে তার অনুভূতি, গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এবং এই গবেষণার সময়কাল- সে সব বিষয়। পাঠকদের জন্য সুভাষ সিংহ রায় - এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার- এর নিজস্ব প্রতিবেদক আল মাসুদ নয়ন।               

সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ১৯৫৪ সালে বঙ্গবন্ধুর বয়স যখন ৩৪ বছর তখন শাহ আব্দুল করিম, তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গান লিখেছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে বাংলার নয়নতারা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধুর বয়স যখন ৩২ বছর, তখন তিনি নয়া চীনে (বর্তমান চীন) আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে তিনি যা যা দেখেছেন এবং যা যা আমাদের করণীয়, কৃষিতে তাদের আগ্রহের জায়গা, শিল্পখাতে আগ্রহের জায়গা, নারীর অংশগ্রহণের আগ্রহের জায়গা, তিনি তা অত্যন্ত খুটিয়ে খুটিয়ে দেখেছেন এবং তাঁর ডায়েরিতে লিখে রেখেছেন।- আমরা তো এই অমূল্য সম্পদ আকরগ্রন্থ পেতাম না, যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সে সুযোগ করে না দিতেন।             

সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে বাংলায় বকতৃতা দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের সরকার তখন ক্ষমতাসীন এবং সবেমাত্র ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু কারামুক্ত হলেন (১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি কারাগারে ছিলেন)। কারামুক্ত হয়েই সেপ্টেম্বর মাসে তিনি নয়াচীনে আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনে গেলেন। সেখানে তিনি বাংলায় বক্তৃতা দিলেন। সেখানে অনেকের সাথে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েছিলেনে একজন বিখ্যাত লেখক মনোজ বসু। তিনি (বঙ্গবন্ধু) যখন বাংলায় বক্তৃতা করলেন, তখন মনোজ বসু ছুটে এসে শেখ মুজিবুর রহমানকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘সারা পৃথিবীতে বাংলার মান তুমিই কেবল রেখেছ’।

তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধুর সৃজনশীল কূটনৈতিক দক্ষতায় চীনের দুই দু’বার ভেটো দেবার পরও তিনি আমাদের জাতিসংঘের সদস্য পদ লাভ করিয়ে দিয়েছেন। ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেষনে বাংলায় ভাষণ দিয়েছেন। সেই ভাষণ এখন সারা পৃথিবীর নির্যাতিত, নিপীড়িত, বঞ্চিত মানুষের জন্য এখনও পথ দেখাচ্ছে। তিনি তার ভাষণে যে বলেছিলেন- ‘সবার সাথেই বন্ধুত্ব এবং কারো সাথেই বৈরিতা নয়’। দুই মাস আগেই বঙ্গবন্ধুর এই উক্তি জাতিসংঘের মুখবন্ধে তারা যুক্ত করেছেন।   

এই পুরষ্কারপ্রাপ্তিতে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী (যাকে অনুপ্রেরণার উৎস মনে করেন) এবং যারা যারা এই গবেষণায় তাকে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সাহায্য-সহযোগীতা করেছেন তাদের সকলের প্রতি ধন্যবান জ্ঞাপন করেন। আর অনুভূতির কথা যদি বলেন, তা বলে প্রকাশ করা যাবে না। ১৯৮৩/৮৪ সালে ঢাকা বিশ্বদ্যালয়ে ছাত্র থাকা অবস্থায় এই গবেষণা শুরু করেছিলেন, আর প্রাপ্তিটা এলো ২০২৩ সালে বলেও জানান তিনি।     



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭