মালানের কাছেই হারলো বাংলাদেশ

বাংলাদেশের দেওয়া ২১০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ব্যাটিংয়ে কিছুটা ছন্দ পতন হয় ইংলিশদের। তবে মালানের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরিতে তিন উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে গেলো ১-০ ব্যবধানে।

এর আগে মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১ম ওয়ানডেতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা বেশ ভালোই হয়েছিল টাইগারদের। প্রথম চার ওভারে কোনো উইকেটের পতন হয়নি টাইগারদের। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর লিটন দাসকে বেশ সাবলীল মনে হচ্ছিল। তবে যতটা সাবলীল শুরুতে মনে হয়েছিলো ততটা সাবলীল ছিলো না টাইগারদের মিডল থেকে লো-অর্ডার ব্যাটাররা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা।

দলীয় ৩৩ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে টাইগারদের। ব্যক্তিগত ১৫ বলে ৭ রান করে বিদায় নেন ওপেনার লিটন দাস। ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকসের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি। এরপর জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন তামিম-শান্ত। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি। দলীয় ৫১ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে টাইগারদের। ব্যক্তিগত ২৩ রান করে ফিরে যান তামিম ইকবাল। মার্ক উডের লাফিয়ে ওঠা বল হাতের কনুইয়ে লেগে আঘাত হানে তামিমের স্ট্যাম্পে। তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ওয়ানডেতে নিজের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন আজ। একটা সময়ে নাজমুল শান্তর সাবলীল ব্যাটিং বড় রানের আশা দিচ্ছিল বাংলাদেশকে। তবে দলীয় ১৫৯ ও ব্যক্তিগত ৫৮ রান করে বিদায় নেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। 

এদিকে ক্রিজে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ফিরে যাওয়ার আগে এই অভিজ্ঞ ব্যাটার করেছেন মোটে ১৭ রান। ১৭ রান করতে মুশফিক খেলেছেন ৩৪ বল। দলের প্রয়োজনে আজ হাসেনি সাকিবের ব্যাট। ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করেও ফিরেছেন ব্যক্তিগত আট রানে। মাঝের সময়ে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ চেষ্টা চালালেও পারেননি ইনিংস বড় করতে। ফিরে যান ৩১ রান করে। 

সিনিয়র সাকিব, মুশফিকদের পথে হাঁটলেন তরুণ আফিফ-মিরাজরাও। ৭ রান করে আফিফ ফেরার পর ভারত জয়ের নায়ক মিরাজ করেছেন মোটে ৯ রান। ১৮২ রানে ৮ উইকেট হারানোর পরে ২০০ রানের নিচে অল আউটের শঙ্কায় ছিলো বাংলাদেশ। তবে তাসকিন-তাইজুলের ২৬ রানে জুটি সে শঙ্কা থেকে নিয়ে যান ২০৯ রানে। ইংল্যান্ডের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আদিল রশিদ, মার্ক উড, জোফরা আর্চার ও মঈন আলী।

২১০ রানে টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই জেসন রয়ের উইকেট হারায় ইংলিশরা। ইংলিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন দেশ সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। সাকিবের বলে ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় সহজ ক্যাচ তুলে  দেন তামিমের কাছে। দশ ওভারের মধ্যে ফিরে যান জেসন রয়ের ওপেনিং পার্টনার ফিল সল্টও। সল্টকে ইনিংসের নবম ওভারে বোল্ড করেন তাইজুল। ফলে দশ ওভারে ইংলিশদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেট হারিয়ে ৩৮ রান। টাইগার বোলিংদের তোপে পড়ে হিমশিম খায় ইংলিশ টপ অর্ডার ব্যাটাররা। একে একে ফিরে যান  জেমস ভিন্স, জস বাটলার ও অভিষিক্ত উইল জ্যাকসরা। তবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও এক পাশ আগলে রাখেন ইংলিশ ব্যাটার ডেভিড মালান।

১০৩ রানেই ইংলিশদের ভয়ংকর ৫ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান সাকিব, তাইজুল, মিরাজরা। তখনো ম্যাচের ভাগ্যে নির্ধারণ হয়নি। জয়ের দৌড়ে দুই দলই ছিলো সমান ভাবে এগিয়ে। কিন্তু কম ম্যাচ খেলে তৃতীয় ব্যাটসমান হিসেবে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি করা ডেভিড মালান জয় ছিনিয়ে নেন বাংলাদেশ থেকে। বাঁহাতি এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ১১৪ রানে। ৪৮ ওভার চার বল খেলে তিন উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন ইংলিশরা।

বাংলাদেশের হয়ে ১০ ওভার বল করে ৫৪ রান দিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন তাইজুল। তাইজুলের সমান ১০ ওভার বল করে ৩৫ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিব-তাসকিন নেন একটি করে উইকেট।