ইনসাইড গ্রাউন্ড

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অধরা সিরিজ জয়ের হাতছানি বাংলাদেশের


প্রকাশ: 28/02/2023


Thumbnail

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। দীর্ঘ ৬ বছর পর দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। সবশেষ ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলো ইংলিশরা। সেবার জশ বাটলারের নেতৃত্বে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছিলো থ্রী লায়ন্সরা। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর থেকে এখন পর্যন্ত যেটি ঘরের মাঠে বাংলাদেশের একমাত্র সিরিজ হার। সেসময় থেকে নিজেদের মাঠে খেলা ১৩টি সিরিজের ১২টিই জিতেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এবার তামিম-লিটনদের সামনে হাতছানি সে ক্ষতে প্রলেপ দেয়ার।

এক দিনের ক্রিকেটে দুই দল এখন পর্যন্ত ২১টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে। সেখানে জয়ের পাল্লা ভারী ইংলিশদেরই। মাত্র ৪টি ম্যাচে জয়ের হাসি হেসেছে বাংলাদেশ। ২০০০ সালে নাইরোবিতে দুই দলের প্রথম একদিনের ম্যাচে দেখা হয়। ২০১০ সালে ব্রিস্টলে প্রথম জয়ের পর সবশেষটি এসেছে ২০১৬ সালে ঢাকার মিরপুরে। মাঝে ২০১১ ও ২০১৫ সালে পরপর দুটি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয় ইংলিশদের।

২০১০ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে সবশেষ দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ খেলতে গিয়েছিলো বাংলাদেশ। সে সফরের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিলো টাইগাররা। ব্রিস্টলে সে ম্যাচে ইমরুল কায়েসের ৭৬ ও জহুরুল ইসলামের ৪০ রানে ইংলিশদের ২৩৭ রানে টার্গেট দিয়েছিলো বাংলাদেশ। পরে বোলারদের দৃঢ়তায় সে ম্যাচে ৫ রানের জয় তুলে নিয়েছিলো মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন দল।

জয়ের মানদন্ডে অবশ্য এরপরের জয়টি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। ২০১১ বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক ছিলো বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জয়টা বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা জয়ের তালিকার ওপরের দিকেই থাকবে। ২২৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৬৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর নবম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও শফিউলের অপরাজিত ৫৮ রানের জুটিতে নিজেদের সবচেয়ে স্মরণীয় জয়গুলোর একটির দেখা পেয়েছিলো বাংলাদেশ।

তৃতীয় জয়টি আসে ঠিক তার পরের বিশ্বকাপে। ইংলিশদের বিপক্ষে যেটি তর্কযোগ্যভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ জয়। সেই জয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পেয়েছিলো বাংলাদেশ। বাঁচা-মরার সে ম্যাচে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের সেঞ্চুরির পর তাসকিন-রুবেলদের আগুনে বোলিংয়ে হতাশায় ডুবতে হয়েছিলো ইংল্যান্ডকে। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ সে ম্যাচে রুবেল হোসেন শেষ ব্যাটসম্যান স্টুয়ার্ট বোর্ডের স্টাম্প ভেঙে দিলে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে উঠে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেইন বলে উঠেন, "বাংলাদেশ টাইগার হ্যাজ জাস্ট নকড আউট ইংলিশ লায়ন্স ফ্রম দ্যা ওয়ার্ল্ড কাপ"। যা মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলো ইংলিশ ক্রিকেটের। সে হারের পর ক্রিকেট খেলার দর্শনটাই বদলে ফেলে ইংল্যান্ড।

ইংলিশদের বিপক্ষে সবশেষ জয়টি আসে মিরপুরের ৩ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয়ের কক্ষপথে থাকলেও, শেষে এসে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে আগে ব্যাট করে ২৩৮ রান তোলে বাংলাদেশ। তবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাশরাফি ও তাসকিনের আগুনে বোলিংয়ে ২০৪ রানে থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস।

তবে সাদা বলের ক্রিকেটে এখন চলছে ইংলিশ রাজত্ব। সাদা বলের দুই ফরম্যাটেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। রক্ষণাত্নক খেলার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে পুরোদস্তুর আগ্রাসী ক্রিকেটে নিজেদেরকে বদলে ফেলেছে দলটি। ক্রিকেট দুনিয়ায় রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে তাদের এই মারকাটারি ক্রিকেট। বর্তমানে একদিনের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ৫টি দলীয় সংগ্রহের প্রথম ৩টিই ইংল্যান্ডের।

২০১৯ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপাও ঘরে তুলেছে ইংলিশরা। ফলে নিজেদের মাঠ ও কন্ডিশনের সুবিধা পেলেও দুর্দান্ত এই ইংলিশদের বিপক্ষে ইতিবাচক ফল আনতে অবিশ্বাস্য কিছুই করতে হবে বাংলাদেশকে। একমাত্র তাদের বিপক্ষেই ওয়ানডে সিরিজ জিততে পারেনি টাইগাররা। এবার তামিম ইকবালে দল সে বাঁধা ভাঙার আশা করলে তা বাড়াবাড়ি কিছু হবে না।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বেলা বারোটায় শুরু হবে ম্যাচটি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭