ইনসাইড গ্রাউন্ড

অনুপ্রেরণার নাম রনি তালুকদার


প্রকাশ: 02/03/2023


Thumbnail

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘ বিরতির পরে আবারও জাতীয় দলে ফিরে এসেছেন এমন অনেক ক্রিকেটার রয়েছেন। বিশ্বের ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলোতে এমন উদাহরণ দেখা গেলেও বাংলাদেশ ছিলো তার ব্যতিক্রম। ঘরোয়া লিগে ব্যাট বল হাতে পারফর্ম করলেও নানা কারণে আর ফেরা হয়না জাতীয় দলে। তুষার ইমরান, নাজিম উদ্দিন, নাইম ইসলাম, ফজলে মাহমুদ রাব্বি, সামসুর রহমান, জিয়াউর রহমান- প্রত্যেকেই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। পারফরম্যান্সের অভাবে দলে জায়গা ধরে রাখতে পারেন নি অনেকে।

নিজেদের প্রমাণের চেষ্টায় ঘরোয়া লিগে পারফর্ম করেও জাতীয় দলের রাডারে আসতে পারেনি এরা কেউই রাগে-ক্ষোভে অসময়ে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন অনেকেই এমনটা হতে পারতো রনি তালুকদারের ক্ষেত্রেও। তবে সে পথে হাটেন নি রনি, নিয়মিত ভাল খেলে যাওয়ার পুরষ্কার পেলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দীর্ঘ আট বছর পর আবারও জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ২০১৫ সালে অভিষেক হয় রনি তালুকদারের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সে ম্যাচে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন রনি। খেলেছিলেন ২২ বলে ২১ রানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টির জন্য যেটি আদর্শ ছিলো না ফলে এক ম্যাচ খেলেই জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন এই ক্রিকেটার।

এরপর ৭টি বসন্ত চলে গেলেও জাতীয় দলে আর ফেরা হয়নি ডানহাতি এই ব্যাটারের। ঘরোয়া লিগে ব্যাট হাতে প্রতি মৌসুমেই কিছু ইনিংস উপহার দিলেও ধারাবাহিকতা না থাকায় নির্বাচকদের নজরে আসতে পারেন নি। তবে বার বার গণমাধ্যমে জানিয়েছেন জাতীয় দলে ফেরার তীব্র ইচ্ছের কথা। সদ্য শেষ হওয়া দেশের জনপ্রিয় ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে ছিলেন ধারাবাহিক। রংপুর রাইডার্সের হয়ে ১৩ ইনিংসে ১২৯ স্ট্রাইক রেটে ৪২৫ রান করেছেন এই ওপেনার। ছিলেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও। যার জেরে দীর্ঘ সময় পর আবার ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে।

রনির অনুপ্রেরণা হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার রাইলি রুশো। প্রায় অর্ধযুগ বিরিতির পরে প্রোটিয়া দলে। বিরতির আগে আফ্রিকার হয়ে ৩৬ টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন রুশো। সেখানে বলার মতো তেমন কোন গল্প না থাকলেও, বিরতির পরে এসে ব্যাট হাতে তান্ডব চালাচ্ছেন এই বাহাতি ব্যাটার। এরই মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে দুইটি শতক তুলে নিয়েছেন তিনি। প্রতিপক্ষের জন্য হয়ে উঠেছেন ভীতিকর।

বিপিএলের নবম আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই মাত্র ১৯ বলে ফিফটি করেছিলেন রনি। ব্যাট করেছেন ১২৯ এর উপর স্ট্রাইকরেটে। যা দেশি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে খুব একটা চোখে পড়ে না। তার এই স্ট্রাইকরেটেই নজর কেড়েছে নির্বাচকদের। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে খেলা টি-টোয়েন্টি দলের নিয়মিত ওপেনার নাজমুল শান্ত ছিলেন এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তবে তার স্ট্রাইকরেট ছিলো মাত্র ১১৬। যা আধুনিক টি-টোয়েন্টি ওপেনারের জন্য আদর্শ নয়। আবার শট সিলেকশনে শান্তর থেকে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন রনি। পাওয়ার প্লে' সুবিধা কাজে লাগিয়ে দ্রুত রান তুলতে পটু রনি তালুকদার।

রনি ছাড়া এত লম্বা সময়ের পর জাতীয় দলে ফেরার কৃতিত্ব নেই কোন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এখন রনি নিজেকে কিভাবে মানিয়ে নিবেন সেটি হয়ত সময় বলে দিবে। আবার বয়সও ত্রিশের কোটা পেরিয়েছে। এই বয়সে পাওয়া সুযোগকে রনি তালুকদার কিভাবে কাজে লাগাবেন, সেটিই দেখার বিষয়। জাতীয় দলে ফিরে আসা রনি যদি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন তাহলে দেশের ক্রিকেটে বড় এক উদাহরণ হয়ে থাকবেন তিনি। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদে কাছেও হবেন অনুপ্রেরণার।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭