ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা জিয়াকে মাইনাস ঘোষণা করলেন ফখরুল!


প্রকাশ: 28/02/2023


Thumbnail

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না—তাঁর মুক্তির সময় এমন কোনো শর্ত সরকার দেয়নি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এর এমন বক্তব্যের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেতাদের অনেকে। তাঁরা বলেছেন, এর পেছনে মানুষকে বিভ্রান্ত করা সরকারের উদ্দেশ্য বা কোনো দুরভিসন্ধি থাকতে পারে। যদিও কোনো দুরভিসন্ধি থাকার অভিযোগ অস্বীকার করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। ফলে খালেদা জিয়ার রাজনীতি নিয়ে মন্ত্রীদের কথাবার্তা বিএনপির অনেকে নেতা-কর্মীদের নিজেদের মধ্যেই বিভ্রান্তি বা সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে দলে নানামূখী আলোচনা হচ্ছে। আর এর মধ্যে আবার নতুন আলোচনাকে উস্কে দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার প্রসঙ্গে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছেন, পুরোপুরি মুক্ত হওয়ার পরেই দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে ফেরার প্রসঙ্গ আসবে। এর আগে নয়। মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্য দলের ভেতর এবং রাজনৈতিক মহলে এক নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যে তিনি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার প্রক্রিয়া শুরু করলেন কিনা। উল্লেখ যে, খালেদা জিয়া এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে এক ধরনের ক্ষমতার লড়াই রয়েছে বলে গুঞ্জন আছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম তারেকের অন্তত ঘনিষ্টজন বলে দলটির অনেকের ধারণা। মির্জা ফখরুল দলকে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ বলেও বিএনপিতে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তারেকের সঙ্গে তার ঘনিষ্টতার জন্য তিনি এখন মহাসচিব পদে বহাল আছেন। ফলে আজ মহাসচিবের ব্ক্তব্যকে কেউ কেউ বাঁকা চোখে দেখছেন। তারা বলছেন যে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ভালো ভাবেই জানেন খালেদা জিয়াকে পুরোপুরি মুক্ত করা সম্ভব নয়। তাকে মুক্ত করতে হলে আদালত থেকে জামিন নিয়েই মুক্ত করতে হবে। কারণ খালেদা জিয়া দুটি মামলায় অর্থাৎ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছর এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাঁর সাত বছর জেল হয়। ফলে তাকে পুরোপুরি ভাবে মুক্ত করা সম্ভব নয়। কিন্তু তাহলে মির্জা ফখরুল কেন বিষয়টি সামনে আনলেন? তিনি কি খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে তারেক রহমানের পথকে সুগম করতে চাইছেন?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া দুটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। তাই তাকে পুরোপুরি ভাবে মুক্ত করা সম্ভব নয়। কিন্তু বিএনপির খুশি হওয়ার কথা যে, সরকার থেকে বলা হচ্ছে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই। অথচ দলটি এব্যাপারে বেশ উদাসীন। সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্যে বিএনপি খালেদা জিয়াকে রাজনীতিতে একটু একটু করে সক্রিয় করাতে পারতেন। তাকে দিয়ে কোনো বক্তৃতা, বিবৃত্তি দেওয়াতে পারতেন। এতে করে দলই লাভবান হতো। কারণ দলটিতে বেগম খালেদা জিয়া এখনও সবার কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয়। সেটি তারেক রহামনের চেয়েও কয়েকগুণ হবে। কিন্তু বিএনপি সে সুযোগ নেয়নি। 

অন্যদিকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে বিএনপির আইনি কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপও নেই। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটো মামলায় হাইকোর্ট রায়ের পর লিভ টু আপিল দায়ের করলেও তিন বছর ধরে তা ঝুলে আছে। বিএনপি একটিরও নিষ্পত্তির জন্য চেষ্টা করছে না। যদিও আপিল বিভাগ তার জামিন নাকচ করে দিয়েছেন। ফলে আইনি লড়াইয়েও খালেদা জিয়ার মুক্তির সম্ভাবনা নেই। যদিও খালেদা জিয়া এখন প্রধানমন্ত্রী নিবার্হী আদেশে তার বাসভবন ফিরোজায় থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। এখন সরকার আবার তাকে রাজনীতি করার সুযোগ দিলেও খালেদা জিয়া বা বিএনপি সুযোগ নিচ্ছে না। যদিও খালেদা জিয়া অসুস্থ্য। কিন্তু দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়ার কোনো বক্তৃতা বা বিবৃতি দিতে তার শারীরিক সুস্থ্যতা মূখ্য নয়। তাহলে তাকে কেন সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে কি বিএনপি খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে তারেক রহমানকেই প্রধান নেতৃত্বে নিয়ে আসতে চায় বিএনপি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭