ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদা বনাম তারেক: কে কাকে বহিষ্কার করবে?


প্রকাশ: 03/03/2023


Thumbnail

খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা না করার দ্বন্দ্ব এখন বিএনপিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে ভাঙনের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারেন, তার রাজনীতি করতে কোনো বাধা নেই- আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্যের পর বিএনপির মধ্যে নানামুখী মনোভাব দেখা দিয়েছে। 

বিএনপি নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মুক্ত হলেই রাজনীতি করতে পারেন অন্যথায় নয়। এরকম বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বিএনপির অনেকেই। তারা মনে করছেন, বিএনপিতে এখন প্রধান সমস্যা হলো নেতৃত্ব শূন্যতা। আর এই নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণের জন্য খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার বিকল্প নেই। সরকার যদি বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয় তাহলে সেই সুযোগ গ্রহণ করা উচিত। তবে বিএনপি নেতারা মনে করছেন বিশেষ করে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার ধারণা এটি সরকারের একটি টোপ। সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে ব্যবহার করে বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে আনতে চাইছে। আর এ কারণেই তারেক জিয়া, বেগম খালেদা জিয়ার আপাতত রাজনীতি করার পক্ষে নন। 

তারা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে আছেন সেভাবে থাকাটাই উত্তম উত্তম। বরং তার মুক্তির আন্দোলন এবং অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবির আন্দোলন একসূত্রে গেঁথে সরকার পতনের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করাটাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে সঠিক রাজনৈতিক কৌশল। কিন্তু বিএনপির রাজনীতি সম্বন্ধে খোঁজ-খবর রাখেন এরকম রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসলে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা না করা দ্বন্দ্ব খালেদা-তারেকের দ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে। এরকম দ্বন্দ্বে শেষ পর্যন্ত কে বিএনপির আসল নেতা তা প্রমাণিত হবে। 

যদি খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আসেন তাহলে বিএনপির মধ্যে অনেকগুলো নাটকীয় ঘটনা ঘটতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নানা কারণে গত ছয় মাস ধরে তার পুত্রের উপর ক্ষুব্ধ। পুত্রের সঙ্গে তার কথাবার্তাও বন্ধ। তারেক জিয়া বিএনপিকে কুক্ষিগত করেছেন- এমন অভিযোগ করছেন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ভাইসহ তার পরিবারের ঘনিষ্ঠরা। তারা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে তারেক জিয়া বিএনপিকে দখল করতে চাইছেন এবং বিএনপিকে পথে পরিচালিত করছেন। 

অন্যদিকে তারেক জিয়া এবং তার অনুসারীরা মনে করছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার বশীভূত করে ফেলেছে। যেকোন মুহূর্তে বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাত করতে পারেন, আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করতে পারেন-এমন শঙ্কা থেকে তারা খালেদা জিয়াকে রাজনীতি করতে দিতে চাইছে না। একজন বিএনপি নেতা বলছেন, হঠাৎ করেই বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সরকারের দরদের আসল কারণ কী তা খুঁজে বের করতে হবে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকারের একটি গোপন সমঝোতা হয়েছে বলেই মনে করছেন বিএনপির কোনো কোনো নেতা। আর এই সমঝোতার কারণেই এখন বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতির মাঠে আনার চিন্তাভাবনা চলছে। 

বেগম খালেদা জিয়া যদি রাজনীতিতে সক্রিয় হন সেক্ষেত্রে তিনি প্রথমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে  বহিষ্কার করতে পারেন- এমন গুঞ্জনও রয়েছে। তারেক জিয়ার ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া এবং তার ভাইবোনের ক্ষোভ এখন প্রকাশ্য। অন্যদিকে তারেক জিয়ার পন্থীরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত যদি সরকারের ইশারায় বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে নামেন তাহলে অন্য রকম ঘটনা ঘটতে পারে। বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতিতে নামলেই তাকে তারেক জিয়া দল থেকে বহিষ্কার করতে পারেন। সময় যতই যাবে ততই বিএনপিতে খালেদা-তারেক দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রূপ নিবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয় কে কাকে বহিষ্কার করেন। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭